এক বছরে মেডিকেলের ১২ শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা
২০২১ সালে দেশের মেডিকেল কলেজগুলোর ১২ শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। বেসরকারি সংগঠন আঁচল ফাউন্ডেশনের এক সমীক্ষায় এমন তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া অন্তত ১০১ জন শিক্ষার্থী আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন। আত্মহত্যা করা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীর সংখ্যাই বেশি।
আচঁলের তথ্য মতে, ২০২১ সালে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে মোট ১০১টি। এর মধ্যে ৬২ জন শিক্ষার্থী পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। অর্থাৎ মোট আত্মহত্যার ঘটনার মধ্যে শতকরা ৬১.৩৯ ভাগ শিক্ষার্থীই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের। এ ছাড়া মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২ জন, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ জন এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৩ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করে মারা গেছেন। শিক্ষার্থী আত্মহত্যার ঘটনায় এর পরেই রয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (৬ জন), শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (৫ জন) এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (৪ জন)। পাশাপাশি, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ২৩ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যা করেছে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা (৩ জন)।
আরও পড়ুন: ঢাবি ও জবিতে আত্মহত্যা বেশি
সমীক্ষায় আত্মহত্যার পেছনে যে কারণগুলো উঠে এসেছে সেগুলো হল: সম্পর্কের অবনতি, পারিবারিক জটিলতা, পড়াশোনা নিয়ে হতাশা এবং আর্থিক সংকট। আত্মহত্যার কারণগুলোর মধ্যে বেশ কিছু উদ্বেগজনক তথ্য উঠে এসেছে। এর মধ্যে সম্পর্কের অবনতির কারণে শিক্ষার্থীদের মাঝে সবচেয়ে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে যা শতকরা হিসাবে মোট আত্মহত্যার ২৪.৭৫ ভাগ। তারপরেই পারিবারিক সমস্যার কারণে ১৯.৮০ শতাংশ শিক্ষার্থী আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। মানসিক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে ১৫.৮৪ শতাংশ, পড়াশোনা-সংক্রান্ত কারণে ১০.৮৯ শতাংশ, আর্থিক সমস্যায় ৪.৯৫ শতাংশ, মাদকাসক্ত হয়ে ১.৯৮ শতাংশ এবং অন্যান্য কারণে ২১.৭৮ শতাংশ শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন।
আরও পড়ুন: সব বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয়বার সুযোগ দাবিতে অনশনে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের অধ্যাপক কামাল চৌধুরী বলেন, মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে আমরা উদাসীন। বড় ধরনের ক্ষতি কমাতে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে সমন্বিতভাবে কাজ করা দরকার। প্রতিটি জেলায় আত্মহত্যা সেল গঠন করে জনগণের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে। সমন্বিতভাবে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে এ বিষয়ে দিকনির্দেশনা তৈরি করতে হবে।