প্রকৌশলী ইনামুল হককে লাঞ্ছনার ঘটনায় ৩২ নাগরিকের উদ্বেগ
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৭ ডিসেম্বর ২০২২, ০৮:৫২ PM , আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০২২, ০৮:৫২ PM
প্রকৌশলী ম. ইনামুল হককে লাঞ্ছিতের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ৩২ সদস্যবিশিষ্ট নাগরিক। তারা এ ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়ে মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) বিবৃতি দিয়েছেন।
বিবৃতিতে ৩২ নাগরিক বলেন, নদী ও পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনায় প্রবীণ প্রকৌশলী ম. ইনামুল হকের অবদান সর্বজনবিদিত। আমরা গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সূত্রে জানতে পেরেছি, গত ২৪ ডিসেম্বর শনিবার ম. ইনামুল হক রাজধানীর শাহবাগ এলাকায় তার কয়েকজন সহযোগীর সঙ্গে যুক্ত হয়ে বিদ্যমান রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় নির্বাচন ও গণতন্ত্রের সংকট নিয়ে কথা বলছিলেন ও গণসচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে লিফলেট বিতরণ করছিলেন, যা তাঁর সংবিধান প্রদত্ত নাগরিক অধিকার। যে কোনো নাগরিকেরই দেশের রাজনীতি নিয়ে কথা বলা, সমালোচনা করা ও সভা-সমাবেশ করার অধিকার রয়েছে। কিন্তু এ সময় ম. ইনামুল হককে যেরকম ন্যাক্কারজনক শারীরিক লাঞ্ছনার শিকার ও হেনস্থা করা হয়েছে তা সুস্পষ্টভাবে একজন নাগরিকের মতপ্রকাশের অধিকার ও সভা-সমাবেশের অধিকারের ওপর মারাত্মক আঘাত। একই সঙ্গে এমন আক্রমণাত্মক আচরণের মধ্য দিয়ে প্রতীয়মান হয় যে, পরমতসহিষ্ণুতার মতো মৌলিক গণতান্ত্রিক মূল্যবোধগুলো আমাদের রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিসর থেকে ক্রমেই বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে, যা ভীষণ উদ্বেগের।
বিবৃতিতে নাগরিকেরা আরও বলেন, মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের ঘোষণাপত্রের অন্যতম মূলনীতি হচ্ছে মানবিক মর্যাদা। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের প্রস্তাবনায় আইনের শাসন ও মৌলিক মানবাধিকারকে রাষ্ট্রের অন্যতম মূল লক্ষ্য হিসেবে নিশ্চিত করা হয়েছে। আমরা জোর দাবি জানাচ্ছি, জাতিসংঘ ঘোষিত মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্র ও বাংলাদেশের সংবিধানে সংরক্ষিত স্বাধীন মতপ্রকাশ ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অঙ্গীকার সুরক্ষাসহ টেকসই উন্নয়ন লক্ষমাত্রা ১৬ বাস্তবায়নে রাষ্ট্র ও সরকারের অঙীকার বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক। আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখ করছি, অবিলম্বে প্রকৌশলী জনাব ইনামুল হককে হেনস্তাকারী ব্যক্তিকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক। অন্যথায় এটি বিচারহীনতার আরেকটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
বিবৃতিতে সাক্ষর করেছেন
অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুব উল্যাহ, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, আইন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আসিফ নজরুল, সাবেক কূটনীতিক ও পিপলস একটিভিস্ট কোয়ালিশনের সমন্বয়ক সাকিব আলি, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. আবদুল লতিফ মাসুম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. তানজিম উদ্দিন খান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক নাসির উদ্দিন আহমেদ, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মাহবুব হোসেন, মানবাধিকারকর্মী নুর খান লিটন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের অধ্যাপক ড. ইফতিখারুল আলম মাসউদ, লেখক ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ, আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শামীমা সুলতানা, কবি আবদুল হাই শিকদার, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক কামরুন্নেসা খন্দকার, পরিবেশ ও জলবায়ু নীতি বিশ্লেষক এম জাকির হোসেন খান, কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক মাহবুব মোর্শেদ, সায়েন্টিফিক বাংলাদেশের এডিটর ড. মুনির উদ্দিন আহমেদ, প্রকৌশলী ও টেকসই উন্নয়ন বিষয়ক লেখক ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব, গবেষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. মারুফ মল্লিক, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের (যুক্তরাষ্ট্র) বাংলাদেশ ও পাকিস্তান বিষয়ক বিশেষজ্ঞ সুলতান মোহাম্মদ জাকারিয়া, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব লয়ের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক মো. সাইমুম রেজা তালুকদার, আইনজীবী ও নাগরিক বিকাশ ও কল্যাণের (নাবিক) আহ্বায়ক ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান, আইনজীবী ও আইনজীবী অধিকার পরিষদের সমন্বয়ক ব্যারিস্টার জিশান মহসিন, কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক সালাহ উদ্দিন শুভ্র, নাগরিক পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামসুদ্দিন, রিভারাইন পিপলের মহাসচিব শেখ রোকন, কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক এহসান মাহমুদ, লেখক ও গবেষক জাকারিয়া পলাশ, পেশাজীবী অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক ডেন্টিস্ট জাফর মাহমুদ এবং লেখক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক সোহেল রানা।