চীনে আটকেপড়া বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর স্ট্যাটাস

  © সংগৃহীত

সময়ের আতঙ্ক করোনাভাইরাসের কারণে আঁতুড়ঘর হুবেইপ্রদেশের রাজধানী উহানে ১৭২ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী আটকা পড়েছেন।বৃহস্পতিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন দাবি করে স্ট্যাটাস দিয়েছেন সেখানে অবস্থানরত দ্বীন মুহাম্মদ প্রিয় নামে এক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী।

স্ট্যাটাসে আটকেপড়া অবস্থায় তাদের সংকটাপন্ন জীবনের কথা জানিয়ে দ্রুত দেশে ফিরিয়ে নিতে সরকারের কাছে আকুতি জানান তিনি। দ্বীন মুহাম্মদ প্রিয় ইচাংয়ের চায়না থ্রি গর্জেস বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাবিজ্ঞানে পড়াশোনা করছেন। তিনি হুবেইপ্রদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক।

স্ট্যাটাসে তিনি লিখেন, ‘আমরা ১৭২ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী আটকা পড়েছি। হুবেইপ্রদেশের ইচাং শহরে আছি। করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল উহান ও ইচাং একই প্রদেশে। এখানে আমাদের ট্রেন স্টেশন এবং বিমানবন্দর বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আমাদের ডরমিটরিতে পানি শেষ। সব দোকান বন্ধ। আমরা খবুই আতঙ্কের মধ্যে বসবাস করছি। আমাদের এখান থেকে বের হওয়ার কোনো রাস্তা নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন– আমাদের দেশে নিয়ে যাবেন। দয়া করে উহানের পাশাপাশি আমাদের ইচাংয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে যাওয়া হোক। আমাদের ইচাংয়ে বিমানবন্দর আছে। বাংলাদেশ সরকার এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতি আকুল আবেদন করছি– এখান থেকে আমাদের উদ্ধার করুন।’

স্ট্যাটাসের নিচে দ্বীন মুহাম্মদ লেখেন– ‘আমাদের সবাইকে খুব ভালোভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তার পর দেশে নিয়ে যাওয়া হোক। আমাদের কারও জন্য এই ভাইরাস বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়ুক তা আমরা কেউই চাই না।’

স্ট্যাটাসটি দিয়ে দ্বীন মুহাম্মদ তার বিশ্ববিদ্যালয় ও ইচাং শহরের কয়েকটি ছবি পোস্ট করেছেন, যেখানে রাস্তা, পার্ক ও ইমারত দেখা গেলেও একজন মানুষেরও দেখা মেলেনি।

সেখানে অবস্থানরত সাকিব এ চৌধুরী নামে আরেক বাংলাদেশি শিক্ষার্থী জানান, হুবেইয়ের উহানে ভাইরাসটি প্রথম সংক্রমণ ঘটায় প্রদেশটিকে অন্যসব প্রদেশ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা করে রেখেছে চীন। ফলে সড়ক, রেল, নৌ এবং আকাশপথের সব যানবাহন বন্ধ রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘কাছাকাছি শহর হওয়ায় উহানের পরেই সব থেকে বেশি মানবিক বিপর্যয় নেমে এসেছে ইচাংয়ে। আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলছে এই শহরে। ফলে এখানে বসবাসরত ১৭২ বাংলাদেশির আতঙ্কে ঘুম আসছে না। এদিকে যে পরিমাণ খাবার রয়েছে তা দিয়ে এক সপ্তাহ চলবে। এর পর কি হবে তা জানা নেই কারও।’

সাকিব ছাড়াও আটকেপড়া একাধিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চরম খাবার সংকটে ভুগছেন তারা। তার সঙ্গে নতুন করে যোগ হয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট। এমন অবস্থা চলতে থাকলে ভাইরাসে অক্রান্ত না হয়েও মারা পড়বেন তারা।

করোনাভাইরাস নিয়ে ওই শিক্ষার্থীদের এমন আতঙ্কের মধ্যে জানা গেছে, আজ চীন থেকে ফিরছেন ৩৪১ বাংলাদেশি। তাদের মধ্যে রয়েছে ১২টি পরিবার ও ১৪ জন শিশু।

শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে চীন থেকে বাংলাদেশিদের বহনকারী ফ্লাইটটি ঢাকার উদ্দেশে ছাড়বে। ফ্লাইটটি রাজধানীর হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবে রাত ১২টার কিছু সময় পর।


সর্বশেষ সংবাদ