শিক্ষকের ভুলে প্রধানমন্ত্রীর পুরস্কার বঞ্চিত স্কুলছাত্রী মাহফুজা
মেধার স্বীকৃতি স্বরূপ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার কম্পিউটার (ট্যাব) থেকে বঞ্চিত ঢাকার আশুলিয়ার গুমাইল উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের নবম শ্রেণির মেধাবী শিক্ষার্থী মাহফুজা। প্রায় আড়াইশ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে সম্মিলিত মেধা তালিকায় দ্বিতীয় স্থান অর্জনের পরেও প্রধানমন্ত্রীর পুরস্কারের ট্যাব পাচ্ছেন না বিদ্যালয়ের এই শিক্ষার্থী। অথচ একই শ্রেণিতে ১০০ নাম্বার কম পেয়ে পিছিয়ে থাকার পরেও প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উৎসাহব্যঞ্জক ও গৌরবের পুরস্কারের ট্যাব পাচ্ছেন অন্য দু’জন শিক্ষার্থী। প্রতিষ্ঠান প্রধানের ভুলে এমনটি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন স্কুলছাত্রী মাহফুজার বাবা-মা।
রোববার (৭ মে) ঢাকার সাভার উপজেলা প্রশাসন মেধাবীদের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া পুরস্কারের এই ট্যাব বিতরণ করবেন।এদিকে স্কুলছাত্রী মাহফুজা পুরস্কারের জন্য সাভার উপজেলা থেকে আমন্ত্রণপত্র না পেয়ে শনিবার স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি কোন উত্তর দেননি।
স্কুল থেকে বলা হয়েছে নবম শ্রেণিতে যারা বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা এবং মানবিক বিভাগ নিয়েছে তাদের মধ্য থেকেই পুরস্কারের জন্য উপজেলা প্রশাসনে তালিকা পাঠানো হয়েছে। অথচ মেধা পুরস্কারটি দেয়ার কথা ছিল অষ্টম বার্ষিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীর মেধার ক্রমানুসারে।
এ বিষয়ে স্কুলছাত্রী মাহফুজার বাবা সাংবাদিক শাহেদ মতিউর রহমান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, আমার মেয়ে অষ্টম শ্রেণি থেকে বার্ষিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে প্রায় আড়াইশ শিক্ষার্থীর মধ্যে সম্মিলিত মেধা তালিকায় নবম শ্রেণিতে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে।
অথচ একই শ্রেণিতে একই প্রশ্নে বার্ষিক পরীক্ষা দিয়ে আমার মেয়ের চেয়ে প্রায় ১০০ নম্বর কম পাওয়া অপর দু’জন শিক্ষার্থীকে তারা প্রধানমন্ত্রীর উপহারের পুরস্কারের মেধা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে উপজেলা প্রশাসনে তালিকা প্রেরণ করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গুমাইল উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল বারেক মোল্লার স্বেচ্ছাচারিতা ও স্বজনপ্রীতির কারণে মেধাবী শিক্ষার্থী তাদের মেধার মূল্যায়ন থেকে বঞ্চিত বলেও অভিযোগ করেন তারা।
আরও পড়ুন: চলন্ত ট্রেন থেকে ঢাবি শিক্ষার্থীকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিলেন সহযাত্রী
এ বিষয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে গুমাইল উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল বারেক মোল্লা বলেন, অষ্টম শ্রেণি থেকে যারা নবম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছে আমরা তাদের মেধাক্রম বিবেচনা না করে ওই শিক্ষার্থীরা যেহেতু নবম শ্রেণিতে বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা এবং মানবিক এই তিন বিভাগে নতুন করে ভর্তি হয়েছে তাই তাদের ভর্তি রোল অনুযায়ীই উপজেলা প্রশাসনে তালিকা প্রেরণ করেছি।
প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ট্যাবের তালিকা মেধার ভিত্তিতে প্রস্তুতের নির্দেশ থাকলেও তারা সেটা করেননি। তখন তিনি আরও যোগ করেন, আমাদেরকে এভাবেই তালিকা পাঠাতে বলা হয়েছে।
ভর্তির রোল তো মেধাক্রমে হয়নি তাহলে কেন এমনটি করা হয়েছে? —এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যক্ষ বারেক বলেন, আমাদের তিন বিভাগের ছক দেয়া হয়েছে আমরা সেভাবেই ছক অনুযায়ী তালিকা দিয়েছি।
এ বিষয়ে বিদ্যালয় ও কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি অধ্যক্ষ আব্দুল কাদির বলেন, প্রতিষ্ঠান প্রধান হয়তো বিষয়টি সেভাবে বুঝতে পারেননি। আর তালিকার জন্য যেভাবে ছক দেয়া হয়েছে তিনি সেভাবেই তালিকা পাঠিয়েছেন। তবে এটা সত্য এখানে সঠিক মেধার মূল্যায়ন না করেই তালিকা পাঠানো হয়েছে। মাহফুজা যেহেতু সম্মিলিত মেধা তালিকায় দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে কাজেই এই মেধাবী শিক্ষার্থীকে তার মেধার পুরস্কার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।