কলেজে ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তায় ১৭ লাখ শিক্ষার্থী

  © ফাইল ফটো

করোনার প্রাদুর্ভাবে এসএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশে বিলম্বের কারণে বেশ দুশ্চিন্তায় ছিল শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা। সংকটের মধ্যেই ফল প্রকাশের পর এবার নতুন করে অনিশ্চিয়তা তৈরি হয়েছে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি নিয়ে। এসএসসিতে সদ্য উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়া কবে নাগাদ শুরু হবে, তা বলতে পারছে না আন্তঃশিক্ষা বোর্ডও। তাই এসএসসিতে পাস করেও কলেজে ভর্তি নিয়ে দুশ্চিন্তায় প্রায় ১৭ লাখ শিক্ষার্থী।

প্রতি বছর এই সময়ে কলেজে ভর্তিপ্রক্রিয়া নিয়ে তোড়জোড় শুরু হয়ে যায়। কলেজগুলোও শিক্ষার্থী টানতে নানামুখী প্রচার চালায়। আর শিক্ষার্থীরাও পছন্দের কলেজ বেছে নিতে আগে থেকেই প্রস্তুতি নেয়। এবার সেই আয়োজনের ছিটাফোঁটাও নেই। আন্ত শিক্ষা বোর্ড আগামী ৬ জুন থেকে ভর্তিপ্রক্রিয়া শুরুর পরিকল্পনা নিয়ে রাখলেও করোনার প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে। এখন তারা তাকিয়ে আছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দিকে।

করোনার মধ্যে আগে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাকে গুরুত্ব দেয়ার কথা জানিয়েছেন ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক ড. মো. হারুন-অর-রশিদ। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রথম চিন্তা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা। অনলাইনে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হলেও শিক্ষার্থীদের নানা প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হওয়ার প্রয়োজন পড়তে পারে। তাই এখনই ভর্তি শুরুর দিনক্ষণ বলা যাচ্ছে না।’

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অনলাইনে কলেজে ভর্তির আবেদন শুরু হলেও শিক্ষার্থীরা কম্পিউটারের দোকানে যাবে, কলেজে যাবে। কারণ সব শিক্ষার্থীর পক্ষে বাসায় বসে অনলাইনে আবেদন করা সম্ভব নয়। আবার নানা ভুলভ্রান্তির কারণে বোর্ডেও আসতে হয়। ফলে এই মুহূর্তে ভর্তিপ্রক্রিয়া শুরু হলে সব ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব নয়। এ জন্যই ভর্তিপ্রক্রিয়া থেকে সরে এসেছে বোর্ডগুলো। তবে ১৫ জুনের পর সরকারের সিদ্ধান্তের সঙ্গে মিল রেখে এবং করোনা পরিস্থিতি দেখে একাদশে ভর্তিপ্রক্রিয়া শুরুর ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেবে।

এ বছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ১৬ লাখ ৯০ হাজার ৫২৩ জন শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছে। তারা একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন করতে পারবে। এর মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছে এক লাখ ৩৫ হাজার ৮৯৮ জন। জিপিএ ৫ পেয়েও অনেকে প্রথম সারির শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ পাবে না। অনেকে একাধিকবার আবেদন করেও পছন্দের কলেজে ভর্তি হতে পারবে না। তবে দেশে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি উপযোগী কলেজের সংখ্যা চার হাজার ছয় শর বেশি। আর এতে আসনসংখ্যা প্রায় ২১ লাখ। ফলে আসনের কোনো সংকট নেই। যেহেতু সব শিক্ষার্থী একাদশে ভর্তি হয় না, তাই এবারও সাত লাখের কাছাকাছি আসন খালি থাকবে বলে ধারণা করা যায়।

বাড়ির কাছের কলেজে ও তথ্য প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির পরামর্শ দিয়ে রাজধানীর সামসুল হক খান স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. মো. মাহবুবুর রহমান মোল্লা বলেন, ‘অন্য যেকোনো বছরের চেয়ে এবারের পরিস্থিতি ভিন্ন। তাই শিক্ষার্থীদের কলেজ পছন্দেও ভিন্নতা আনতে হবে। করোনাভাইরাসের কারণে কবে নাগাদ স্বাভাবিক শ্রেণি কার্যক্রম শুরু হবে, তা বলা যাচ্ছে না। তথ্য-প্রযুক্তিতে এগিয়ে এবং অনলাইনে ক্লাস নিতে সক্ষম—এমন কলেজকেই পছন্দের অগ্রভাগে রাখা উচিত শিক্ষার্থীদের।’


সর্বশেষ সংবাদ