পরিত্যক্ত সিনেমা হল এখন ক্যাডেট মাদ্রাসা, শিক্ষার্থী ১২০ জন
একসময়ের ‘লাকী সিনেমা হল’ বর্তমানে 'দারুজান্নাত ক্যাডেট মাদ্রাসা'। দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকা সিনেমা হলটিতে ২০২৯ সাল থেকে ছাত্রদের পড়াশোনার সুযোগ করে দিয়েছেন মাওলানা মোহাম্মদ মকবুল হোসেন নামে এক ব্যক্তি। ঘটনাটি ঘটেছে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কোম্পানিগঞ্জে।
সিনেমা হলটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন প্রয়াত প্রিন্টিং ব্যবসায়ী জুবায়ের আলম। চলচ্চিত্রের দুরবাস্থার কারণে লোকসানের মুখে সিনেমা হলটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরিত্যক্ত অবস্থায় পরে থাকায় মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সিনেমা হলের জায়গায় মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার অনুমতি চান মাওলানা মকবুল হোসেন। মালিকপক্ষ রাজি হলে সেখানে নির্মাণ করা হয় মাদ্রাসাটি। বর্তমানে মাদ্রাসাটির প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মাওলানা মকবুল হোসেন।
আরও পড়ুন: প্রতি জেলায় অন্তত একটি মাদ্রাসা সরকারি হোক।
মাওলানা মকবুল হোসেন বলেন, আসা-যাওয়ার পথে দেখতাম সিনেমা হলটি বন্ধ অবস্থায় আছে। ২০১৯ সালের জুলাই মাসে মালিকের সঙ্গে কথা বলি। তার কাছে পরিত্যক্ত সিনেমা হলটিকে মাদ্রাসায় পরিণত করার অনুমতি চাই। তিনি রাজি হন। ওই বছরের ডিসেম্বরেই আমরা ক্লাস শুরু করি। এখন মাদ্রাসায় ১২০ জন শিক্ষার্থী আছে।
অপরদিকে সিনেমা হল ভেঙে মাদ্রাসা হওয়ায় খুশি স্থানীয়রা। এটি সামাজিকভাবে ভালো প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন তারা। এনায়েত মিয়া নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, যখন সিনেমা হল ছিল, তখন এখানে আমরা আসতাম না। এখন মাদ্রাসা হওয়ায় আসি। এটি সামাজিকভাবে ভালো প্রভাব ফেলবে।
এছাড়া মো. শরিফুল ইসলাম নামে একজন বলেন, সিনেমা হলে আগে অশ্লীল সিনেমা দেখানো হতো। অসামাজিক কাজ হতো। এখন এটাকে মাদ্রাসা করা হয়েছে। এর থেকে আর বেশি চাওয়ার কিছু নেই। আমরা এলাকাবাসীরা অনেক খুশি।
কমছে সিনেমা হলের সংখ্যা
১৯৩৬ সালে পুরান ঢাকার বংশালে প্রতিষ্ঠিত প্রেক্ষাগৃহটি ৮০ বছরের পথচলায় ইতি টানে ২০১৯ সালে। সাইনবোর্ড পাল্টে মানসী কমপ্লেক্স নামে এখন বিপণী বিতান হয়েছে। সিনেমা হল না থাকলেও সেই রাস্তাটি এখনও মানসীর নামের পরিচিত সবার কাছে।
প্রেক্ষাগৃহ মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতি জানিয়েছে, ১৯৯৮ সালে ১২ শ’ ৩৫টির মতো সিনেমা হল ছিল দেশে। দুই যুগের ব্যবধানে হলের সংখ্যা কমতে কমতে এখন ১২০টিতে নেমেছে। করোনাভাইরাসের ধাক্কা সামলে এখন চালু আছে ৬০টির মতো হল।