ঢাকায় সামগ্রিক দারিদ্র্যের হার কমেছে ৪.৩ শতাংশ

রাজধানীর দরিদ্রের ৫১ শতাংশই নতুন
রাজধানীর দরিদ্রের ৫১ শতাংশই নতুন  © সংগৃহীত

গত ২০১৯ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে ঢাকা শহরে সামগ্রিক দারিদ্র্যের হার ৪ দশমিক ৩ শতাংশ কমেছে। করোনা মহামারির সময় সারা দেশে দারিদ্র্যের হার বাড়লেও কমেছে রাজধানী ঢাকায়। একই সঙ্গে আয়ের অনুপাত বৃদ্ধির কারণে নতুন জনসংখ্যার ১১ শতাংশ দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমেছে এবং জনসংখ্যার ১৫ শতাংশ দারিদ্র্যসীমা অতিক্রম করেছে। তবে করোনার কারণে শহুরে সমাজে নতুন দারিদ্র্যের আবির্ভাব হয়েছে। গত বছর মোট দরিদ্রের ৫১ শতাংশই ছিল নতুন। সম্প্রতি বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) জরিপ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।

বুধবার (১৭ মে) রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত বিআইডিএস রিসার্চ অ্যালম্যানাক ২০২৩-এ জরিপের ফলাফল প্রকাশ করা হয়। সংস্থাটির মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেনের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা সচিব সত্যজিত কর্মকার। প্রথম দিনে প্রায় ১০টি গবেষণাপত্র উপস্থাপন করা হয়।

দারিদ্র্যের হার ব্যাখ্যা করে বিআইডিএসের মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেন বলেন, আত্মকর্মসংস্থান, সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাত থেকে আয় হস্তান্তর এবং আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে ১৫ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্য কাটিয়ে উঠতে পেরেছে।

তিনি বলেন, স্ব-কর্মসংস্থান, সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাত থেকে আয় হস্তান্তর এবং অসচ্ছলতার কারণে দারিদ্র্য হ্রাস পেয়েছে। কর্মসংস্থান হারানো, ছোট ও ক্ষুদ্র ব্যবসায় আত্মকর্মসংস্থান হারানোর কারণে প্রায় ১১ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে গেছে। 'আরবান প্রোভার্টি ডায়নামিকস ডিউরিং কোভিড-১৯ অ্যানাটমি অব রেজিলিয়েনস' শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে সেন বলেন, ‘কোভিড-১৯ এর চাপে দারিদ্র্য বিমোচনে এটি একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি।’

সংস্থাটি আরও খুঁজে পেয়েছে যে এই সময়ে অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারের অনুপাত ১৭ দশমিক ০১ শতাংশ থেকে ৩ দশমিক ২ শতাংশ কমে ১৩ দশমিক ৮৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

আরও পড়ুন: শিক্ষকতা খুবই পছন্দ করি: অপি করিম

২০২০ সালের এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত দারিদ্র্য কিছুটা বেড়েছিল। এরপর থেকে তা কমতে থাকে। ২০২২ সালের প্রথম দিক থেকেই দেশের অর্থনীতি স্বাভাবিক প্রবণতায় ফিরে আসতে শুরু করে। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়নও দারিদ্র্য কমাতে বিশেষ অবদান রাখে। তবে ঢাকার মতো উচ্চবর্ধনশীল মেগাসিটিতেও দীর্ঘস্থায়ী দরিদ্র্যের সংখ্যা এখনো অনেক বেশি। শহুরে জনসংখ্যার প্রায় এক-দশমাংশ এই শ্রেণির অন্তর্গত। শহরে মোট দরিদ্রের প্রায় ৫১ শতাংশ নতুন। যারা নিম্নমধ্যবিত্ত থেকে নেমে গেছে।

বিআইডিএস ২ হাজার ৪৬টি পরিবারের ওপর জরিপ চালিয়ে এ প্রতিবেদন তৈরি করে। এতে দেখা যায়, করোনার আগে অর্থাৎ ২০১৯ সালে দরিদ্র মানুষের মধ্যে আত্মকর্মসংস্থানের হার ছিল ৩৩ দশমিক ৬০ শতাংশ। গত বছর তা বেড়ে ৩৮ দশমিক ৫৬ শতাংশ হয়েছে। 

অন্যদিকে অতিদরিদ্র মানুষের মধ্যে করোনার আগে আত্মকর্মসংস্থানের হার ছিল ১৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ। বর্তমানে তা বেড়ে ৩৩ দশমিক ২১ শতাংশ হয়েছে। ২০১৯ সালে দরিদ্র পরিবারের মধ্যে ৩৯ দশমিক ২৯ শতাংশ এমএফএস ব্যবহার করত। ২০২২ সালে সেটি বেড়ে ৭৮ দশমিক ৭৮ শতাংশ হয়েছে। এ সময় ব্যাংক হিসাব খোলার হার তেমন বাড়েনি।


সর্বশেষ সংবাদ