স্কুলের সভাপতির মৃত্যু, অনিশ্চিত ৪৯০ শিক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশন

নেত্রকোনা দত্ত উচ্চ বিদ্যালয়
নেত্রকোনা দত্ত উচ্চ বিদ্যালয়  © সংগৃহীত

নেত্রকোনার দত্ত উচ্চ বিদ্যালয়ে পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি না থাকায় নবম শ্রেণির ৪৯০ শিক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা। এদিকে সভাপতি না থাকায় বিদ্যালয়টির ৫৮ জন শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন-ভাতাও বন্ধ রয়েছে। এতে কষ্টে দিন পার করছেন তারা।

স্থানীয়রা জানান, ১৮৮৯ সালে স্থাপিত নেত্রকোনার দত্ত উচ্চ বিদ্যালয়ে বর্তমানে শিক্ষার্থী আছে ৩ হাজারেরও বেশি। আর শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যা ৮২ জন। সুনামের সঙ্গেই পরিচালিত হয়ে আসছিল বিদ্যালয়টি। কিন্তু গত ১ জুন বিদ্যালয়টির পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি কামরুন্নেছা আশরাফ মারা যান।

তাঁর মৃত্যুর পর নিয়মানুযায়ী ১১ জুন কমিটির সভা করে নতুন সভাপতির নাম বোর্ডে পাঠানো হয়। কিন্তু এখনও অনুমোদন না পাওয়ায় বিপত্তিতে পড়েছে বিদ্যালয়টি। স্কুলের নিয়ম অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের বেতনসহ বিদ্যালয়ের অন্য খাতের সব আয় জমা হয় ব্যাংক অ্যাকাউন্টে। কিন্তু সভাপতি না থাকায় অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা উত্তোলন করা যাচ্ছে না। এতে ২ অক্টোবর শেষ তারিখ নির্ধারিত থাকলেও নবম শ্রেণির ৪৯০ জন শিক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশনের টাকা এখনও বোর্ডে পাঠানো যায়নি। এ অবস্থায় রেজিস্ট্রেশন অনিশ্চিত হয়ে পড়ায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন শিক্ষক–অভিভাবকেরা।

বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বলেন, 'সাতদিন আগে টাকা এবং রেজিস্ট্রেশনের জন্যে সকল কাগজপত্র জমা দিয়েছি। রেজিস্ট্রেশন এখনও হয়নি। ২ অক্টোবর রেজিস্ট্রেশনের শেষ দিন। রেজিস্ট্রেশন করতে না পারলে ২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারব না। একটা বছর নষ্ট হয়ে যাবে।স্কুলটির এক অভিভাবক বলেন, 'আমার বাচ্চার রেজিস্ট্রেশনের সবকিছুই জমা দিছি। কিন্তু রেজিস্ট্রেশন হচ্ছে না। সভাপতি মারা যাওয়ায় এই অবস্থা। আমরা উদ্বিগ্ন। বাচ্চারা পরীক্ষা দিতে না পারলে তাদের ভবিষ্যৎ নষ্ট হবে। দ্রুত নতুন সভাপতি নিয়োগ করা হোক।'

এদিকে শিক্ষা বিভাগ বলছে, শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন সম্পন্নে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

বিদ্যালয়টির খন্ডকালীন এক শিক্ষক বলেন, 'আমার স্বামী নেই। দুইটি বাচ্চা নিয়ে এই চাকরির টাকায় সংসার চালাই। চার মাস ধরে বেতন নেই। আমরা খুবই বিপদে আছি।

আরও পড়ুন: ‘যারা ভিসানীতি দিয়েছে তাদের বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ওপর নির্ভরশীল’

বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক শাহজাহান কবির বলেন, 'সভাপতি মারা যাওয়ার পর নতুন সভাপতি না হওয়ায় ব্যাংক থেকে টাকা তোলা যাচ্ছে না। এতে শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের টাকা বোর্ডে পাঠাতে পারছি না। শিক্ষকদের বেতন দিতে পারছি না। তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলছি। আশা করছি, দ্রুতই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।'

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ. আব্দুল গফুর বলেন, 'দত্ত উচ্চ বিদ্যালয়ে সভাপতি সংকটে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের যে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে, তা নিরসনে স্কুল ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।' 


সর্বশেষ সংবাদ