বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে ধর্ষণের ঘটনা বাড়ছে

প্রতীকী
প্রতীকী

নারীর স্বাধীনতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত গতিতে ধর্ষণের সংখ্যাটাও বাড়ছে। বাংলাদেশে ১৫ বছর বয়স হওয়ার আগেই শতকরা ২৫ জন মেয়ে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়।

স্বাভাবিকভাবেই ধর্ষণের মতো দুঃস্বপ্ন কোনো মেয়েই দেখতে চান না। ধর্ষণের পর যে কোনো নারী এতটাই লজ্জিত এবং আতঙ্কিত থাকেন যে তিনি ধর্ষক সম্পর্কে কোনো কথা বলতে বা পুলিশের কাছে গিয়ে সে অভিজ্ঞতা বা ধর্ষক সম্পর্কে জানাতে ভয় পান, কুণ্ঠা বোধ করেন।

অনেক ধর্ষিতা নারীরই বেশ কিছুদিন সময় লেগে যায় নিজের জীবনে ধর্ষণের মতো দুর্ঘটনার কথা কারো কাছে সরাসরি বলতে। এর সবচেয়ে বড় মূল কারণ হচ্ছে বিচারহীনতা। দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়ার কারণে দোষী ব্যক্তির শাস্তি নিয়ে আস্থা নেই মানুষের। এরজন্য বিচারহীনতা বা দায়মুক্তির সংস্কৃতি বড় কারণ। মূল্যবোধের অবক্ষয় তো আছেই।

উদ্বেগজনক বিষয় হলো যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও বাচ্চাদের নিরাপত্তা দিতে পারছে না। প্রতিটি সূচকেই শিশুর প্রতি নিপীড়ন বেড়েছে। আমরা শিশুদের নিরাপত্তা দিতে পারছি না। সংবাদপত্রের কল্যাণে যা বের হয়ে আসে তার চেয়েও ঘটনা অনেক বেশী ঘটে। কিন্তু এগুলো জানা যায় না। কারণ মানুষ সহজে মামলা করে না কিংবা পুলিশের কাছে যায় না।

ধর্ষণের পর নারীদের কী করণীয়?

১. ধর্ষণের পর একা থাকবেন না, কোনো বান্ধবী বা আত্মীয়ার সাথে যোগযোগ করুন, ঘটে যাওয়া ধর্ষণ নিয়ে কথা বলুন এবং তাঁর সাহায্য নিন।

২. গোসল, খাওয়া-দাওয়া, ধূমপান, বাথরুম যাওয়া– সম্ভব হলে এসব বন্ধ রেখে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ডাক্তারের কাছে চলে যান। অর্থাৎ ধর্ষণের চিহ্ন মুঝে যাবার আগেই ডাক্তারি পরীক্ষা করান।

৩. হাসপাতালে যাওয়ার পর যদি ‘এমারজেন্সিতে’ কারো সাথে এ বিষয়ে কিছু বলতে না চান, তাহলে শুধু একজন স্ত্রী বিশেষজ্ঞের কাছে ঘটনা খুলে বলুন।

৪. ধর্ষণকারী যেসব জিনিসের সংস্পর্শে এসেছে, তার সব তুলে রাখুন। যেমন অন্তর্বাস, প্যাড ইত্যাদি। সম্ভব হলে এ সব জিনিসের ছবিও তুলে রাখুন।

৫. নিজেকে দোষী ভাববেন না। কারণ যে ধর্ষণের মতো জঘণ্যতম কাজটি করেছে, শুধু সে একাই এর জন্য দায়ী, অপরাধী। আপনি নন।

লেখক: সাংবাদিক ও সমাজকর্মী


সর্বশেষ সংবাদ