শিক্ষার্থীদের হতাশা থেকে বাঁচাতে পারে ‘ওয়ার্ল্ড রিপেয়ারিং পিরিয়ড’

রাসেল মাহমুদ
রাসেল মাহমুদ  © টিডিসি ফটো

চলমান কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে স্থায়ী বা অস্থায়ীভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে পুরো বিশ্বের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান, স্থগিত রাখা হয়েছে সব কার্যক্রম। অনিশ্চয়তায় পড়ে পরিবর্তন করতে হয়েছে অলিম্পিক গেমসের মতো আন্তর্জাতিক আয়োজনের সময়সূচিও। সেই সাথে জাতীয় পর্যায়ের অগণিত আয়োজন তো আছেই।

এতোসব অনিশ্চয়তার মাঝে সবচেয়ে বড় হুমকির মুখে পড়তে যাচ্ছে পুরো বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিক্ষাব্যবস্থা এবং এর ধারাবাহিকতা।

এই মহামারী কবে নাগাত শেষ হতে পারে আর পুরো পৃথিবীই বা কবে সম্পূর্নভাবে সচল হতে পারে তার কোনো সঠিক ধারনা নেই। এই সমস্যা সমাধানের একটা আইডিয়া হতে পারে ‘ওয়ার্ল্ড রিপেয়ারিং পিরিয়ড’।

ওয়ার্ড রিপেয়ারিং পিরিয়ড

যে বছরটায় (অর্থাৎ ২০২০) আমরা পৃথিবীর স্বাভাবিক কার্যক্রম সচল রাখতে পারিনি। শতাব্দীর ধারাবাহিক সন (সাল) গুলোর শিকল থেকে সেই বছরটা আলাদা করে রাখা হবে (মূল গণনায় থাকবে না)।

অর্থাৎ, ২০২০ সালকে যদি আমরা শতাব্দীর শিকল থেকে আলাদা করি তাহলে ২০২১ সালকেই আবার আমরা ২০২০ হিসেবে গননা করব। আর আমরা যেই ২০২০ সালকে শিকল থেকে আলাদা করেছি, সেটাই হবে ‘ওয়ার্ল্ড রিপেয়ারিং পিরিয়ড’।

যেহেতু যেকোনো সনের অনুরূপ দিন প্রতি বছরই আবর্তিত হতে থাকে। তাই জ্যোতির্বিদগন গণনা করে ঠিক করবে ‘ওয়ার্ল্ড রিপেয়ারিং পিরিয়ড’ কোন সনের, কোন মাসের কত তারিখ থেকে পরের বছরের কোন তারিখ পর্যন্ত হবে।

এমনও হতে পারে ২০১৯’র ডিসেম্বর থেকে ২০২০’র ডিসেম্বর পর্যন্ত ‘ওয়ার্ল্ড রিপেয়ারিং পিরিয়ড’ বিবেচনা করে ২০২১’র ডিসেম্বরকে আমরা ২০২০ সনের ডিসেম্বর মাস ধরে নিব।

এক্ষেত্রে প্রশ্ন আসতে পারে

যেই বছরটা আমরা ‘ওয়ার্ল্ড রিপেয়ারিং পিরিয়ড’ বিবেচনা করে শতাব্দী থেকে আলাদা হিসেবে ধরে নেবো, সেই সময়ে (অর্থাৎ, মহামারী সময়কালে) যেসব প্রাতিষ্ঠানিক কাজ হয়েছে সেইসব বিষয়ের তথ্য কিসের ভিত্তিতে সংগ্রহীত করা হবে? উত্তরটা সহজ। সেই সময়ের সব কার্যক্রম সবই সংগ্রহীত হবে ওই সময়ের ভিত্তিতে এবং ‘ওয়ার্ল্ড রিপেয়ারিং পিরিয়ড’ হিসেবে উল্লেখ্য থাকবে।

আরো একটা সমস্যা হতে পারে

একটা বছর যেহেতু শতাব্দীর গণনায় আসবে না তবে মানুষ অন্য সকল প্রাণী অথবা যেকোনো কিছুর বয়স হিসেব করা হবে কিভাবে? সহজ ভাবে চিন্তা করলে, বয়স গণনায় ওই এক বছর হিসেব না করাই ভালো।

এতো গেলো এক বছর মহামারী সময়কাল বিবেচনা করলে কি হবে। যদি এমন হয়, এক বছরের আরো আগেই পৃথিবী সম্পূর্ণ সচল হয়ে যায়। তখন ‘ওয়ার্ল্ড রিপেয়ারিং পিরিয়ড’ এর হিসেবটা কেমন হবে?

তাও অসম্ভব কিছু নয়

উদাহরণ স্বরূপ ২০২০’র ফেব্রুয়ারী থেকে জুন মাস পর্যন্ত (পাঁচ মাস) মহামারী সময়কাল হলে, এই সময়টাই হবে ‘ওয়ার্ল্ড রিপেয়ারিং পিরিয়ড’। আর জুলাই মাসকে আবার ফেব্রুয়ারী মাস বিবেচনা করে ক্যালেন্ডার চলতে থাকবে। তাতে শুধু, বিভিন্ন মাসের সাথে ঋতু পরিবর্তনের তথ্য গুলো সংশোধন করতে হবে।

‘ওয়ার্ল্ড রিপেয়ারিং পিরিয়ড’ এর ধারণাটা বাঁচিয়ে দিতে পারে অসংখ্য শিক্ষার্থীদেরকে তাদের হতাশা থেকে আর চলমান রাখবে সকল শিক্ষা ব্যবস্থার ধারাবাহিকতা।

লেখক: কেমিকৌশল, যবিপ্রবি


সর্বশেষ সংবাদ