০৬ আগস্ট ২০২৫, ১৫:৩০

সাপে কাটা: দেশের সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত এলাকা কোনটি?

প্রতীকী ছবি   © সংগৃহীত

বাংলাদেশে সাপের কামড়ে মৃত্যুর হার আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। সাপের কামড়ের ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটছে বরিশাল অঞ্চলে। তবে মৃত্যুহার বেশি ফরিদপুর ও রাজশাহী অঞ্চলে, যেখানে বিষধর সাপের উপস্থিতি অনেক বেশি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে সাপের কামড়ে আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছেন ২৪ হাজার ৪৩২ জন, যাদের মধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন ১১৮ জন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অধিকাংশ মৃত্যুই সময়মতো আধুনিক চিকিৎসা না পাওয়ার কারণে ঘটছে।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সাপের কামড়ের ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটছে বরিশাল বিভাগে। তবে মৃত্যুহার তুলনামূলকভাবে বেশি ফরিদপুর ও রাজশাহী অঞ্চলে, যেখানে বিষধর সাপের উপস্থিতি অনেক বেশি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ২০২১ সালের তথ্য আরও ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরে। ওই বছর প্রায় ৪ লাখ মানুষ সাপের ছোবলের শিকার হন, যার মধ্যে প্রায় ৯৬ হাজার ৫০০ জন বিষধর সাপের কামড় খেয়েছিলেন। এই বছরেই বিষধর সাপের কামড়ে প্রায় সাড়ে সাত হাজার মানুষ প্রাণ হারান।

আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রে বিমান বিধ্বস্তে সকল আরোহী নিহত

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাপে কাটা রোগীদের অন্তত ৯০ শতাংশকে সময়মতো সঠিক চিকিৎসা দিলে বাঁচানো সম্ভব হতো। কিন্তু বাস্তব চিত্র হলো, আক্রান্তদের অধিকাংশকেই প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় ওঝা বা বৈদ্যদের কাছে। এতে চিকিৎসা শুরু হতে বিলম্ব হয় এবং মৃত্যুর ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়।

বাংলাদেশে সাপের কামড়ের ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটে বর্ষাকালে—বিশেষ করে জুন, জুলাই ও আগস্ট মাসে। এই সময়ে পানি ও গাছপালার উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় সাপ মানুষের কাছাকাছি চলে আসে। এছাড়া অক্টোবর মাসে সাপের প্রজনন মৌসুম হওয়ায় কামড়ের ঘটনা আরও বেড়ে যায়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই নীরব সংকট মোকাবেলায় প্রয়োজন সাপে কাটার বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি, অ্যান্টিভেনমের সহজলভ্যতা নিশ্চিতকরণ, ওঝা বা ঝাড়ফুঁকের পরিবর্তে বৈজ্ঞানিক চিকিৎসার প্রতি আস্থা গড়ে তোলা এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলে জরুরি চিকিৎসা সেবা পৌঁছে দেওয়া।