যেসব সুবিধা পান রাষ্ট্রপতি

বাংলাদেশের বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো: আব্দুল হামিদ
বাংলাদেশের বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো: আব্দুল হামিদ  © ফাইল ফটো

বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির স্থান সবার উর্ধ্বে। রাষ্ট্রের সকল কাজে অধিকাংশ সময় প্রধানমন্ত্রীকে দৃশ্যমান দেখা গেলেও রাষ্ট্র সংক্রান্ত বিভিন্ন মৌলিক কাজ সামলাতে হয় রাষ্ট্রপতিকে। বাংলাদেশের সংবিধানে রাষ্ট্রপতির দায়িত্বের বিস্তারিত যেমন উল্লেখ আছো তেমনি দেশের এই সর্বোচ্চ পদের জন্য আইন অনুযায়ী বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধাও নিশ্চিত করা হয়েছে।

আইন অনুযায়ী, বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির বেতন এক লাখ ২০ হাজার টাকা। এছাড়া রাষ্ট্রপতি ও তার পরিবারের সদস্যদের খাবার, আবাসন, চিকিৎসা, পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ সেবা খাতের সব ধরনের ব্যয় রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে করা হয়।

আরো পড়ুন: মির্জা ফখরুলের বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করলেন ওবায়দুল কাদের

১৯৭৫ সালে প্রণীত আইনটি দেশের আর্থ সামাজিক প্রেক্ষাপটে সময়ে মহামান্য রাষ্ট্রপতি বেতন ভাতাটি বৃদ্ধিসহ অন্যান্য সুবিধা বাড়াতে সংশোধনী হয়েছে। মূল আইনটি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে- আইনটি প্রণয়নের সময়ে (১৯৭৫ সালে) রাষ্ট্রপতির বেতন নির্ধারণ করা হয়েছিল ২৫০০ টাকা। এরপর ১৯৮৭ সালে আড়াই হাজার থেকে বাড়িয়ে ১০ হাজার টাকা, ১৯৯২ সালে ১৫ হাজার টাকা, ১৯৯৮ সালে ২৩ হাজার টাকা, ২০০৫ সালে ৩৩ হাজার ৪০০ টাকা, ২০০৯ সালে ৬১ হাজার ২০০ টাকা এবং সর্বশেষ ২০১৬ সালে এক লাখ ২০ হাজার টাকা করা হয়েছে। 

এর পাশাপাশি রাষ্ট্রপতি ও তার পরিবার, কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও অতিথিদের পানীয় ও তামাকজাত পণ্যসহ বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী ট্যাক্স-ফ্রি কিনতে পারবেন। রাষ্ট্রপতি অবসরে গেলেও ব্যক্তিগত স্টাফসহ অবসর সুবিধা পাবেন। আইনে পরিবারের সদস্য বলতে স্ত্রী-স্বামী, সন্তান, পিতা-মাতা ও অবিবাহিত ভাই-বোনকে বোঝানো হয়েছে, যারা তার ওপর নির্ভরশীল।

আরো পড়ুন: ঈদের ছুটিতে পর্যটকের ঢল নেমেছে কুয়াকাটায়

এছাড়া, রাষ্ট্রপতির জন্য সরকারি আবাসন ব্যবস্থা থাকবে। এর আসবাবপত্রসহ সুসজ্জিতকরণ ও মেরামতের পুরোটাই সরকার বহন করবে। রাষ্ট্রপতির বাসভবন সংশ্লিষ্ট রাস্তাঘাট মেরামত ও সংস্কারের ব্যয় সরকারকে বহন করতে হবে।

রাষ্ট্রপতি ও তার পরিবারের সদস্যদের উপযুক্ত ও প্রয়োজনীয় যানবাহন সরকার নিশ্চিত করবে। রাষ্ট্রপতির সব ধরনের সফর ও সফরকালীন অবস্থানের ব্যয়ও সরকার প্রদান করবে। এমনকি পরিবহনের জ্বালানিও সরকার বহন করবে। জ্বালানি হবে ট্যাক্সের আওতামুক্ত। রাষ্ট্রপতি ভ্রমণের ক্ষেত্রে রেলওয়ে, বিমান ও নৌযানে সর্বোচ্চ সুবিধা সংবলিত আসন পাবেন। বিমান ভ্রমণের ক্ষেত্রে তার বার্ষিক ২৭ লাখ টাকা বিমা কাভারেজ সরকার প্রদান করবে।

আরো পড়ুন: মো. সাহাবুদ্দিন রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেবেন সোমবার

সরকারি কাজে বিদেশ সফরের সময়ে তার সব ধরনের খরচ সরকার প্রদান করবে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এই খাতের ব্যয় সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বহন করা হয় বলে জানা গেছে।

আইন অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি আপ্যায়নের সুবিধাদি প্রাপ্য হন। বঙ্গভবনে দেশি-বিদেশি অতিথি ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার, ইফতার পার্টি, ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহা, বুদ্ধপূর্ণিমা, দুর্গাপূজা, যিশু খ্রিষ্টের জন্মদিন, পহেলা বৈশাখ, শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান উপলক্ষে আমন্ত্রিতদের আপ্যায়ন বাবদ ব্যয় সরকারের নির্ধারিত এ খাত থেকে বহন করা হয়। রাষ্ট্রপতি কোনও দেশি-বিদেশি অতিথিদের আপ্যায়ন করলে বা তাদের কোনও ধরনের উপহার দিলে, তার ব্যয়ও সরকারি খাত থেকে করা হয়।

এছাড়া ছয় মাস বা তার অধিক সময়কাল দায়িত্ব পালন শেষে রাষ্ট্রপতি অবসরে গেলেও বেতনের ৭৫ শতাংশ হারে মাসিক অবসর ভাতা পাবেন রাষ্ট্রপতি। এর বাইরেও অবসরকালে একজন ব্যক্তিগত সহকারী, একজন অ্যাটেনডেন্টসহ সরকার নির্ধারিত দাপ্তরিক খরচ পাবেন।


সর্বশেষ সংবাদ