শিক্ষকদের পদত্যাগের দাবিতে রাবি শেখ রাসেল মডেল স্কুলে তালা

রাবি শেখ রাসেল মডেল স্কুলের ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি
রাবি শেখ রাসেল মডেল স্কুলের ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি  © টিডিসি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল মডেল স্কুলে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন না হওয়ায় গেটে তালা দিয়ে স্কুলের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা স্কুল প্রশাসনের পদত্যাগের দাবি করে।

মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) সকাল ৯টায় এ ঘটনা ঘটে।

শিক্ষার্থীরা বলছে, ‘আমরা এককালীন ৫ হাজার ও এক মাসের বেতন ২ হাজার টাকা দিয়ে স্কুলে ভর্তি হই। কিন্তু ভর্তির পর থেকে তিন মাস অতিবাহিত হলেও আমাদের কোনো ক্লাস নেওয়া হয়নি। এ ছাড়া সময় শেষ হয়ে গেলেও স্কুল প্রশাসন আমাদের রেজিস্ট্রেশন করাতে ব্যর্থ হয়েছে। তাদের প্রশাসনে থাকার যোগ্যতা নেই। অতি দ্রুত এই প্রশাসনের পদত্যাগ করতে হবে এবং আমাদের রেজিস্ট্রেশন দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে। তা না হলে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।’

বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুল সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো শাখা খুলতে হলে প্রথমে ম্যানেজিং কমিটি, এরপর শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, বোর্ড অব গভর্নর এবং সর্বশেষে সিন্ডিকেটের অনুমোদন প্রয়োজন হয়। কিন্তু শেখ রাসেল মডেল স্কুল ম্যানেজিং কমিটি তা না মেনে শুধু বোর্ডের অনুমতি নিয়ে গত ২৭ জুলাই ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ভর্তি বিজ্ঞপ্তি দেয়। ভর্তি প্রক্রিয়া শেষে ৩০ জুলাই থেকে শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরুর কথা থাকলেও তিন মাস ধরে ক্লাস বন্ধ রয়েছে। তবে কলেজ সেকশনে তাদের কোনো শিক্ষক নেই। এ ছাড়া ১০০ শিক্ষার্থী ভর্তি করানোর পর তাদের রেজিস্ট্রেশনের সময়ও ইতোমধ্যে শেষ হয়ে যায়।

আরও পড়ুন: শহীদ আবরার ফাহাদ জুলাই বিপ্লবের ভিত্তি স্থাপনকারী: রাবি শিবির সভাপতি

অবস্থান কর্মসূচিতে রাকিব নামের এক শিক্ষার্থী বলে, ‘আমরা সুষ্ঠুভাবে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করেছিলাম। কিন্তু হঠাৎই বলা হলো আমাদের রেজিস্ট্রেশন হবে না, প্রতিষ্ঠান আমাদের রাখবে না। আমরা বোর্ডে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তারা বলছে, শিক্ষকরা চাইলেই আমাদের রেজিস্ট্রেশন করাতে পারেন। কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না।’

আরেক শিক্ষার্থী জানান, ‘আমাদের ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা নেই। এত দিন অপেক্ষা করেও কোনো সুফলও পাচ্ছি না। আমরা সাত হাজার টাকা দিয়ে ভর্তি কার্যক্রম শেষ করি। সে টাকারও কোনো হদিস নেই। আমাদের দাবি, দ্রুত রেজিস্ট্রেশন করে ক্লাস শুরু করার এবং আক্তার বানু ম্যামের পদত্যাগ চাই।’

এ সময় এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন, ‘ছেলে-মেয়েরগুলার একটা বছর নষ্ট করার কোনো মানে হয় না। ভর্তি নেওয়ার পর যখন রেজিস্ট্রেশনের সময় ছিল তখন কেন তাদের অন্য কলেজে ট্রান্সফার করা হলো না? ক্লাস টেনের শিক্ষার্থীদের যদি অন্য স্কুলে ট্রান্সফার করা যায়, তাহলে এদের কেন যাবে না? ১০০ জন শিক্ষার্থীর জীবন থেকে একটা বছর করে নষ্ট করা, এর দায়িত্ব কে নেবে? দায়িত্ব নিতে না পারে তাহলে তাদের পদত্যাগ করতে হবে এবং সব শিক্ষার্থীর দায়িত্ব ভিসি স্যারকে নিতে হবে।’

আরও পড়ুন: এবার জানা গেল রাবি শিবির সভাপতির পরিচয়

এ বিষয়ে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ড. সায়েদা দিলরুবা বলেন, ‘এখানে আমার হাতে কিছু নেই। এটি ইনস্টিটিউট, উচ্চপর্যায়ের বিষয়। গতকালও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমরা বসেছিলাম, রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া আর ট্রান্সফারের বিষয়ে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।’

সার্বিক বিষয়ে জানতে স্কুলের পরিচালক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. আক্তার বানুকে কল দিলে তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান।


সর্বশেষ সংবাদ