করোনাকালে আইডিয়ালের সাড়ে ১৫ হাজার শিক্ষার্থীর অভিভাবক ক্ষতিগ্রস্থ

আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ
আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ  © ফাইল ফটো

রাজধানীর আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের মতিঝিল, বনশ্রী, মুগদা ৩টি ব্রাঞ্চে ২৬ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির ৬০ শতাংশ (১৫ হাজার ৬০০) শিক্ষার্থীর অভিভাবক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন বলে জানিয়েছে অভিভাবক ফোরাম।

সংগঠনটি বলছে, এদের মধ্যে ৪০ শতাংশ অধিকতর ক্ষতিগ্রস্থ। এরা খারাপ অবস্থায় আছে। তারা অনেকেই বাসা ভাড়া দিতে না পেরে সন্তান ও পরিজনদের নিয়ে গ্রামে চলে গেছেন। আর কারও ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে। কেউ চাকুরি হারিয়েছে। অনেকে আর শহরে ফিরে আসবে না। কারও কারও লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় অধিকতর ক্ষতিগ্রস্থ শিক্ষার্থীদেরকে বিনা বেতনে অথবা অর্ধ বেতনে পড়ার ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটির অভিভাবক ফোরাম।

আজ রবিবার (৪ অক্টোবর) আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অভিভাবক ফোরামের চেয়ারম্যান ফাহিমউদ্দিন আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ রোস্তম আলী স্বাক্ষরিত স্কুলের গভর্নিং বডির সভাপতি ও অধ্যক্ষের নিকট এক পত্রে এ দাবি জানান। স্কুলে আবেদনপত্র রিসিভ করার ব্যবস্থা না থাকায় সভাপতির ই-মেইলে আবেদন পত্র পাঠানো হয়েছে।

এ ব্যাপারে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. শাহান আরা বেগম দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, করোনাকালে শুধু শিক্ষার্থীরা কেন, শিক্ষকরাও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের চাকরি না থাকায় গ্রামে চলে গেছেন।

অভিভাবক ফোরামের এই আবেদনের ব্যাপারে তিনি বলেন, এখনও মেইল চেক করা হয়নি। কালকে দেখা হবে। তবে স্কুলের গভর্নিং বডির সভাপতি এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে তিনি জানান।

পত্রে অভিভাবকদের পক্ষে বলা হয়, করোনা মহামরিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের নিরাপত্তায় সাড়ে ৭ মাস শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। শ্রেণিকক্ষে সরাসরি পাঠদান হচ্ছে না। ততে অনলাইন পাঠদান গ্রহণযোগ্য হচ্ছে না। অনলাইনে পাঠদানে কেবলমাত্র ৩০ শতাংশ শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। শিক্ষকরা অনলাইন পাঠদানে যথাযথ অভিজ্ঞ নয় বিধায় শিক্ষার্থীরা এতে অংশ নিচ্ছে না। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা করোনাকালে অবরুদ্ধ রয়েছে।

‘স্কুলে অধ্যয়নরত ২৬ হাজার  শিক্ষার্থীর ৬০ শতাংশ অভিভাবক ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ৬০ শতাংশ এর মধ্যে ৪০ শতাংষ অধিকতর ক্ষতিগ্রস্ত। এরা খারাপ অবস্থায় আছে। ক্ষতিগ্রস্ত অনেকেই বাসা ভাড়া দিতে না পেরে সন্তান ও পরিজনদের নিয়ে গ্রামে চলে গেছে। কারও ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে। কেউ চাকুরি হারিয়েছে। অনেকে আর শহরে ফিরে আসবে না। কারও কারও লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।’

পত্রে আরও বলা হয়, অবস্থায় ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর টিউশন ফি আদায়ে আপনার নির্দেশে শ্রেণি শিক্ষকগণ বিভিন্নভাবে চাপ দিয়ে আসছে। টিউশন ফি না দিলে নাম কেটে দেয়া, ওপরের শ্রেণিতে না তোলা, অনলাইনে ক্লাশ না করতে দেয়াসহ নানাবিধ ভয়-ভীতি দেখানো হচ্ছে। ৩ মাসের অগ্রীম টিউশন ফি আদায় করা হচ্ছে। কোন বেসরকারি এমপিওভুক্ত স্কুলে অগ্রিম ছাত্র বেতন আদায় করার নিয়ম নেই। এমনকি রাতে-দিনে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের বারে বারে ফোন করে ছাত্র বেতন দিতে তাগিদ দেওয়া হচ্ছে। এটা অমানবিক ও দুঃখজনক।

‘করোনাকালে টিউশন ফি সরকারি নিয়ম অনুযায়ী পুনঃনির্ধারন করা প্রয়োজন। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অসচ্ছল শিক্ষার্থীর জন্য ফুল ফ্রি/ হাফ ফ্রির ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু আইডিয়াল স্কুলে করোনাকালে এ বিষয়ে কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বরং বিভিন্ন কৌশলে টিউশন ফি দিতে বাধ্য করা হচ্ছে।’

পত্রে নেতৃদ্বয় আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে অধ্যয়নরত ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থী করোনাকালে অধিকতর ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় তাদেরকে বিনা বেতনে অথবা অর্ধ বেতনে পড়ার ব্যবস্থা করার দাবি জানান।