দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন গণমানুষের দাবিতে পরিণত হয়েছে: সাদা দল
- ঢাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১০ আগস্ট ২০২৩, ০১:৩৭ PM , আপডেট: ১০ আগস্ট ২০২৩, ০১:৩৭ PM
অগণতান্ত্রিক ফ্যাসিস্ট সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন গণমানুষের দাবিতে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক ও সাদা দলের আহবায়ক ড. লুৎফর রহমান।
বুধবার (১০ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে 'অগণতান্ত্রিক ফ্যাসিস্ট সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি এবং বিএনপি'র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান ও তাঁর সহধর্মিণী ডা. জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে ফরমায়েশি রায়ের প্রতিবাদে' আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচীতে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
লুৎফর রহমান বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে আমানুল্লাহ আমান ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে পিটিয়ে অগণতান্ত্রিক আচরণ করেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যারা সরকারের পক্ষে যারা কাজ করছে তাদের অগণতান্ত্রিক আচরণে সকল দলমতের শিক্ষার্থীরা বিচরণ করতে পারছে না। সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের থেকে মুক্ত নয়। বিগত ২ টি নির্বাচন প্রমাণ করে এই সরকারের অধীনে নির্বাচন সম্ভব নয়। এদেশের মানুষ তাদের ভোটাধিকার ফিরে পেতে চায়। আপনারা পদত্যাগ করুন, জনগণ তাদের ভোটাধিকারের মধ্য দিয়ে তাদের সরকারকে নির্বাচিত করবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও জনগণের অধিকার আদায়ে শামিল হবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে হাজারো মামলা ঝুলছে। সাগর রুনির হত্যা মামলা ১শত বার পিছিয়েছে তবুও তাদের এই চার্জশিট আদালতে দাখিল হয়নি। এই চার্জশিট দাখিল হলে সরকারদলীয়দের মুখোশ উন্মোচন হবে বলেই এর বিচার সম্পন্ন হচ্ছে না। অথচ তারেক রহমানের মামলা মাত্র ১৬ কার্যদিবসের মধ্যে তাড়াহুড়ো করে ৪৩ জনের সাক্ষী নিয়ে ফরমায়েশি রায় দিয়েছে। আমরা কোনো কোর্টের ওপর আস্থা রাখতে চাই না। অগণতান্ত্রিক ফ্যাসিস্ট সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন গণমানুষের দাবিতে পরিণত হয়েছে।
শিক্ষক সমিতির সাবেক সেক্রেটারি পদার্থ বিভাগের অধ্যাপক এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম বলেন, খুব অল্প সময়ের মধ্যে আমাদের দেশে নির্বাচন শুরু হচ্ছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে বর্তমান সরকারের মূল লক্ষ্য হলো তাদের রাস্তা পরিষ্কার করা। এজন্যই সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে শাস্তির সম্মুখীন করা হয়েছে, এমনকি আপিল বিভাগে আবেদন করার পর সেই সাজা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। আবার তারেক রহমান ও জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে রেখেছেন যা অত্যন্ত লজ্জাজনক।
তিনি বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নামেও মামলা রয়েছে যা নিজ ক্ষমতাবলে সেটা চাপিয়ে রেখেছেন। এসব মামলা সবার নামেই হয়ে থাকে। কিন্তু তারেক রহমানকে এমন একটা মামলার জন্য ৯ বছরের সাজা দেওয়া হয়েছে যা অত্যন্ত অমানবিক। তাদের এমপি, মত্রী সমর্থকরা কোটি কোটি টাকা লুটে নিচ্ছে, রিজার্ভের ঘাটতি তৈরি হয়েছে, দেশ ঋণের বোঝায় জর্জরিত। কিন্তু তাদের কাউকে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, দিনের ভোট রাতে দেয়ার সরকার বুঝতে পেরেছে তাদের পায়ের নিচে মাটি নেই। আমাদের প্রধানমন্ত্রী তিনি ভালো কূটিকৌশল চালাতে জানেন এজন্য তিনি বিরোধী মতকে দমন করে আসছেন যেনো তার বিরুদ্ধে কেউ মাথা তুলে দাড়াতে না পারে৷ কিন্তু তার মনে করা উচিত বাংলার মানুষ কোন স্বৈরাচার সরকারকে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় রাখেনি, আপনাকেও রাখবে না। বাংলাদেশের জনগণ জেগেছে, আপনি আর কূটচাল দিয়ে এই আন্দোলন বাধাগ্রস্ত করতে পারবেন না।
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের যেই নির্বাচন হয়েছে সেটা স্পষ্ট একপাক্ষিক। এমন নির্বাচন মানুষ পুনরায় মেনে নিবে না। ইতিমধ্যে আমরা বিশ্বের দরবারে চরম খারাপ অবস্থানে আছি। আমাদের উপর ভিসা নীতি প্রয়োগ করা হয়েছে। দেশে আজ গণতন্ত্র নেই, গণতান্ত্রিক উপায়ে বিচার নেই। গণতন্ত্র যদি উপস্থিত থাকতো তাহলে আমাদের নেত্রীর সাজা কমতো কিন্তু সেটা বেড়েই চলছে। তারেক রহমান ও তার স্ত্রী যিনি একজন শিক্ষাবিদ ও ডাক্তার তার বিরুদ্ধে সাজার রায় দেয়া হয়েছে। আমরা দাবি জানাই যেনো তাদের মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করা হয়, নাহলে জনগণ গণতান্ত্রিক উপায়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। সুতরাং হয় আপনারা পদত্যাগ করবেন নাহলে জনগণ আপনাদের পদত্যাগে বাধ্য করবে।
মানববন্ধনে সাদা দলের আহবায়ক অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে, ফার্মাসি অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. আবদুর রশিদ, আন্তর্জাতিক বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. রুহুল আমিন, বিজনেস স্টাডিস অনুষদ সাদা দলের আহবায়ক ও ফিন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম জাহিদ, শিক্ষক সমিতির সাবেক সেক্রেটারি ও সিনেট সদস্য, প্রাণ রসায়ন ও অনুজীব বিভাগের অধ্যাপক ইয়ারুল কবির, অধ্যাপক আবদুস সালাম সহ অন্যান্য শিক্ষকগণ বক্তব্য প্রদান করেন।