আয়মান-মুনজেরিনকে বিয়ে করতে মানা করছেন?

আয়মান সাদিক ও মুনজেরিন শহীদ
আয়মান সাদিক ও মুনজেরিন শহীদ  © সংগৃহীত

আয়মান সাদিক ও মুনজেরিন শহীদদের যে কারণে অরাজনৈতিক থাকার দরকার আছে—আয়মান সাদিক বা মুনজেরিন শহীদরা কোটা আন্দোলন, নিরাপদ সড়ক বা নির্বাচন লইয়া কথা না বলায় অনেকে দেখলাম খুব খামোশ হইছেন।

(তবে রাতুল মোহাম্মদ জানাইলেন সাদিক সাহেব নিরাপদ সড়ক লইয়া পোস্ট দেওনে তারে ধইরা লইয়া গেছিল। তবে ওনার বাবা যেহেতু আর্মির মানুষ তাই পরে ছাইড়া দিছিল ওনারে। তবে এইটা আমার আলাপের মূল্য লক্ষ্য না। আমার আলাপ হইল কেন যারা দেশের অর্থনৈতিক উন্নতিতে এখনই বড় ভাবে যুক্ত তাদের জন্যে অরাজনৈতিক থাকাটা বেটার।) হা হা।

আমার কথা হইল, সব আন্দোলন সবার করতে হবে না। রাজনৈতিক ভাবে আপনি পরিবর্তন চান কিনা তার উপরে নির্ভর করে আপনি আন্দোলন করতে আদৌ যাবেন কি যাবেন না। এমনকি পরিবর্তন চাইলেও কেউ এসব মহৎ লক্ষ্যে যুক্ত হইতে নাও পারেন।

তাদেরকে সে কারণে অভিযুক্ত করাটা ফ্যাসিবাদী প্রবণতা। ফ্যাসিবাদ কেবলই সরকার পন্থীদের অস্ত্র তা নয়, বিরোধী পক্ষ বা জাগ্রত জনতাও এই অস্ত্রের চর্চা করে। যারা আপনার আন্দোলনে যুক্ত হয় নাই আপনার আন্দোলন তাদের জন্যেও। এই রকম একটা মন না থাকলে আপনি দলাদলি করতে নামছেন, আন্দোলন না।

যারা বড় প্রতিষ্ঠান চালায় তাদের পক্ষে সব সময় রাজনৈতিক ভাবে সক্রিয় থাকা সম্ভব হয় না। তাদের প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব নির্ভর করে তাদের অরাজনৈতিক থাকার উপর। নয়ত তাদের প্রতিষ্ঠান বন্ধ কইরা দেয়া হবে! এইটা না বুইঝা ঠেইলা সবাইকে যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানোর চিন্তা বাস্তবতা বিবর্জিত চিন্তা।

২.
এখন বলব ছাত্র আন্দোলন লইয়া। ছাত্র আন্দোলন সবার করতে হবে কি, নাকি না? ‘ছাত্র অধিকার’ জিনিসটা মূলত মিডল ক্লাস সুবিধাভোগীদের নানা রকম ছাড় পাওয়া একটা সম্প্রদায়ের অধিকারের নাম। কাজেই তাদের স্বার্থ তারাই দেখবে। যে দেশের যে সম্প্রদায়ের সন্তানেরা আদৌ ছাত্রই হইতে পারে না সেই গরীব মানুষেরা কেন ছাত্র আন্দোলনে অবদান রাখতে যাবে?

ছাত্র আন্দোলন দেশের রাজনৈতিক রূপান্তর চায় না, চায় কেবলই দাবি আদায় করতে। তবে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি এমনতর আন্দোলনগুলিরে সাময়িক ভাবে নিজেদের কাজে লাগানোর চেষ্টা করবে। যখনই ছাত্রপক্ষ আবার সরকারের সঙ্গে ঘা ঘেষতে শুরু করবে তখন বিরোধী দলগুলিকে বুঝতে হবে এই ছাত্ররা তাদের পক্ষে আর কাজ করবে না। তখনও যদি বিরোধী দলগুলো ‘ছাত্র’ ‘ছাত্র’ কইরা জিকির করতে থাকে তাতে সমূহ ক্ষতির আশঙ্কা।

তারা যেহেতু আদৌ বিরোধী দলের রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান তৈরি করে নাই তাই এই ধরনের রাজনীতি বা আন্দোলনে আয়মান সাদিক বা মুনজেরিন শহীদদের যুক্ত না হওয়ার দরকার আছে। তাদের দরকার দেশ কত তাড়াতাড়ি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে সক্ষম কোটি কোটি দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে পারে তা নিয়া সার্বক্ষণিক চিন্তা ও কাজ করতে থাকা। 

সামনেই গার্মেন্টস বা অন্য সেক্টরে ধ্বস নামলে বা বিদেশী টাকা কমতে থাকলে তখন সাধের ছাত্র আন্দোলন না কইরা কেন সহজ কম্পিউটার প্রযুক্তি ও ইংরাজি জানা জনশক্তি তৈরি করা দরকার তা বোঝা যাবে।

৩.
তো আপনারা কি আয়মান সাদিক বা মুনজেরিন শহীদরা কোটা আন্দোলন, নিরাপদ সড়ক বা নির্বাচন লইয়া কথা বলে নাই বইলা এখন তাদেরকে সিঙ্গেল থাকতে বলতেছেন? বিয়ে করতে মানা করতেছেন? মাই গড! [ফেসবুক থেকে সংগৃহীত]

লেখক: কবি ও কথাসাহিত্যিক


সর্বশেষ সংবাদ