নতুন নামে দল নিবন্ধনের আবেদন জামায়াতের! 

ইসিতে নিবন্ধনের জন্য আবেদন
ইসিতে নিবন্ধনের জন্য আবেদন   © সংগৃহীত

দলের নিবন্ধন নিয়ে দীর্ঘ জটিলতায় রয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে বিরোধীতার দায়ে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট দলটির নিবন্ধন বাতিল ও অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট। এর পর থেকে নতুন নামে রাজনীতিতে আসার বিষয়ে দলটিতে আলোচনা-সমালোচনা কম হয়নি। 

নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি নামে নতুন রাজনৈতিক দল। বুধবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে নিবন্ধনের জন্য নির্বাচন কমিশনে দলের জেনারেল সেক্রেটারি মো. কাজী নিজামুল হক স্বাক্ষরিত আবেদনপত্র জমা দেওয়া হয়। নিবন্ধনের সব শর্ত পূরণ করেছে বলে আবেদনে দাবি করেছে দলটি। আবেদনের সঙ্গে ইসির শর্ত সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য সংযুক্তি আকারে দেওয়া হয়েছে।

গণমাধ্যমের প্রতিবেদন বলছে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতারাই দলটি গঠন করেছেন।

জানা গেছে, নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন বাতিল হওয়া জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে থাকা ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে দলটি গঠিত হয়েছে। মো. কাজী নিজামুল হক জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার কর্মপরিষদ সদস্য। তিনি ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাবেক নেতা বলেও তথ্য পাওয়া গেছে। আর দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল ইসলাম চান ডেমরা থানা জামায়াতের আমির। তেব ডেমরা থানা জামায়াতের আমির ছিলেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি ডেমরা চিনিই না। আমরা সম্পূর্ণ নতুন একটা দল। জামায়াতের সঙ্গে আমাদের সম্পৃক্ততা নাই।

আরও পড়ুন: কুবিতে সেশনজট নিয়ে আন্দোলন করায় নম্বরপত্রে বৈষম্যের অভিযোগ

অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, আমরা নিবন্ধনের সব শর্ত পূরণ করেই বিডিপির আবেদন জমা দিতে এসেছি। আশা করি, আমরা ইসিতে নিবন্ধিত হব এবং আমরা রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত হব। আমরা প্রায় ৫০ হাজার পৃষ্ঠার ডকুমেন্ট এনেছি।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ভুল কথা অনেকেই বলতে পারেন। এটা একটা নতুন দল। আমার সঙ্গে যারা আছেন, তারা নতুন প্রজন্মের। বিভিন্নভাবে তাদের সংগ্রহ করছি। এখানে কারও কোনো দলের লেজুড়বৃত্তি বা সহযোগিতা ফিল করি না। জামায়াতের সঙ্গে আমাদের সম্পৃক্ততা নেই।

বুধবার সন্ধ্যায় আলাপকালে আনোয়ারুল ইসলাম চাঁন বলেন, ‘আমি নব্বইয়ের আন্দোলনে একজন সক্রিয় কর্মী ছিলাম। আমি ১৯৮৬ সাল থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জহুরুল হক হল ছাত্রদলের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। পরবর্তী সময়ে বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের রাজনীতিতে ছিলাম। আমার সঙ্গে জামায়াতের সাংগঠনিক কোনও সম্পর্ক নেই।’

জামায়াতের ঢাকা মহানগর ও ছাত্র শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতারা জানিয়েছেন, বিডিপির সেক্রেটারি জেনারেল মো. কাজী নিজামুল হক ছাত্র শিবিরের ঢাকা আলিয়া শাখার সভাপতি ছিলেন। তিনি ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। বেশ কয়েক বছর ছাত্র শিবিরের অভ্যন্তরীণ সমস্যায় যে ২০-২২ জন পদত্যাগ করেছিলেন, তাদের মধ্যে কাজী নিজামুল হক রয়েছেন। তার ডাক নাম নাঈম। সর্বশেষ বিডিপি সেক্রেটারি নিজামুল হক ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের কর্ম পরিষদের সদস্য ছিলেন।

গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে বিদ্যমান সম্পর্ককে ‘নতুন ইতিহাস’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন কাজী নিজামুল হক। বুধবার বিকালে তিনি বলেন, ‘ওইগুলা যা ছিলাম এখন সব ইতিহাস। এখন নতুন পার্টি।’ তিনি জামায়াতের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন কিনা বা জামায়াত থেকে তাকে বাদ দেওয়া হয়েছে কিনা, এ প্রশ্নের উত্তরও মেলেনি।


সর্বশেষ সংবাদ