০৫ আগস্ট ২০২৫, ১২:৫৮

শরীরে প্রবেশ করেই যে ভাইরাস তৈরি করছে ডিমেনশিয়া, কমে যাচ্ছে স্মৃতিশক্তি

প্রতীকী ছবি  © সংগৃহীত

বর্তমানে বিশ্বব্যাপী প্রায় ৫ কোটি মানুষ ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত। প্রতি বছর প্রায় ১ কোটি মানুষ নতুন করে এই রোগের মুখোমুখী হচ্ছে। ডিমেনশিয়া একটি অবস্থা যা স্মৃতিশক্তি, ভাষা, সমস্যা সমাধান এবং অন্যান্য মানসিক ক্ষমতা হ্রাসের কারণ হয়। সাম্প্রতিক একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, সাধারণ কিছু ভাইরাস সংক্রমণ, বিশেষ করে হের্পিস সিমপ্লেক্স ভাইরাস (HSV-1) এবং ভেরিসেলা জোস্টার ভাইরাস (VZV), ভবিষ্যতে স্মৃতিভ্রষ্টতা বা ডিমেনশিয়া রোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। এই ভাইরাস দুটি যথাক্রমে ঠোঁটে ফোসকা (ঠাণ্ডা লেগে হওয়া ঘা) এবং চিকেনপক্স ও শিঙ্গেলসের জন্য দায়ী। (খবর মেডস্কেপ)

বিখ্যাত গবেষক ড. রুথ ইতঝাকি, যিনি এই বিষয়ে অনেক বছর ধরে গবেষণা করছেন, তিনি বলেন, ‘অনেক তথ্য-প্রমাণই দেখাচ্ছে যে, এই ভাইরাসগুলোর সঙ্গে আলঝেইমার রোগের সরাসরি সংযোগ থাকতে পারে। এটা শুধু অনুমান নয়, এখন এটাকে একটি গুরুতর কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।’

এই ভাইরাসগুলো শরীরে একবার প্রবেশ করলে স্নায়ুতন্ত্রে চুপচাপ অবস্থান করতে পারে এবং বয়স বাড়লে পুনরায় সক্রিয় হতে পারে। প্রতিবার সক্রিয় হওয়ার সময় মস্তিষ্কে ক্ষতি করে, যা ধীরে ধীরে স্মৃতিশক্তি হ্রাসে পরিণত হতে পারে।

আরও পড়ুন: ৫ আগস্ট : হাসিনার পতনের দিন যা ঘটেছিল

নিউরোলজিস্ট ও গবেষক ড. শাহীন লাখান বলেন: ‘এই ভাইরাসগুলো আমাদের চোখে পড়ে না, কিন্তু স্নায়ুতন্ত্রে থেকে থেকে মাঝে মাঝে আক্রমণ করে মস্তিষ্কে ধ্বংস ডেকে আনে। এভাবে ধীরে ধীরে  চিন্তাশক্তির ক্ষয় ঘটে।’

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি এই ভাইরাসগুলোর সংক্রমণ প্রতিরোধ করা যায়, কিংবা আক্রান্ত হলে সঠিক ও দ্রুত চিকিৎসা দেওয়া যায়, তাহলে ভবিষ্যতে ডিমেনশিয়ার মতো মরণব্যাধি রোধে সহায়তা করা সম্ভব হতে পারে।

হের্পিস ভাইরাসে আক্রান্ত হলে পরবর্তীতে ডিমেনশিয়া হওয়ার ঝুঁকি বাড়তে পারে। তবে প্রতিরোধ ও সঠিক চিকিৎসা এই ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে।

ভবিষ্যতের চিকিৎসায় শুধুমাত্র স্মৃতিভ্রষ্টতা নিরাময় নয়, এর মূল কারণগুলো প্রতিরোধের দিকেও নজর দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষজ্ঞরা এ রোগ প্রতিরোধে যে পরামর্শ দিয়েছেন তা হলো- ব্যায়াম করা, ধূমপান বন্ধ করা, ভিটামিন ট্যাবলেট, ভালো খাবার খাওয়া, অতিরিক্ত মদ্যপান বন্ধ করা, ব্রেন ট্রেনিং করা, শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা, উচ্চ রক্তচাপ সম্পর্কে সতর্ক থাকা, ডায়াবেটিস হলে চিকিৎসা নেওয়া, রক্তে কোলেস্টরেল-এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা।