যেভাবে মেধা শাণিত রাখেন বিল গেটস
- মোহাম্মদ ইয়ামিন
- প্রকাশ: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৫:৪৭ PM , আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮, ১১:৫৪ PM
বার্ষিক মুনাফা অর্জনের দিক থেকে বর্তমান বিশ্বে ৬ষ্ঠ বৃহৎ প্রতিষ্ঠান সফটওয়ার কোম্পানি মাইক্রোসফট। আর এ প্রতিষ্ঠানটির মালিক যিনি, তিনিও বিশ্বের শীর্ষ ধনী। বলছি, বিল গেটস কথা! সত্তরের দশকে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গন্ডি পেরিয়েছেন গত শতাব্দির ব্যবসা সফল এ উদ্যোক্তা। শৈশব, কৈশোর আর যৌবন পেরিয়ে এখন ষাটোর্ধ্ব এ বিজনেস মেগনেট। কিন্তু তিনি কখনো তার পড়াশুনা এবং নতুন কিছু শেখার অভ্যাস ছাড়েন নি। নতুন নতুন কোর্স ও কলেজে অংশগ্রহণের নেশার কারণে নিজেকে “অদ্ভুত এক স্কুল পলাতক” মানুষ বলে মনে করেন তিনি।
গেটস বলেন, আপনি যে সময়টা কোন কিছু নিয়ে কৌতুহলী থাকেন, “বেঁচে থাকার জন্য ওই সময়টার চেয়ে ভাল সময় আর নেই। ছোট্ট বেলায় স্কুলের বাইরে আমি যখন নতুন কিছু জানতে চাইতাম, তখন ওয়ার্ল্ড বুক এনসাইক্লোপিডিয়া খুলে বসা ছাড়া আরো কোন উপায় ছিলনা। কিন্তু এখন নতুন কিছু জানতে হলে, অনলাইন ভিজিট করা ছাড়া ভাল কিছু নেই। ”
বৈশ্বয়িক সংস্কৃতি ও ঘটনা সম্পর্কে নিজের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং নিজেকে প্রশিক্ষিত রাখতে গেটস বেশ কিছু অনলাইন প্রোগ্রাম এবং ভিডিও ব্যবহার করেন। সম্প্রতি এমন চারটি অনলাইন রিসোর্সের কথা জানান গেটস। এগুলো হচ্ছে-
১. খান একাডেমি: বিশ্বের শীর্ষ এ ধনকুবের নিজের জ্ঞান ক্ষুধা মেটানোর জন্য যেসব অনলাইন ভিজিট করেন এগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে-বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত সালমান খানের প্রতিষ্ঠিত খান একাডেমি। প্রতিষ্ঠানটি সব বয়সের ছাত্রছাত্রীদের জন্য দিকনির্দেশনামূলক এবং তথ্য ভিত্তিক শতশত ভিডিও ফিচার সেবা দিচ্ছে। এমনটি কি নাসা, মিউজিয়াম অব মর্ডান আর্ট এবং এমআইটি’র উপর রয়েছে বিশেষ কনটেন্ট। ২০০৬ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়।
২. কোড ডট ওআরজি: প্রযুক্তির প্রসারের সাথে সাথে অনলাইনের দক্ষতা ক্রমেই বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক কোডিং ডট ওআরজি নারী, স্কুল শিশু এবং ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের কম্পিউটার শিক্ষা দিয়ে থাকে। গেটস মনে করেন প্রত্যেকের কোডিং সম্পর্কে জানা উচিত।
৩. দ্যা গ্রেট কোর্সেস: এটি যুক্তরাষ্ট্রের দ্যা টিসিং কোম্পানীর কলেজ পর্যায়ের অডিও এবং ভিডিও ভিত্তিক প্রোগ্রাম। গণিত, মানবিক ও বিজ্ঞানের পাশাপাশি নানা সৃজনশীল বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে প্রতিষ্ঠানটি।
৪. বিগ হিস্ট্রি প্রজেক্ট: মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্কুল ছাত্র-ছাত্রীদের অনলাইনে সামাজিক বিজ্ঞান পাঠদান করে থাকে এ প্রতিষ্ঠানটি। প্রাপ্তবয়স্কদেরও এই সাইটটি থেকে জ্ঞান অর্জনের সুযোগ রয়েছে। বিল গেটস নিজেই এ সাইটটির উপদেষ্টা এবং ভিজিটর।
পড়া-লেখার বিষয়ে বিল গেটস বলেন, “ব্যবসার পরিধি বৃদ্ধির পাশাপাশি জ্ঞানের সীমা বিস্তৃত করার অন্যতম প্রধান কৌশল হচ্ছে অধ্যয়ন।” তিনি প্রতিদিন ১ ঘন্টা বই পড়ার জন্য ব্যয় করেন। আর বছরে শেষ করেন অন্তত ৫০টি বই। দ্যা নিউ ইয়র্ক টাইমসকে গেটস বলেন, ছোট বেলা থেকেই নতুন কিছু শেখার সবচেয়ে সস্তা উপায়ের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বই পড়া। নিজের সফলতার পেছনে প্রধান কৃতিত্ব বলতে গিয়ে বইয়ের প্রতি তাঁর দুর্বলতাকে এগিয়ে রাখেন গেটস।
বিল গেটস বলেন, “যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি নতুন কিছু শিখছেন, ততক্ষণ পর্যন্ত আপনি বুড়ো হচ্ছেন না। বই আমাকে নতুন নতুন বিষয় শেখায় এমনকি কোন জিনিসকে ভিন্ন ভাবে বিচার ও বিশ্লেষণে সহায়তা করে। বিশ্ব সম্পর্কে নতুন কৌতুহল তৈরীতে জ্বালানির ভূমিকা পালন করে পাঠাভ্যাস, যেটা আমাকে আমার ক্যারিয়ার গঠনে সহয়তা করেছে বলে মনে করি।”