মামলা দিয়ে সাংবাদিকদের কন্ঠরোধ করা হচ্ছে

প্রতীকী
প্রতীকী

বাংলাদেশের স্বাধীনতার সময় থেকে আজ পর্যন্ত বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ তুলে ধরতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে দেশের তরুণ সাংবাদিকরা। কিন্তু আমরা দেখছি এর ফলে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদেরকে করা হচ্ছে হয়রানি। সমাজের অনিয়মের চিত্র তুলে ধরতে গিয়ে যদি কোন ব্যক্তি বিশেষের বিরুদ্ধে যায় তখনই মামলা দিয়ে তাদেরকে হয়রানি করা হয়।

যার উদাহরণ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে দুইজন মেধাবী শিক্ষার্থী ও দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি সাংবাদিক মানিক রায়হান (বাপ্পি), বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি সাংবাদিক মর্তুজা নুর।

গত ২০১৫ সালের অক্টোবরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের তৎকালীন আবাসিক শিক্ষক ও কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক কাজী জাহিদের বিরুদ্ধে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হলের সিট বরাদ্দ দিতে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে চাঁদা দাবির অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল

এই সংবাদ প্রকাশের জের ধরে ২৪ অক্টোবর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন ক্ষুব্ধ ওই শিক্ষক। তিনি দৈনিক যুগান্তরসহ সুনামধন্য ১৬টি পত্রিকার বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে মামলা দায়ের করেন।

সে সময়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীও বর্তমানে দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মানিক রায়হান বাপ্পী ২৪বিডি টাইম ডটকম নামে একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতেন।

গত বছরের ২৯ নভেম্বর যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলম ও সোনালী সংবাদ সম্পাদক মো. লিয়াকত আলীসহ ৮ সাংবাদিককে বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) মোমিন। এ মামলার প্রেক্ষিতেই গত শুক্রবার সন্ধ্যায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের নিজ বাসা থেকে গ্রেফতার হন সাংবাদিক মানিক রাইহান বাপ্পী। পরে শনিবার আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

এদিকে ২০২০ সালের ২৪ নভেম্বর বাংলাদেশ প্রতিদিনে তিনি ‘রাবিতে বিধিলঙ্ঘন করে শিক্ষিকাকে পদোন্নতি দেয়ায় আইইআর পরিচালকের পদত্যাগ’ শীর্ষক একটি সংবাদ প্রকাশ করেন। সংবাদটি মিথ্যা, বিদ্বেষপ্রসূত ও হীন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দাবি করে রাবি স্কুল ও কলেজের শিক্ষক রুনা লায়লা ২৭ নভেম্বর রাতে রাজশাহী মহানগরীর মতিহার থানায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বাংলাদেশ প্রতিদিনের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মর্তুজা নূরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন।

গণমাধ্যম সব সময় সমাজের দর্পণ হিসেবে কাজ করে। যা ঘটে গণমাধ্যম তাই প্রকাশ করে। প্রকাশিত সংবাদে বিভ্রান্তিকর তথ্য থাকলে তিনি লিখিতভাবে প্রতিবাদ জানাতে পারেন। গণমাধ্যমে তার ব্যাখাও প্রকাশ করা হয়। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলেও অভিযোগ করা যেতে পারে। কিন্তু সেটি না করে একজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা- থানায় লিখিত অভিযোগ করা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

লেখক: সাংবাদিকও সমাজকর্মী।


সর্বশেষ সংবাদ