অধ্যক্ষ নিয়োগে জটিলতায় বেতন বন্ধ, দুর্বিষহ জীবন শিক্ষক-কর্মচারীদের
- নেত্রকোনা প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭:৫৪ AM , আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭:৫৪ AM

অধ্যক্ষ নিয়োগে জটিলতার কারণে নেত্রকোনার কেন্দুয়া সরকারি কলেজের ৭৮ জন শিক্ষক-কর্মচারী বেতন থেকে বঞ্চিত হয়ে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন। গত দুই মাস ধরে বেতন বন্ধ থাকায় তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে চরম সংকটে পড়তে হয়েছে। আসন্ন রমজান ও ঈদের অতিরিক্ত খরচের কথা ভেবে অনেকেই দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। এতে স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে এবং প্রায় ৬ হাজার শিক্ষার্থীও ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর কলেজের অধ্যক্ষের পদ শূন্য হয়। এরপর ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক মোহাম্মদ আব্দুল মালেক রুটিন মাফিক সাময়িক দায়িত্ব পালন করছেন। অধ্যক্ষের পদ পূরণে ৭ জনের নাম প্রস্তাব করা হলেও এখন পর্যন্ত মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর এ বিষয়ে কোনো স্থায়ী সমাধান করতে পারেনি। ফলে বেতন-ভাতা বন্ধ থাকায় শিক্ষক-কর্মচারীরা অসহনীয় পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছেন।
এ বিষয়ে রুটিন দায়িত্বে থাকা অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আব্দুল মালেক বলেন, আমরা চাই দ্রুত সময়ের মধ্যে কলেজের স্বাভাবিক কার্যক্রম ফিরিয়ে আনতে অধ্যক্ষের শূন্য পদটি পূরণ করা হোক। এক্ষেত্রে ডিজি মহোদয়ের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
এদিকে প্রভাষক স্বপন কুমার বণিক, মোঃ শওকত আলী, মোঃ আব্দুল হাই, পলাশ রঞ্জন কর, মোহাম্মদ মোতাসিম বিল্লাহ, মোহাম্মদ মাহফুজুল হক ভূঞাসহ আরও অনেকেই বেতন বন্ধ থাকায় চরম কষ্টে দিন কাটানোর কথা জানান।
প্রধান অফিস সহকারী এনামুল হক বলেন, একজন আয়ন-ব্যয়ন কর্মকর্তা না থাকায় আমাদের বেতন বন্ধ রয়েছে। আমরা কঠিন সমস্যায় আছি, দ্রুত অধ্যক্ষ নিয়োগের দাবি জানাচ্ছি।
ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক মোঃ আনিছুর রহমান বলেন, গত মাসে প্রায় ১ লাখ টাকা ঋণ করেছি। পরিবারের খরচ চালানো কঠিন হয়ে গেছে। সামনে রোজা ও ঈদ, কীভাবে চলবো, আল্লাহ জানেন।
ব্যবস্থাপনা বিভাগের আরেক প্রভাষক আহম্মদ আব্দুল্লাহ হারুন ভরা কণ্ঠে বলেন, শিক্ষকতা হচ্ছে মহান পেশা। মাস শেষে বেতনের টাকা দিয়ে বাচ্চাদের পড়াশোনা ও সংসারের খরচ চালাতে হিমশিম খেতে হয়। এর মধ্যে আবার বেতন বন্ধ। স্বাভাবিক জীবন যাপনে আমাদের সবার ছন্দ পতন হচ্ছে। তাছাড়া শিক্ষার্থীদের ফর্ম ফিল আপ ও ভর্তির টাকা ডিডি কেটে ব্যাংকে জমা দিতে হয় এবং প্রয়োজনে টাকা উত্তোলনও করতে হয়। কিন্তু এর কিছু করা যাচ্ছে না। তাই যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে শূন্য পদটি পূরণের আশু দাবি জানাই।
এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, এটি মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন। আশা করি, দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।