গোল্ডফিস মেমোরি চাই না— একটু মনে করি কী ছিলো, আর কী হয়েছে

মহিবুল হাসান চৌধুরী
মহিবুল হাসান চৌধুরী

কভিড-১৯ এসে আমাদের সবাইকে ভার্চুয়াল রিয়ালিটিতে অভ্যস্ত করলো। অনলাইন এখন সবার কাছে সহজবোধ্য একটি বিষয়। খাদ্য, ঔষধ, সার্ভিস, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিনোদন, জীবনের সবকিছুতেই অনলাইনের উপস্থিতি। বাঙালি এখন অনলাইন ভালো বোঝেন। বোঝে বলেই আমরা স্পিড নিয়ে, দাম নিয়ে আলোচনা করি, অনলাইনের মান নিয়ে আলোচনা করি। আরো কত কিছু।

একটু পেছনে ফিরে দেখা যাক। বেশি দিন আগের কথা নয়। ২০০৫/২০০৬/২০০৭/২০০৮ বিদ্যুৎ বাংলাদেশ থেকে বিদায় নিয়েছে। মোবাইলে কথা বললেও টাকা, কল আসলেও টাকা। ইন্টারনেট এক বিপদজনক বিষয় সরকারের কাছে। যার লাইন পেতে দশ পাতার আবেদন আর প্রভাবশালী না হলে, মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট, এসব কিছু ছিলো বিলাসিতা। বোমা বাজি, খুন খারাবি, আফগানিস্তান হবো নাকি পাকিস্তান, নাকি কঙ্গো বা এঙ্গোলা? এমন সব চিন্তা।

এমন এক হ-য-বর-ল অবস্থায় বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা জনগনকে বললেন ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে চান। তার সুযোগ্য সন্তান সজীব ওয়াজেদ জয় বললেন অনলাইনকে সহজলভ্য করতে চান, মানুষের প্রাপ্য সেবা অধিকারে রূপান্তরিত করতে চান, সরকারের সার্ভিস অটোমেশন করতে চান। অনেকেই ভাবলেন অলীক স্বপ্ন, অসম্ভব। বিদ্যুৎ নাই যে দেশে, কম্পিউটার, অনলাইন এসব রাজনৈতিক ফাঁপাবুলি।

শেখ হাসিনা, বঙ্গবন্ধুর কন্যা, শেখের বেটি। এই রক্ত যারা বহন করেন বাঙালির জন্য ভালোবাসা, দেশের মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতা তাদের ডিএনএতে আছে। এঁরা কথার কথা বলে না, এঁরা করে দেখায়। করে দেখিয়েছে। আরো করবে, কিন্তু আমাদের অনেকেই কিন্তু ঠিকই ভুলে গিয়েছে। কি ছিলো, আর কি আছে। চাওয়াটা আকাশ ছোয়া হয়, যখন চাওয়াটা শেখ হাসিনার কাছে হয়। তাই হয়তো ভুলে গিয়েছি অনেকেই।

গোল্ড ফিস মেমোরি। হাওয়া ভবন অনলাইনকে পকেটবন্দি করে বাণিজ্যের ধান্দা করেছিলো। তাই যেখানে বেতার যন্ত্র দেখে, সেখানে কমিশন চেয়েছিলো। ‘সিমেন্স’ যন্ত্রের কন্ট্রাক্ট নিয়ে কমিশন দিয়ে স্বীকার করল আমেরিকায়। খালেদা জিয়ার মরহুম সন্তান, মিলিয়ন ডলার বুঝে পেয়েছেন। বাঙালি কিন্তু সেই বেতার যন্ত্রের সুফল পাওয়া দুরে থাক, আলোচনাই আর দেখলাম না! সব ভুলে গিয়েছে অনেকেই।

আজ অনলাইনে প্রতিবাদ হয়, সমালোচনা হয়। ভালোই। দেশকে আরো কিভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যাবে তা নিয়ে আলোচনা হয়। ক্ষোভ হয় বিক্ষোভ হয়। সবই ঠিক আছে। কিন্তু ভুলো মন, এই শব্দটাই সাধারণ মানুষ দশ বছর আগে কেউ ব্যবহার দুরে থাক, শুনতেও পায়নি, সেটা ঠিকই ভুলে গিয়েছি অনেকেই। যাই হোক, গোল্ডফিস মেমোরি চাই না। একটু মনে করি কি ছিলো, আর কি হয়েছে।

আরো অনেক কিছুই হতো, যদি সবাই আমরা, যিনি এগিয়ে দিয়েছেন এবং এখনো এগিয়ে দেয়ার জন্য দিন রাত খাটছেন, তার ছিটেফোটা ধারণ করতাম। তবুও এই দেশ, সাধারণ মানুষ, বঙ্গবন্ধুর রক্তের উপরেই ভরসা করে। বঙ্গবন্ধুর রক্ত। সে জায়গায় সবাই আবারো আশাবাদী হয়। অনলাইন, অফলাইন, বিদ্যুৎ, খাদ্য, নিরাপত্তা, মানুষের প্রতি ভালোবাসা থেকেই বঙ্গবন্ধুর পরিবার এখনো নিরলস কাজ করে চলেছে।


সর্বশেষ সংবাদ