শিশু নির্যাতন বন্ধে কওমি মাদ্রাসা সরকারি নিয়ন্ত্রণে আনার দাবি
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৫ এপ্রিল ২০২১, ১০:৩৫ PM , আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০২১, ১০:৩৫ PM
শিশু ধর্ষণ ও নির্যাতন বন্ধে কওমি মাদ্রাসা সরকারি নিয়ন্ত্রণে আনার দাবি জানিয়েছে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড এবং মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ)। বৃহস্পতিবার মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ) আয়োজিত ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিশু নির্যাতন ও যৌন হয়রানি বন্ধে করণীয়’ শীর্ষক ওয়েবিনারে এই দাবি জানানো হয়।
ওয়েবিনারে বক্তরা বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিশেষ করে কওমি মাদ্রাসায় নজরদারি না থাকার কারণে সেখানে একদিকে যেমন ছাত্রছাত্রীদের ওপর যৌন নির্যাতনসহ অন্য নির্যাতন বৃদ্ধি পাচ্ছে, অপরদিকে অনিয়ন্ত্রিতভাবে প্রতিষ্ঠিত এইসব প্রতিষ্ঠানে কী পড়ানো হচ্ছে, জাতীয় সংগীত বাজানো হচ্ছে কিনা, সরকারি দিবসগুলো পালিত হচ্ছে কিনা এবং সর্বোপরি এখানে পড়াশোনা করে ছাত্রছাত্রীরা কোথায় যাচ্ছে, এসব নিয়েও জাতীয় পর্যায়ে তেমন কোনও আলোচনা নেই।
বক্তরা বলেন, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের নিয়ন্ত্রণে না থাকার কারণে কওমি মাদ্রাসায় ঠিক কী হচ্ছে এবং কীভাবে এখানে নিপীড়ন বন্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করা সম্ভব, তা স্পষ্ট নয়। কওমি মাদ্রাসাসহ অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ঘটে যাওয়া ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নসহ অন্যান্য নির্যাতনের কথা এতদিন ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হলেও এখন সেইসব ঘটনা ক্রমশ সবার সামনে চলে আসছে।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এম এ আউয়াল হাওলাদার বলেন, ‘নিপীড়ন বন্ধে সচেতনতামূলক কার্যক্রম মাঠ পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে। সাধারণ মানুষকে জানাতে হবে কী হচ্ছে এবং কী হতে পারে। আমাদের মানসিকতা ও নৈতিকতার পরিবর্তন ঘটানো খুব জরুরি হয়ে পড়েছে।’
বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের প্রকাশনা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ড. রিয়াদ চৌধুরী বলেন, বেশিরভাগ শিশুধর্ষণের ঘটনা ঘটে কওমি মাদ্রাসায়। সেসব মাদ্রাসা আবাসিক। অন্য জায়গাতেও হচ্ছে। আলিয়া মাদ্রাসায় খুবই কম হয়। পুরুষশিশু নির্যাতনের বিষয়টি আইনে স্পষ্ট হওয়া যেমন দরকার, তার চেয়ে আইনের প্রয়োগ বেশি প্রয়োজন। কেন শিশু নির্যাতনের অভিযোগ করেও আবার বলছে হয়নি, তা জানা দরকার।
সরকারের নিয়ন্ত্রণে না থাকা প্রতিষ্ঠান কওমি মাদ্রাসার বিষয়ে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক কামাল উদ্দিন বলেন, ‘স্বাধীন দেশে এমন প্রতিষ্ঠান থাকা উচিত নয়, যে প্রতিষ্ঠানে জাতীয় সংগীত গাওয়া হবে না। জাতীয় দিবস পালন করবে না, একটি দুর্গের মতো প্রতিষ্ঠান— যেখানে কেউ প্রবেশ করতে পারবে না। কোনও জবাবদিহি থাকবে না— এই ধরনের প্রতিষ্ঠান স্বাধীন দেশে হওয়া উচিত নয়।’