পুকুরে ইলিশ মাছ চাষ করবেন যেভাবে
হাসির রেখা তার ঠোঁটে লেগেই থাকে। যে কাউকে-ই সহজে আপন করে নিতে পারে। যে ছেলে ছুটি পেলেই ঘুরে বেড়াতো, সেই মিকদাম দুদিন ধরে ঘরমুখো হয়ে গেছে। মিকদাম এখন সবচেয়ে বেশি ল্যাপটপে সময় কাটায়। একটু কৌতূহলী হয়ে মিকদামের দিকে তাকাতেই ওর ল্যাপটপ স্ক্রিনের সার্চ বক্সে লিখা ইলিশ মাছে চোখ আটকে গেল।
তার পাশেই টেবিলে রাখা ডায়েরিতে কি যেন গপাগপ নোট করেই যাচ্ছে মিকদাম। একরকম জোর করে ডায়েরিটা হাতে নিলাম। কয়েকপাতা উল্টোতেই দেখতে পেলাম, পুকুরে ইলিশ মাছ চাষ করতে হলে কী কী করতে হবে?
এক. প্রথমেই ইলিশ মাছের জিনোম সিকোয়েন্স বা জীবন রহস্য আবিষ্কার করতে হবে বা আবিষ্কার করে থাকলে তা সংগ্রহ করতে হবে।
দুই. ইলিশ যে ইকোসিস্টেমে বাস করে সেই সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করতে হবে।
তিন. ইলিশ কেন বদ্ধ পানিতে বা পুকুরে বাঁচতে পারে না বা বৃদ্ধি হয়না তার কারণ উদঘাটন ও এর সাথে সংশ্লিষ্ট জিন নির্ণয় করতে হবে।
চার. ইলিশ মাছের খাদ্যাভ্যাস জানতে হবে।
এভাবে আরও কিছু আনুষঙ্গিক প্রশ্ন লেখা আছে। এর পরের পৃষ্ঠা থেকে মিকদামের লিখা কাজগুলোর সমাধান লিখে রাখছে। তার প্রথম দুটি কাজ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য লিখে শেষে ইলিশ মাছের জীবন রহস্য উন্মোচনের জন্য বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য বিজ্ঞানীদের নিকট কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়ে লিখছে, সত্যিই তোমরা দেশ ও জাতির গর্ব। স্যালুট তোমাদের! এখন মিকদাম তার তৃতীয় কাজের সম্ভাব্য কিছু পরিকল্পনা দ্বার করিয়েছে।
আরও পড়ুন: নিজ জন্মভূমিতেই মেসিকে হত্যার হুমকি, স্ত্রীর মার্কেটে গুলি।
প্রথমত, পুকুরে ইলিশের বৃদ্ধির জন্য কোন কোন ফ্যাক্টরগুলো দায়ী সেগুলো নিয়ে ল্যাবে কাজ করতে হবে।
দ্বিতীয়ত, বদ্ধ পানিতে ইলিশের স্বাদের গুণাগুণ অক্ষুণ্ণ রেখে পুকুরে বৃদ্ধি হয় এমন কোনো একটি মাছের বৃদ্ধি জিন ইলিশের দেহে ট্রান্সফার করে চাষ উপযোগী করা যেতে পারে।
তৃতীয়ত, নদীর স্রোতের মতো কৃত্রিম পদ্ধতি যেমন In Pond Raceway System এর মাধ্যমে ইলিশ মাছ চাষ করা যেতে পারে।
ইলিশ চাষের জন্য প্রয়োজনীয় লেখাগুলোর শেষে কয়েকটি বাক্য লেখা যা পড়লে মনে হবে ইলিশের কাছে মিকদাম শপথ নিচ্ছে। ”ইলিশ তোমার স্বাদের গুণাগুণকে অক্ষুণ্ণ রেখেই তোমার দেহে এমন কিছু পুষ্টি উপাদান নিয়ে আসবো, যা তোমাকে সেরাদের সেরা কাতারে নিয়ে যাবে। এর জন্য যেমন স্যামন অধিকতর ওমেগা-৩ পুষ্টি যে জিনটি বহন করে সেই জিনটি তোমার দেহে জিনোম সিকোয়েন্সের মাধ্যমে ট্রান্সফার করে পুষ্টি সেরা করে তুলব।”
লেখক: ফিশারীজ এন্ড মেরীন বায়োসাইন্স বিভাগ , যবিপ্রবি