ভাষাসৈনিক রণেশ মৈত্র মারা গেছেন
- টিডিস রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৪:৫৯ PM , আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৬:১৮ PM
রাজনীতিবিদ, লেখক, সাংবাদিক রণেশ মৈত্র। এক ডজনের বেশি গ্রন্থের লেখক ভাষাসৈনিক রণেশ মৈত্র। ভাষাসৈনিক একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক রণেশ মৈত্র ছিলেন ছাত্র ইউনিয়ন ও ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা, তাঁতি অধিকার প্রতিষ্ঠা, ঘুঘুদহ ও বিল কুড়ানিয়ার খেতমজুরদের আন্দোলনসহ মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম এ সংগঠক মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯০ বছর। রাজধানীর একটি হাসপাতালে সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ভোরে মারা যান রণেশ মৈত্র।
বাণী ঐক্য ন্যাপ সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য ও সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লাহ তারেক রাজনীতিবিদ, লেখক, সাংবাদিক রণেশ মৈত্রের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
ঐক্য ন্যাপের সভাপতি বলেন, আজ অথবা আগামীকাল তার ছেলে অস্ট্রেলিয়া থেকে ঢাকায় পৌঁছাবেন। তার (রণেশ মৈত্র) মরদেহ শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে রাখা হবে। তাকে শ্রদ্ধা জানানো হবে আগামীকাল মঙ্গলবার বিকেলে শাহবাগের ন্যাপ অফিসে।
রণেশ মৈত্র ১৯৩৩ সালের ৪ অক্টোবর রাজশাহী জেলার নওহাটা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পাবনা জেলার সাঁথিয়া উপজেলার ভুলবাড়িয়া গ্রামের তার পৈত্রিক নিবাস। বাবা রমেশ চন্দ্র ছিলেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক। রণেশ মৈত্র টিউশনি করে নিজের লেখাপড়ার খরচ চালাতেন সপ্তম শ্রেণিতে ওঠার পর থেকেই।
রণেশ মৈত্র দেশের অসহায়, শোষিত ও বঞ্চিত মানুষের জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম করেন জীবন সংগ্রাম থেকে শিক্ষা নিয়ে। তিনি ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন ১৯৫০ সালে পাবনা জিসিআই স্কুল থেকে । পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ থেকে আইএ ১৯৫৫ সালে এবং স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন ১৯৫৯ সালে।
আরও পড়ুন: বৃত্তি নিয়ে পড়ুন যুক্তরাষ্ট্রের হবার্ট অ্যান্ড উইলিয়াম স্মিথ কলেজে
তার সাংবাদিকতা জীবন শুরু হয় ১৯৫১ সালে সিলেট থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক নওবেলাল পত্রিকার মাধ্যমে। কলকাতা থেকে প্রকাশিত দৈনিক সত্যযুগে তিন বছর সাংবাদিকতার করে তিনি দৈনিক সংবাদে যোগ দেন ১৯৫৫ সালে। ডেইলি মর্নিং নিউজ ১৯৬১ সালে এবং ১৯৬৭ সাল থেকে ১৯৯২ পর্যন্ত দৈনিক অবজারভারের পাবনা প্রতিনিধির দায়িত্ব পালন করেন রণেশ মৈত্র।
১৯৯২ সালে দি নিউ নেশনের মফস্বল সম্পাদক হিসেবে যোগ দেওয়ার পর দি ডেইলি স্টারের পাবনা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন ১৯৯৩ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত। পরে রণেশ মৈত্র সারাদেশে ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেন একজন ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক হিসেবে দেশের শীর্ষ পত্রপত্রিকায় কলাম লিখে।
তিনি দীর্ঘদিন পাবনা প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে জেলার সাংবাদিকদের নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি সাংবাদিকতায় অবদানের জন্য তিনি ২০১৮ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার প্রদত্ত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত হন।
রণেশ মৈত্রের রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় ১৯৪৮ সালে ছাত্র ইউনিয়ন থেকে ভাষা আন্দোলনের মিছিলে যোগ দেওয়ার মধ্য দিয়ে। সাংবাদিকতা পেশায়ও তিনি জড়িয়ে পড়েন একই সময়ে।
ভাষা আন্দোলনে পাবনা জেলার অন্যতম সংগঠক ছিলেন ১৯৫২ সালে। তিনি ছাত্র ইউনিয়নের জেলা সাংগঠনিক কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন সেই বছরেই। এডওয়ার্ড কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে সাংস্কৃতিক সম্পাদক নির্বাচিত হন ১৯৫৩ সালে।