সকালে পরীক্ষা, এইচএসসিতে বসার দাবিতে রাতে ৩২ শিক্ষার্থীর অবস্থান

পরীক্ষা দেওয়ার দাবিতে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা
পরীক্ষা দেওয়ার দাবিতে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা  © ফাইল ছবি

এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ না দেওয়াতে কলেজ ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়েছে সিলেটের দুই কলেজের ৩২ জন শিক্ষার্থী। তারা সবাই সিলেট সরকারি কলেজ ও ক্লাসিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী। 

বুধবার (১৬ আগস্ট) রাতে পরীক্ষা দেওয়ার দাবিতে রাস্তায় নামে এসব শিক্ষার্থীরা। কলেজ ক্যাম্পাসের সামনে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করে তারা।  

ক্লাসিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রিন্সিপাল প্রবেশপত্র দেননি বলে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ। আন্দোলনকারীরা জানায়, স্কলার্সহোম কলেজ থেকে ফেল করা শিক্ষার্থীরা টিসি নিয়ে এসে এই কলেজে ভর্তি হয়ে পরীক্ষা দিচ্ছে।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ক্লাসিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রিন্সিপাল তাদেরকে প্রবেশপত্র দেননি। প্রবেশপত্রের বিনিময়ে কলেজ অধ্যক্ষ টাকা চেয়েছেন বলেও অভিযোগ তাদের। টাকা না দেওয়াতেই পরীক্ষায় অংশ নিতে প্রবেশপত্র পাননি এই কলেজের ১২ জন পরীক্ষার্থী।

আরও পড়ুনঃ এইচএসসির প্রথমদিনে অনুপস্থিত ৫৫২২ পরীক্ষার্থী, বহিষ্কার ৪

আন্দোলনকারী এক শিক্ষার্থী বলেন, তার খালাতো ভাই পরীক্ষার্থী ছিল। কিন্তু প্রবেশপত্রের জন্য ওই শিক্ষার্থীর অভিভাবককে কয়েকদিন আনা নেওয়া করিয়ে কলেজ অধ্যক্ষ ফিরিয়ে দিয়েছেন।

এদিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা যাতে বিশৃঙ্খলা করতে না পারে এজন্য শাহপরান থানা পুলিশ এবং সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ রাতেই ঘটনাস্থলে যান। অধ্যক্ষের সঙ্গে আলোচনার আশ্বাস দিয়ে তারা শিক্ষার্থীদের ঘটনাস্থল থেকে বিদায় করেন।    

এই বিষয়ে ক্লাসিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রিন্সিপাল অধ্যক্ষ লাবিবুর রহমান বলেন, বিভিন্ন সময় ক্লাসে অনিয়মিত ছিল কলেজের ১০/১২ জন শিক্ষার্থী। সারা বছর তারা ক্লাস করেনি। এরমধ্যে অনেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে খাতায় প্রশ্ন তুলে দিয়ে যায়। এরপরও মডেল টেস্ট নিলে সেখানেও তারা ফেল করে। এ অবস্থায় ৬/৭ বিষয়ে ফেল শিক্ষার্থীদের কীভাবে পরীক্ষা দিতে দেব? 

এছাড়া টাকা নেওয়াসহ কোন অভিযোগই কেউ প্রমাণ করতে পারবে না বলে জানিয়েছেন কলেজের অধ্যক্ষ। তিনি বলেন, সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকও আমার সঙ্গে বসেছেন। এখানে কার দোষ তিনিও দেখবেন। তারা আবারও প্রস্তুতি নিলে অনিয়মিত হিসেবে তাদের পৃথক ক্লাস করানো হবে বলে জানান তিনি।

টাকা নিয়ে প্রবেশপত্র দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, একটি অভিযোগও প্রমাণ করতে পারবে না। আজ বৃহস্পতিবার সকালে সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ তাদের নিয়ে আমার সঙ্গে বসেছিলেন। তিনিও দেখেছেন, দোষটা আসলে কার। এরপরও বলেছি, তারা আবারও প্রস্তুতি নিলে নতুনদের সঙ্গে নয়, অনিয়মিত হিসেবে তাদের পৃথক ক্লাস করাব।

এদিকে সিলেট সরকারি কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী প্রবেশপত্রের জন্য বুধবার সিলেট বোর্ডে যায়। পরীক্ষার সময়ে এসে এসব শিক্ষার্থী জানতে পারে একাদশে তাদের ভর্তিই কার্যকর হয়নি।

এসব শিক্ষার্থীর একজন বলেন, সাদিক নামে এক কর্মচারির মাধ্যমে সিলেট সরকারি কলেজে এইচএসসিতে ম্যানুয়ালি ভর্তি হয়েছিলেন এই শিক্ষার্থী। ১ম বর্ষের পরীক্ষায়ও অংশে নিয়েছি। 

কিন্তু ফাইনাল পরীক্ষায় এসে ভর্তি কার্যকর হয়নি বলে জেনেছেন তারা কয়েকজন। যে কারণে বোর্ড থেকে তাদের পরীক্ষার প্রবেশপত্র ইস্যু হয়নি। এই কলেজের  ২০ জন শিক্ষার্থীর একই অবস্থা। এ বিষয় নিয়ে তারা বোর্ডের শরণাপন্ন হয়েছেন।  

প্রবেশপত্র না পেয়ে পরীক্ষা দিতে না পারার কোনো অভিযোগ পাননি বলে জানিয়েছেন সিলেট সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর এ জেড এম মাইনুল হোসাইন। তিনি বলেন, এখন তো সব অনলাইনে ভর্তি। কেউ অন্যভাবে প্রভাবিত হয়ে প্রতারিত হলে দায় কলেজ কর্তৃপক্ষের নয়।  


সর্বশেষ সংবাদ