কচুরিপানা থেকে কাগজ তৈরি, সম্ভাবনার নতুন দ্বার উন্মোচন

উপাচার্যের সাথে গবেষক দল ও অন্যরা
উপাচার্যের সাথে গবেষক দল ও অন্যরা  © টিডিসি ফটো

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে কচুরিপানা হতে কারুশিল্পের কাগজ প্রস্তুত প্রকল্পের সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (১৬ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু অ্যাকাডেমিক ভবনের জীব বিজ্ঞান স্কুলের ডিন অফিসের কনফারেন্স রুমে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

সভায় সহজলভ্য এই জলজ উদ্ভিদের বহুমাত্রিক ব্যবহারের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরা হয়। এর মাধ্যমে এক নতুন দ্বার উন্মোচন হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সভার প্রধান অতিথির বক্তৃতায় উপাচার্য ড. ফায়েক উজ্জামান বলেন, ‘কচুরিপানা বাংলাদেশের নদী-নালা, খাল-বিলে সহজলভ্য। এটা সাধারণত আগাছা হিসেবে পরিচিত। এটি জন্মালে সেই পুকুরে মাছ বা অন্য কিছুর চাষ বিঘ্নিত হয়। তাই এটাকে একটা ফেলনা বিষয় বা কৃষকের জন্য বোঝা মনে করা হয়। অথচ এই কচুরিপানা থেকে খুব সুন্দর ক্রাফট পেপার তৈরি করেছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। এ বিষয়ে যে প্রকল্প ছিল তা সাফল্যের সঙ্গে সমাপ্ত হয়েছে এবং সেখান থেকে আমরা দেখতে পেয়েছি কচুরিপানা থেকে তৈরি করা কাগজের বহুমাত্রিক সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে গ্রামীণ কুটির শিল্পের জন্য কচুরিপানা থেকে তৈরি ক্রাফট পেপার বহুমাত্রিক ব্যবহারের জন্য ভালো উপকরণ।’

তিনি বলেন, ‘এটাকে কুটির শিল্প পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া এবং তৈরিকৃত বিভিন্ন উপকরণ দেশে ছাড়াও বিদেশে রফতানির সম্ভাবনা নিয়ে ভাবতে হবে।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা এবং জীব বিজ্ঞান স্কুলের ডিন অধ্যাপক ড. মো. রায়হান আলী। সভাপতিত্ব করেন প্রকল্পের প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন রিসোর্স টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. মো. নাজমুল আহসান এবং সঞ্চালনা করেন প্রকল্পের প্রিন্সিপাল কো-ইনভেস্টিগেটর ফরেস্ট্রি অ্যান্ড উড টেকনোলজি ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানটিতে ওয়েবিনারে যোগ দেন ব্লু গোল্ড প্রজেক্টের টিম লিডার গাই জোনস এবং নেদারল্যান্ডসের ওয়াগেনিনজেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ডলফি ডেবরট।

এ সময় একটি ভিডিও ডকুমেন্টারির মাধ্যমে কচুরিপানা থেকে কারুশিল্পের কাগজ প্রস্তুত প্রণালী প্রদর্শন করা হয় এবং প্রস্তুতকৃত কাগজে “কালারস অফ নেচার” শীর্ষক একটি ভার্চুয়াল আর্ট কম্পিটিশনের বিজয়ী ৫ জন শিক্ষার্থীর চিত্রকর্ম প্রদর্শন ও তাদের মধ্যে সনদপত্র বিতরণ করা হয়। বিজয়ী ৫ জন শিক্ষার্থীর নাম ক্রমানুসারে শেখ মোহাম্মদ সুমন, তুলি সাধু, আফরোজা আক্তার মুন্নি, জয় কুমার ভৌমিক ও আয়েশা সিদ্দিকা। আঠারো মাস মেয়াদি প্রকল্পটি আজ শেষ হয়।