আলিয়া মাদ্রাসাকে ‘ঢাকা আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়’ করার দাবি
রাজধানীর সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়াকে ‘ঢাকা আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়’ এ রূপান্তর করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে দাবি জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। রবিবার (২৩ জানুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সদস্য সচিব মোহাম্মদ সুরুজুজ্জামান। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন কমিটির আহ্বায়ক অজিজুল হক মুরাদ ও অধ্যক্ষ সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী।
সংবাদ সম্মেলন থেকে সরকারের কাছে ৫ দফা দাবি জানান মাদ্রাসার প্রাক্তন ছাত্র ফোরামের সদস্য সচিব মাওলানা মোহাম্মদ সুরুজুজ্জামান। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন- মাদ্রাসা-ই আলিয়ার প্রাক্তন ছাত্র ফোরামের আহ্বায়ক মাওলানা আজিজুল হক মুরাদ, সদস্য মাওলানা ইসমাইল ফারুক, মাওলানা আমিনুল হক, শহিদুল ইসলাম কবির, মাওলানা আহমদ আব্দুল কাইয়ুম প্রমুখ।
আরও পড়ুন: ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর নিবন্ধন জরুরি: শিক্ষামন্ত্রী
তাদের দাবিগুলো হচ্ছে- সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়া ঢাকার নামে ৪ একর জমি দখলমুক্ত করা, ছাত্রদের আবাসন সংকট নিরসনে কমপক্ষে আরও দুইটি হল নির্মাণ করা, বর্তমান ছাত্রদের নামে হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও ছাত্রাবাস অবিলম্বে খুলে দেওয়া এবং ২৫০ বছরের ইতিহাস ও ঐতিহ্য রক্ষায় সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়া ঢাকাকে ‘ঢাকা আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়’ করা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মোহাম্মদ সুরুজুজ্জামান বলেন, বর্তমান সরকার মাদ্রাসা শিক্ষা ও সাধারণ শিক্ষাব্যবস্থা উন্নয়নে যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত উন্নয়ন করছে। অথচ সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়া ঢাকার ছাত্রাবাসসহ এই ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত উন্নয়নের পরিবর্তে ওই প্রতিষ্ঠানের ভেতর মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা অধিদফতর স্থাপন করার পরিকল্পনা সরকারের বিমুখি আচরণ ও মানবদ্য শিক্ষাকে অবলা করার শামিল। আমলাতান্ত্রিকতার কূটকৌশলে সরকারকে ভুল বার্তা দিয়ে মাদ্রাসা শিক্ষক, ছাত্র তথা সাধারণ ধর্মপ্রাণ জনতার মাঝে একটা ভুলবোঝাবুঝির ও দূরত্ব সৃষ্টির অপকৌশল কিনা তা খতিয়ে দেখার জন্য প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
আরও পড়ুন: প্রতি জেলায় অন্তত একটি মাদ্রাসা সরকারি হোক
সুরুজুজ্জামান বলেন, মাদ্রাসা ও কারিগরী শিক্ষা অধিদফতরের জন্য ভবন আলাদা ও স্বতন্ত্র কোনো স্থানে হতে পারে। সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়ার মতো স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠানের ছাত্রাবাসের প্রাচীরের ভেতর ওই প্রস্তাবিত ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা শুধু অমানবিকই নয়, অনৈতিক। ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় উচ্চ শিক্ষার এ বিদ্যাপিঠকে অবজ্ঞা, অবহেলা ও তিলেতিলে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেওয়ার এক গভীর নীল নকশার অংশ।
তিনি বলেন, সরকারি মাদ্রাসা-ই আলিয়া ঢাকার প্রাক্তন ছাত্র ফোরামের পক্ষ থেকে আমরা এ ধরনের সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সাথে সাথে অবিলম্বে এ ধরনের অযৌক্তিক ও অমানবিক সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি জোরালো আহ্বান জানাচ্ছি।
দাবিগুলো মেনে নেয়ার আহ্বান জানিয়ে সুরুজুজ্জামান আরও বলেন, অন্যথায় সংগত কারণেই ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন বিদ্যাপীঠকে রক্ষা করার জন্য ওই প্রতিষ্ঠানের হাজার হাজার প্রাক্তন ও বর্তমান ছাত্র এদেশের ধর্মপ্রাণ জনতাকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন করতে বাধ্য হবে। মাদ্রাসা-ই-আলিয়া ঢাকার জমি দখল করে অন্য প্রতিষ্ঠান করার উদ্যোগ বাস্তবায়ন করলে দেশের আপামর জনতার হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হবে এবং সরকার ও জনতাকে মুখোমুখি অবস্থায় দাঁড় করিয়ে দেবে, যা সরকারের জন্য সুফল বয়ে আনবে না।