লকডাউন ও বাংলাদেশ

প্রতীকী
প্রতীকী

প্রথমেই বলে নেই দেশের ১০০ ভাগের ১০ ভাগ মানুষের লকডাউন বা মৃত্যু অবধি ঘরে শুয়ে বসে থাকলেও তাদের ১৪ পুরুষ খেয়ে-পড়ে বেঁচে থাকতে পারবে। আর দেশের এই ১০ ভাগ মানুষ কারা একটু খুলে বলি-

১. যে কোন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা পাশাপাশি জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতা, তারা মোটামুটি সবাই ধনাঢ্য। নানাবিধ ব্যবসা ধন্দা ও কালো টাকার পাহাড় রয়েছে অনেকের। আঙুল ফুলে অনেকে কলাগাছ।
২. স্থানীয় সুদখোর-ঘুষখোর যারা টাকায় টাকা কামায় দরিদ্র মানুষকে ঋণ দিয়ে সপ্তাহে সপ্তাহে সুদ নেয় তারা।

৩. শিল্পকারখানা মালিক। নানাবিধ সুদখোর-ঘুষখোর, ব্যাংক লুটেরা ব্যবসায়ী -শিল্পপতিরা।
৪. সরকারি পিয়ন থেকে শুরু করে সচিব, মন্ত্রী, এমপিসহ সরকারি সকল শ্রেণীর চাকরিজীবী।

৫. পাশাপাশি ঘরে বসে বেতন তোলা শিক্ষক সমাজ করোনার মাঝেও বাসায় টিউশনি করিয়ে অনেকেই মাসে লাখ টাকা ইনকাম করে চলেছে। করোনা শিক্ষক সমাজের কাছে আশীর্বাদ স্বরুপ তারা হয়ত মনে মনে করেনার কাছে কৃতজ্ঞতা জানায়। দোয়া করে হাজার বছর জীবিত থাক করোনা তুমি...! (ধারণা)

৬. ১০ ভাগের মধ্যে সাংবাদিক সমাজ ও পড়বে কারণ তারা আজকাল করোনাকে পুঁজি করে ব্যবসা চালু রাখছে..!

৭. ডাক্তর সমাজ ৩৯ বিশেষ, ৪২ বিশেষ কত প্রশ্ন ফাঁসকারী অযোগ্য বাপের টাকাই প্রাইভেট মেডিকেলে এপ্রোন নিয়ে ঘুরে বেড়ানো পোলাপান আজ বিসিএস ক্যাডার সম্মান পেল। করোনার কারণে তারা হয়ত এছাগা এ দেশে করোনা না হলে কোনদিন বিসিএস ক্যাডার তো দূরে থাক তাদের কাছে কেউ চিকিৎসাই নিতে যেত না।

উপরোক্ত ১০ ভাগ মানুষের কাছে করোনার দোহাই দিয়ে লকডাউন দিলে এক প্রকার ঈদের মতো লাগে...!

এবার আসি ৯০ ভাগ মানুষের কথায়-

এ দেশের শ্রমজীবী, দিনমজুর, টং দোকানদারসহ কোটি কৃষক শ্রেনী একজন কৃষকের ওপর নির্ভরশীল পুরো পরিবারের ৫/৭ সদস্য, রিক্সা চালকসহ বিভিন্ন শিল্প কারখানা, গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীতে কর্মরত মানুষজন।

দিনমজুর, গার্মেন্টস শ্রমিক, নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষদের ওপর রয়েছে ব্রাকসহ নানা এনজিও, স্থানীয় সুদখোর, ব্যাংক থেকে সুদের ওপর তোলা টাকা। হয়ত কেউ সন্তানকে লেখাপড়া করাতে কেউ বা মেয়েকে বিয়ে দিতে বাধ্য হয়ে এই টাকা তুলেছে যা সপ্তাহে বা মাসে কিস্তিতে পরিশোধ করতে হয়।

এখন বলেন লকডাউন ১৪ দিন হয় এরা তো ১ দিন কাজ না করলেই এদের পেটে ভাত যায় না তার ওপর সকাল-বিকাল এনজিওর লোক ঘোরাঘুরি করে টাকা না পেলে শেষ সম্বল গরু, ছাগলও নিয়ে যায়। এদের কাছে এসব লকডাউন ফাইজলামি ছাড়া আর কিই বা হতে পারে বলেন...।

এই ৯০ ভাগ মানুষ না খেয়ে মরবে এমন নয় তবে জীবনযাপন কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। বেঁচে থাকা দূর্বিষহ হবে। মানবেতর জীবন যাপন করতে হবে সবাইকে।

একদম না খেয়ে মারা যাবে দিনমজুর যারা দিন আনে দিন খায়। তারা হয়ত অনেকেই অভাবের তাড়নায় আত্মহত্যা করবে ইতোমধ্যে অনেকে করেছেও।

এই বাস্তবতায় লকডাউন একটা ফাইজলামি ছাড়া কিছু নয়। না খেয়ে মরার চেয়ে করোনার সাথো লড়াই করে দু মুঠো ভাত খেয়ে মরা ভালো।

সাধারণ শিক্ষার্থীদের কথা আর কি বলবো যা হচ্ছে তা অপূরণীয় ক্ষতি অনেকে হয়ত লেখাপড়া কি শব্দটাও ভুলেই গেছে। ছোট বাচ্চারা ভুলে গেছে পড়ালেখা বলে আদও কিছু আছে পৃথিবীতে।

আর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা তো একদম না মরে বেঁচে আছে কোনমতে কেউ বা আত্মহত্যা করেছে। করোনা আমাদের কি মারবে সরকারের নীতি নির্ধারকদের ফাইজলামি, স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্ত আমাদের জীবনকে অতিষ্ঠ করে দিয়েছে।

সবশেষে বলতে চাই, করোনা বা মহামারি সব কিছুর মধ্যেই চালিয়ে যেতে হবে আমাদের জীবিকার তাগিদে জীবন তবেই আমাদের মুক্তি।

লেখক: শিক্ষার্থী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়


সর্বশেষ সংবাদ