খাদ্য অধিকার ও কৃষি খাদ্যব্যবস্থা সম্মেলন শুরু ২৬ জুলাই
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৬ জুন ২০২৩, ০৫:৩০ PM , আপডেট: ০৬ জুন ২০২৩, ০৭:৫৭ PM
সবার জন্য পর্যাপ্ত খাদ্যের অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্য অর্জন এবং বিদ্যমান কৃষি খাদ্যব্যবস্থাকে আরও ন্যায়সঙ্গত, টেকসই, সহিষ্ণু করে আঞ্চলিক ঐকমত্য গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে দেশে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের খাদ্য অধিকার এবং কৃষি খাদ্যব্যবস্থা সম্মেলন ২০২৩’। আগামী ২৬-২৭ জুলাই ঢাকায় এ সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক পর্দা উঠবে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।
মঙ্গলবার (০৬ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ও আয়োজনের বিস্তারিত জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। শিক্ষাবিদ, অর্থনীতিবিদ এবং ‘খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ’র চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক মহসিন আলী।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, আমাদের সবক্ষেত্রেই অনেক নীতিমালা থাকে কিন্তু তার বাস্তবায়ন করা যায় না। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের জটিলতা এবং অংশগ্রহণ না থাকার কারণে সমস্যার সমাধান করা যায় না। খাদ্য উৎপাদন থেকে শুরু করে সকল ক্ষেত্রে তরুণদের সম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে। আমাদের কৃষি ব্যবস্থাপনার সাথে প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জ এবং কৃষি প্রকৃতিকরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে কাজ করতে হবে। এশিয় অঞ্চলের কৃষি ও খাদ্যব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত নানা সমস্যা, সম্ভাবনা ও সমাধান আসবে এ সম্মেলন থেকে।
মহসিন আলী জানান, খাদ্য অধিকার ইস্যুকে শক্তিশালী করার জন্য নাগরিক সমাজের সংগঠন ও নেটওয়ার্ক, কৃষক সংগঠন, যুব, নারী, বিশেষজ্ঞ, গবেষক এবং নীতিনির্ধারকসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে বহুবিধ অংশীদারিত্ব গড়ে তোলাসহ সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য নিয়ে ‘এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের খাদ্য অধিকার এবং কৃষি খাদ্যব্যবস্থা সম্মেলন’ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এর মধ্যে এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে কৃষি-খাদ্যব্যবস্থা রূপান্তরে আদিবাসী, ক্ষুদ্র কৃষক এবং স্থানীয় সম্প্রদায়ের ভূমিকা, অবদান এবং অংশগ্রহণকে স্বীকৃতি, রক্ষা এবং এগিয়ে নেয়ার মতো বিষয়গুলো থাকবে।
খাদ্য অধিকার বাংলাদেশসহ সংশ্লিষ্ট জাতীয় আন্তর্জাতিক সংস্থা ও নেটওয়ার্কের সম্মিলিত আয়োজনে এ সম্মেলনে ১৫টি দেশের অর্থ শতাধিক খাদ্য ও কৃষি খাদ্যব্যবস্থা সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ ও এক্টিভিস্টসহ সাত শতাধিক অংশগ্রহণকারী অংশগ্রহণ করবেন—জানানো হয়েছে সংবাদ সম্মেলনে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত প্যানেলিস্টদের বক্তব্যে খাদ্য সংকটের মতো বৈশ্বিক সমস্যা ও এর সমাধান, পুষ্টি অধিকার, পারিবারিক কৃষি, নগরায়ন, সম্মেলনে তরুণদের অংশগ্রহণ ও সম্পৃক্ত করা, টেকসই বৃদ্ধি, সরকারের খাদ্য ও কৃষি সংক্রান্ত নীতি বাস্তবায়ন প্রভৃতি বিষয় উঠে আসে।
এছাড়াও সমাজের সবচেয়ে প্রান্তিক অংশের খাদ্য নিরাপত্তা এবং পুষ্টি নিশ্চিত করার জন্য সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি পর্যালোচনা ও করণীয়, কৌশলগত টেকসই ও ন্যায়সঙ্গত পদ্ধতি অপরিহার্য উপাদান হিসাবে একক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও প্রতিবেশগত কৌশল গ্রহণ করার জন্য কৃষি খাদ্য ব্যবস্থা এবং এর নীতি কাঠামো বিশ্লেষণ করা; টেকসই ও ন্যায়সঙ্গত এবং জলবায়ু সহনশীল কৃষিতে ক্ষুদ্র পরিবারের কৃষকদের (পুরুষ ও নারী উভয়েরই) কণ্ঠস্বর জোরদার করার মতো বিষয়গুলোও আলোকপাত করা হবে—যুক্ত করেন মহসিন আলী।
সম্মেলনে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আইনি এবং নীতি কাঠামো কেন্দ্রিক খাদ্য অধিকার ও পুষ্টি পরিস্থিতি খাদ্য অধিকার দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে আইনি ও নীতি কাঠামো সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি এবং খাদ্য নিরাপত্তা খাদ্যের অধিকার আদায়ের জন্য কৃষিখবর, কৃষি খাদ্য ব্যবস্থায় পরিবেশগত সংকট এবং জলবায়ুর প্রভাব, কৃষি চেইনে যুব ও নারীদের অংশগ্রহণ জৈব ও প্রাকৃতিক কৃষির সুযোগ এবং চ্যালেঞ্জ নিয়েও আলোচনা করা হবে এ সম্মেলনে।
একইসাথে কৃষি খাদ্য ব্যবস্থা পরিচালনার ভবিষ্যৎ গতিপথ, ক্ষুদ্র খাদ্য উৎপাদকদের দৃষ্টিকোণ থেকে কৃষির ডিজিটালাইজেশন, টেকসই এবং জলবায়ু সহনশীল কৃষি খাদ্য ব্যবস্থায় পারিবারিক কৃষিকাজের ভূমিকা, কৃষিখাদ্য ব্যবস্থায় গ্রামীণ ভূমিহীনতা এবং ভূমির মেয়াদের নিরাপত্তাহীনতার প্রভাব, জুনোটিক এবং অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল প্রতিরোধে বাস্তুতন্ত্র নির্ভর একক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও দৃষ্টিভঙ্গির’ বিশেষ গুরুত্ব এবং কৃষির বাস্তুসংস্থানের জন্য বিনিয়োগের পরিস্থিতি ক্ষুদ্র কৃষক হিসেবে অর্থ এবং বাজার ব্যবস্থায় নারী ও তরুণদের অভিগম্যতা মতো বাস্তবসম্মত ও যুগোপযোগী বিষয়গুলো রয়েছে এবারের ঢাকা সম্মেলনের এজেন্ডায়।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে এ সম্মেলন থেকে প্রত্যাশা ব্যক্ত করে জানানো হয়েছে, এ অঞ্চলে খাদ্য অধিকার বিষয়ক এডভোকেসি কার্যক্রম চিহ্নিত, কৃষি খাদ্যব্যবস্থা এবং তার পরিচালনায় ক্রমবর্ধমান হুমকি ও সংকটের মধ্যে নাগরিক সমাজের পক্ষে ‘খাদ্য অধিকার দৃষ্টিকোণ’ থেকে বিকল্প প্রতিবেদন উপস্থাপন করা নির্দিষ্ট বিষয়ভিত্তিক আলোচনা ও অবদান রাখা সম্মেলনের ঘোষণা তৈরি এবং বিষয়ভিত্তিক উপস্থাপনা এবং এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের নাগরিক সমাজ এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য অংশীজনের সাথে শক্তিশালী সমন্বয় তৈরি করা।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ উন্নয়ন পরিষদের নির্বাহী পরিচালক ড. নিলুফার বানু, নারী মৈত্রী’র নির্বাহী পরিচালক শাহীন আক্তার ডলি, একশন এইডে’র উপ-পরিচালক (কর্মসূচি) অমিত রঞ্জন দে এবং এশিয়া যুদ্ধ সিকিউরিটি নেটওয়ার্ক এর আঞ্চলিক সমন্বয়কারী আহমেদ বোরহান উপস্থিত ছিলেন।