জোড়া থেকে আলাদা, সেই মণি-মুক্তার জন্মদিন আজ
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২২ আগস্ট ২০২৩, ০৯:৩৫ AM , আপডেট: ২২ আগস্ট ২০২৩, ০৯:৩৫ AM
দেশব্যাপী আলোচিত দিনাজপুরের বীরগঞ্জে জোড়া লাগানো জমজ দুই বোন মনি-মুক্তার জন্মদিন আজ। উপজেলার পালপাড়া গ্রামের কৃষ্ণা রানী ২০০৯ সালের ২২ আগস্ট পেটে জোড়া লাগা জমজ দুই কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। জন্মের পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের নাম রাখেন মনি ও মুক্তা। জন্মের ছয় মাস পর ২০১০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি ডাক্তার এম.আর খান সফল অস্ত্রপচারের মাধ্যমে মনি-মুক্তাকে আলাদা করেন। ১৫ বছরে পা দিয়ে এখন তারা স্বাভাবিক জীবনযাপন করছে।
২০০৯ সালের কথা। দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার পালপাড়া গ্রামে জয় প্রকাশ পাল ও কৃষ্ণা রানীর কোলজুড়ে আসবে সন্তান। স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি এলাকায় পার্বতীপুর ল্যাম্ব হাসপাতালে ভর্তি করেন জয় প্রকাশ। হাসপাতালের অস্ত্রোপচারকক্ষের (ওটি) বাইরে অপেক্ষা শেষে সন্তানের জন্ম হলো, কান্নার শব্দও শুনলেন জয় প্রকাশ।
তবে বিকেল হলেও সন্তানের মুখ দেখতে দেওয়া হয়নি জয় প্রকাশকে। পরে চারটায় জয় প্রকাশ জানতে পারেন, যমজ কন্যাসন্তানের বাবা হয়েছেন। আনন্দ বেড়ে যায় কয়েক গুণ। সে আনন্দ স্থায়ী হয়নি। পরক্ষণেই জানতে পারেন, দুটি সন্তান জন্ম নিলেও তাদের পেট জোড়া লাগানো। মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ে জয় প্রকাশের।
এরপর ঢাকা শিশু হাসপাতালে চিকিৎসক এম আর খান সফল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আলাদা করেন মণি-মুক্তাকে। এটি দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থায় নতুন ইতিহাস তৈরি করে। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জোড়া লাগানো শিশুর পৃথকীকরণের ঘটনা এটি দেশে প্রথম। আর ঝুঁকিপূর্ণ এ চিকিৎসায় বাংলাদেশের খ্যাতিমান চিকিৎসক এ আর খানের সাফল্য বিশ্ব দরবারে চিকিৎসাবিজ্ঞানকে আরও সম্ভাবনাময় করে তুলেছে।
আরও পড়ুন: ‘আমি নিশ্চুপে বিদায় নেওয়া মানুষ’ স্টোরির ১৯ ঘণ্টার মধ্যে গেল প্রাণ
বর্তমানে দুই বোন স্থানীয় উপজেলার শতগ্রাম ইউনিয়নের ঝাড়বাড়ী দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে। প্রতিবছর মা-বাবা বাড়িতে তাদের জন্মদিনের আয়োজন করেন। জন্মদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন স্থানীয় লোকজনও। অস্ত্রপচারের মাধ্যমে পৃথক হওয়ার পর তাদের সুস্থ থাকা, বড় হয়ে ওঠা, স্কুলে যাওয়াকে সফলতা হিসেবে দেখছে এলাকাবাসী।
লেখাপড়ার পাশাপাশি নাচ-গানেও আগ্রহ মণি-মুক্তার। উপজেলার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে প্রশংসা পেয়েছে দুজনে। পাড়ার সবাই পছন্দ করে তাদের। দুই বোনের মধ্যে খুব মিল। দেখতেও এমন যেন আলাদা করে বলা যায় না কে মণি আর কে মুক্তা। উচ্চতায় মণি বড় বলেই চিনতে সমস্যা হয় না মা–বাবার। বড় হয়ে চিকিৎসক হতে চায় মণি-মুক্তা।