প্লিজ আমলাতন্ত্র, এই মামলা প্রত্যাহার করুন

সহকারী অধ্যাপক শেখ আদনান ফাহাদ
সহকারী অধ্যাপক শেখ আদনান ফাহাদ  © ফাইল ছবি

আলোচিত চলচ্চিত্র ‘হাওয়া’ সিনেমার পরিচালক মেজবাউর রহমান সুমনের নামে মামলা করেছে বন বিভাগের বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট। তবে বন বিভাগের কাছে এই মামলা তুলে নিতে অনুরোধ জানিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) জার্নালিজম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগে সহকারী অধ্যাপক শেখ আদনান ফাহাদ। আজ বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাসের মধ্যে এই অনুরোধ জানিয়েছেন।

পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘আমাদের জীবদ্দশায় সিনেমা অঙ্গনে পপুলার প্রডাকশন হিসেবে হাওয়া'কে উপরের দিকে রাখতে হবে। এই সিনেমা একই সাথে কান উৎসবের বিচারককে প্রভাবিত করেছে, আবার সাধারণ মানুষেরও মন জয় করেছে। এমন একটি উন্নত মানের কাজ যিনি আমাদেরকে উপহার হিসেবে দিয়েছেন সেই পরিচালকের বিরুদ্ধে ২০ কোটি টাকার মামলা দিয়েছে নাকি পরিবেশ ও বন অধিদপ্তর। আমি আমার পরিচিত কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদ, আইনজীবীসহ সকল নীতি নির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। পরিচালক মেজবাউর রহমান সুমন আমাকে চেনেন না। কিন্তু তাদের মেঘদলের গান শুনেছি সেই ক্যাম্পাস লাইফে -লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক'। 'এই হাওয়া' গানটি শুনেন, বুঝবেন এদের লেভেল। এই মামলা যাদের মস্তিষ্ক প্রসূত তারা হয় খুবই সস্তা, না হয় খুব উন্নত পর্যায়ের কূটবুদ্ধিসম্পন্ন। আমাদের চলচ্চিত্র যখন ঘুরে দাঁড়াচ্ছে, তখন এই অহেতুক মামলা কেন? ফিকশনে মানুষ খাওয়ারও দৃশ্য দেখানো হতে পারে। কত অনাচার কতজনে করে। মামলা হয়না। আল্লাহর দোহাই লাগে এই মামলা প্রত্যাহার করুন। সুমন সাহেবরা চাইলে এই দেশ ছেড়ে আমেরিকায় গিয়ে আরামে থাকতে পারে। এরপরেও সব সহ্য করে আছে। এই সিনেমা না বানালেও পারতেন। জিন্দেগি আরামসে কেটে যেত। তবু বানিয়েছেন। প্লিজ আমলাতন্ত্র। এই মামলা প্রত্যাহার করুন। একজনা স্রষ্টার গতিরোধ কইরেন না। না হলে এদেশে কিন্তু কোন সৃজনশীল মানুষ থাকবে না। দেশটা আফগানিস্তান হলে তখন আমাদের কিন্তু বইলেন না।’

আরও পড়ুন: রিভিউ: কী আছে হাওয়া সিনেমায়?

উল্লেখ্য, গতকাল বুধবার (১৭ আগস্ট) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন-২০১২ লঙ্ঘনের অভিযোগে আলোচিত চলচ্চিত্র 'হাওয়া'র পরিচালক মেজবাউর রহমান সুমনের নামে মামলা করেছে বন বিভাগের বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন-২০১২ এর ধারা ৩৮ (১-২), ৪১ ও ৪৬ লঙ্ঘনের অভিযোগে মামলা করেছে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট। মামলায় বাদী হয়েছেন বন্যপ্রাণী পরিদর্শক নারগিস সুলতানা। 

রিভিউ প্রকাশের পর হাওয়া চলচ্চিত্রে একটি শালিক পাখিকে খাঁচায় আটকে রাখা ও এক পর্যায়ে হত্যা করে খাওয়ার দৃশ্য দেখানোর মাধ্যমে বন্যপ্রাণী আইন লঙ্ঘন হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন অনেকে। তারপর গত ১০ আগস্ট এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দেয় দেশে পরিবেশ ও প্রকৃতি নিয়ে কাজ করা ৩৩টি সংগঠনের সমন্বিত প্রয়াস বাংলাদেশ প্রকৃতি সংরক্ষণ জোট (বিএনসিএ)। এর পরদিন প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে চলচ্চিত্রটি দেখে আইন লঙ্ঘনের প্রমাণ মিলেছে বলে জানান বন অধিদফতরের গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা।

হাওয়া চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন চঞ্চল চৌধুরী, নাজিফা তুষি, শরিফুল রাজ, সুমন আনোয়ার, সোহেল মণ্ডল, নাসির উদ্দিন খান, রিজভী রিজু প্রমুখ।

 


সর্বশেষ সংবাদ