১৫টির পর মোতালেবের পেট থেকে বের হলো আরও ৮ কলম

যুবকের পেট থেকে একে একে বের করা হলো কলম
যুবকের পেট থেকে একে একে বের করা হলো কলম  © সংগৃহীত

সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগ থেকে এন্ডোস্কপির মাধ্যমে মোতালেব হোসেন (৪০) নামের এক যুবকের পেট থেকে বৃহস্পতিবার (২৫ মে) ১৫টি কলম বের করেছিলেন চিকিৎসকরা। এবার বিনা অপারেশনে আরও আটটি কলম বের করা হয়েছে মানসিক প্রতিবন্ধী আব্দুল মোতালেবের পেট থেকে। এ নিয়ে দুই দফায় অস্ত্রোপচার ছাড়াই মোট ২৩টি কলম বের করা হলো। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তি মানসিক রোগী। 

সোমবার (২৯ মে) দুপুরে সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে তার পেট থেকে এন্ডোস্কোপির মাধ্যমে কলমগুলো বের করে আনেন চিকিৎসকরা।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শহীদ এম. মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের প্রধান ও এন্ডোস্কপি করা চিকিৎসক ডা. জাহিদুল ইসলাম। মেডিকেল সাইন্সের ইতিহাসে বিনা অস্ত্রোপচারে রোগীর পেট থেকে এতগুলো কলম বের করার ঘটনা এটিই প্রথম বলে দাবি করছেন হাসপাতাল চিকিৎসকেরা।

ভুক্তভোগী রোগী মোতালেব হোসেন সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার খুকনি আটার দাগ গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে। তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন। মোতালেব ৪-৫ বছর ধরে বিভিন্ন সময়ে এসব কলম আস্ত গিলে খেয়েছেন বলে চিকিৎসকদের ধারণা।

তীব্র পেটব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন রোগী

জানা গেছে, রোগীটি প্রথমে পেটে ব্যথা নিয়ে মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছিল। পরে মেডিসিন ওয়ার্ডের চিকিৎসকরা এক্স-রে ও আল্ট্রাসনোগ্রাম করেও পেটে কি সমস্যা সেটা শনাক্ত করতে পারছিলেন না। পরে তাকে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের কনসালটেন্ট ডা. আমিনুল ইসলাম খানের কাছে পাঠানো হয়। 

এরপর এন্ডোস্কোপির মাধ্যমে পরীক্ষা করে তার পেটের ভেতর এতগুলো কলম দেখে প্রথমে চমকে যায় ওই চিকিৎসক, এটা কীভাবে সম্ভব। পরে এন্ডোস্কোপির মাধ্যমে অপারেশন ছাড়াই কলমগুলো বের করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। 

শহীদ এম. মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. জাহিদুল ইসলাম জানান, সোমবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে শুরু করে প্রায় এক ঘণ্টার প্রচেষ্টায় এন্ডোস্কোপির মাধ্যমে তার পেট থেকে আরও আটটি কলম বের করা হয়েছে। ধারণা করা হয়েছিলো তার পেটে আরও চারটি কলম আছে। কিন্তু বের করার সময় দেখা গেছে পেটে আরও আটটি কলম ছিল। বর্তমানে তার পেটে আর কোনো কলম নেই এবং এখন সে সুস্থ আছে।

তিনি আরও জানান, দীর্ঘদিন ধরে পেটে কলম পড়ে থেকে কলমের রঙ পরিবর্তনের পাশাপাশি কলম থেকে কালি নির্গত হয়ে কালিতে থাকা বিভিন্ন পদার্থ ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিয়েছে। 

পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, ২০০৬ সালে মোতালেব হোসেনের পেটব্যথা হয়েছিল। সে সময় অস্ত্রোপচার করে তার পেট থেকে দুটি লোহার টুকরা বের করা হয়।


সর্বশেষ সংবাদ