পাঞ্জাবি-পায়জামা পরায় ২ শিক্ষককে চাকরিচ্যুতের অভিযোগ, শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
- ডি.এইচ.মান্না
- প্রকাশ: ০৩ এপ্রিল ২০২১, ০৩:৪৯ PM , আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২১, ০৭:৪২ PM
সিলেটের জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজে নিয়মিত ধর্মীয় পোশাক (টুপি, পাঞ্জাবি ও পায়জামা) পরায় মোহাম্মদ আব্দুল হালিম ও মোহাম্মদ মুজাহিদুল ইসলাম নামের দুই প্রভাষককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বলে জানা গেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
এদিকে পাঞ্জাবি পরার অপরাধে দুই শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করার অভিযোগে সিলেট জেলাজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে মানুষ এর প্রতিবাদ জানিয়ে। শনিবার (৩ এপ্রিল) কলেজ গেটে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধনে কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কথা বলেছেন।
গত বছরের ড্রেসকোড নিয়মানুযায়ী জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের বেশ কয়েকজন শিক্ষককে পাঞ্জাবি-টুপির পরিবর্তে শার্ট প্যান্ট পরতে বাধ্য করা হয়েছে বলে কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। সেই আদেশ অমান্য করায় চাকরিচ্যুত হয়েছেন জেসিপিএসসির কলেজ শিক্ষক মোহাম্মদ আব্দুল হালিম ও মোহাম্মদ মুজাহিদুল ইসলাম।
জানা গেছে, কলেজ অধ্যক্ষ নির্দেশ দেন কলেজে পাঞ্জাবি পড়া যাবে না। পরবর্তীতে মিটিং এ সবাইকে এই আদেশ মান্য করতে বলা হলে কলেজ শিক্ষক মোহাম্মদ আবদুল হালিম, মোহাম্মদ মুজাহিদুল ইসলাম, মোহাম্মদ জাহেদুল ইসলাম এবং কবির হোসাইন প্রতিবাদ করেন। নিজের ধর্ম ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে উনারা নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকবেন বলে জানান।
এমতাবস্থায় ম্যাগাজিনের জন্য ছবি তোলার দিন উনারা পাঞ্জাবি পাজামা পরে আসায় প্রিন্সিপাল সোহেল পাঠান উনাদের ছবি উঠতে নিষেধ করেন এবং বাজেভাবে আচরণ করেন। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে প্রিন্সিপাল আদেশ দেন, আদেশ অমান্যকারীরা যাতে স্বেচ্ছায় চাকুরি ছেড়ে দেন নতুবা বরখাস্ত করা হবে। এতে চাকুরির দায়ে মোহাম্মদ কবির হোসাইন ও জাহেদুল ইসলাম ড্রেস কোড মেনে শার্ট প্যান্ট পরতে মেনে নিলেও নিজের অবস্থানে অনড় থাকেন মোহাম্মদ আবদুল হালিম ও মুজাহিদুল ইসলাম।
চাকুরিচ্যুত শিক্ষক মোহাম্মদ আবদুল হালিম জানান উনার চাকরির প্রায় ১২ বছর চলমান এবং পাঞ্জাবি পাজামা টুপির পারমিশন নিয়েই চাকরিতে জয়েন করেছিলেন।
আজ শনিবার (৩ এপ্রিল) প্রতিষ্ঠানের সামনে সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে বিশাল প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় এতে শিক্ষার্থীরা দুই শিক্ষককে পূর্ণ মর্যাদায় স্বপদে ফিরিয়ে বেতন বাতা প্রদানের দাবি জানান। অন্যতায় কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারী দেন বক্তারা।
এ বিষয়ে ছাত্রদের মানববন্ধনের মুখে কলেজ কর্তৃপক্ষ বলছে, আমাদের গভার্নর বডি শিক্ষক-শিক্ষিকার জন্য ড্রেসকোড দিয়েছে। এটা সবাই মানছে শুধু দু’জন ছাড়ার। তাদরে চাকরি করতে হলে নিয়ম ফলো করতে হবে। তাদের অনেক সুযোগ দেয়া হয়েছে। অনেকবার বলা হয়েছে। ওনারা বারবার নির্দেশনা ভঙ্গ করেছে। পাঞ্জাবি ও পায়জামা পরতে না করা হয়নি, শুধুমাত্র ক্লাস নেয়ার সময় শার্ট-প্যান্ট পরতে বলা হয়েছে। তবে ওনাদের চাকরি থেকে বের করে দেয়া হয়নি, কিছুদিন কাজে আসতে না করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ অনুযায়ী ওনাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।