মায়ের চেয়ে তিন বছরের বড় স্কুলশিক্ষক মেয়ে

ক্লাস করছেন শিক্ষার্থীরা
ক্লাস করছেন শিক্ষার্থীরা  © ফাইল ছবি

মায়ের জন্ম ১৯৯০ সালে। আর সন্তানের জন্ম ১৯৮৭ সালে। অর্থাৎ মায়ের জন্মের তিন বছর আগে সন্তানের জন্ম। বিষয়টি বাস্তবে অসম্ভব হলেও সরকারি খাতায় দুজনের বয়স এমনই রয়েছে। আর বয়স কম দেখিয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে চাকরি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মেয়ের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে একটি অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। 

জানা গেছে, শামছুন্নাহার ২০১২ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সহকারী শিক্ষক হিসেবে টাঙ্গাইলের গোপালপুরের রাধারানী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় যোগদান করেন। সেখানে যে জাতীয় পরিচয়পত্র জমা দেন। সেখানে তার জন্ম দেখানো হয় ১৯৯০ সালের ২০ অক্টোবর। 

১৯৮৫ সালে আজহারুল হক তালুকদারের সঙ্গে শামছুন্নাহার বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। জন্মসনদ অনুসারে যা তার জন্মের পাঁচ বছর আগে। শুধু তাই নয়, ১৯৮৭ সালের ২৪ নভেম্বর তার প্রথম কন্যা ফারজানা শারমিনের জন্ম হয়। সে অনুযায়ী কন্যার জন্ম মায়ের জন্মের তিন বছর এক মাস চার দিন আগে। এছাড়া ১৯৯৩ সালের ২৫ অক্টোবর তার দ্বিতীয় কন্যা রোকসানা শারমিন এবং তার একমাত্র পুত্র সন্তান মো. আব্দুর রহমানের জন্ম ১৯৯৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারিতে জন্ম হয়।

জন্মসনদ অনুযায়ী শামছুন্নাহারের বয়স তার মেয়ের চেয়ে তিন বছরের ছোট। আর বিষয়টি অকপটে স্বীকারও করেছেন তিনি।

তিনি জানান, ১৯৮৭ সালে প্রথম সন্তান ফারজানা শারমিনের জন্মের পর নতুন করে লেখাপড়া  শুরু করেন। ভর্তি হন উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে বয়সের কোনো বিধিনিষেধ ছিল না। কর্তৃপক্ষ বয়স নির্ধারণ করে দেন ১৯৯০ সালের ২০ অক্টোবর। তার জাতীয় পরিচয় কার্ডেও জন্ম সনদে একই।

শামছুন্নাহার উন্মুক্ত থেকে ২০০৪ সালে এসএসসি, ২০০৬ সালে এইসএসসি এবং ২০১০ সালে ডিগ্রি এবং পরবর্তীকালে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে কৃষিতে ডিপ্লোমা অর্জন করেন। ২০১২ সালে তিনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার চাকরি পান নেন। তার ভাষায়, তিন সন্তান এবং সংসার সামলিয়ে অনেক বাধাবিঘ্ন পেরিয়ে লেড়ালেখা করতে হয়েছে তাকে।

উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. মফিজ উদ্দীন জানান, চাকরির ক্ষেত্রে বয়স কমবেশি নিয়ে অনেক কিছুই ঘটে। ঐ শিক্ষিকা সরকারি নিয়মনীতি মেনে চাকরি করছেন কি না, সেটিই আমাদের দেখার বিষয়। কখন, কীভাবে তিনি সন্তানের মা হয়েছেন  সেসব দেখার এক্তিয়ার খুব একটা নেই।

তবে টাঙ্গাইল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবুল কালাম আজাদ বিষয়টি তদন্ত করে দেখবেন বলে জানান।


সর্বশেষ সংবাদ