০২ নভেম্বর ২০২৫, ২৩:৩৭

৫ ধরনের মানুষ চিয়া সিডস খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক হওয়া উচিত

চিয়া সিডস খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক উচিত  © সংগৃহীত

চিয়া সিডস উচ্চমাত্রার ফাইবারসমৃদ্ধ, এটি হজমশক্তি উন্নত করতে এবং নিয়মিত মলত্যাগে সহায়তা করে। এতে রয়েছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও শক্তিবর্ধক উপাদান। এটি দীর্ঘসময় পেট ভরা রাখতে ভূমিকা রাখে। খালি পেটে গ্রহণ করলে এটি হজম প্রক্রিয়া ও মেটাবলিজম বাড়াতে সহায়তা করে।

তবে সবাইয়ের জন্য চিয়া সিডস নির্দ্বিধায় গ্রহণ করা উপযোগী নয়। ভারতের বেঙ্গালুরুর ফোর্টিস হাসপাতালের পরামর্শক গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিস্ট ডা. প্রণব হোন্নাভারা শ্রীনিবাসন জানিয়েছেন, পাঁচ ধরনের মানুষ চিয়া সিডস গ্রহণে সতর্ক থাকবেন।

ডা. শ্রীনিবাসনের মতে, ‘চিয়া সিডস উচ্চ ফাইবারসমৃদ্ধ হওয়ায় যাদের গ্যাস, পেট ফাঁপা বা হজমজনিত সমস্যা আছে, তারা বেশি পরিমাণে বা খালি পেটে খেলে অস্বস্তি অনুভব করতে পারেন। তিনি জানান, ধীরে ধীরে অল্প পরিমাণে শুরু করা এবং শরীরের প্রতিক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করা উচিত।’

আরও পড়ুন: স্বামী-স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ একই হলে কী হতে পারে 

তিনি উল্লেখ করেন, ‘চিয়া সিডসে প্রাকৃতিকভাবে থাকে আলফা লিনোলিক অ্যাসিড ও পটাশিয়াম, যা রক্তচাপ কমাতে পারে এবং ফলে মাথা ঘোরা বা দুর্বলতা অনুভূত হতে পারে। এছাড়া চিয়া সিডসে থাকা অতিরিক্ত ওমেগা-৩ রক্তক্ষরণের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। পাশাপাশি সামান্য অ্যালার্জি বা ক্রস রিঅ্যাকশনের সম্ভাবনাও থাকতে পারে; ত্বক লাল হওয়া, চুলকানি বা শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।’

কিডনির সমস্যা থাকলেও চিয়া সিডস খাওয়ায় সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। কারণ এতে থাকা ফসফরাস ও পটাশিয়াম কিডনি রোগীদের জন্য বেশি পরিমাণে ক্ষতিকর হতে পারে। সাধারণত ১-২ চা-চামচই যথেষ্ট বলে বিশেষজ্ঞ মন্তব্য করেন। যেহেতু চিয়া সিডস পানিশোষী, তাই পর্যাপ্ত পানি পান করা জরুরি, অন্যথায় হজম সমস্যা দেখা দিতে পারে।

ডা. শ্রীনিবাসন ব্যাখ্যা করেন, ‘সালভিয়া হিসপানিকা উদ্ভিদজাত চিয়া সিডসের শক্তিশালী হাইড্রোফিলিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা এর বাইরে থাকা দ্রাব্য ফাইবার স্তরের কারণে তৈরি হয়। পানিতে ভিজলে এটি নিজেদের ওজনের ১০-১২ গুণ পর্যন্ত পানি শোষণ করে জেলি জাতীয় স্তর তৈরি করে। মিউসিলেজ নামের প্রাকৃতিক পলিস্যাকারাইডের কারণে এই ঘনত্ব তৈরি হয়, যা হজম প্রক্রিয়া ও গতিশীলতা বাড়াতে ভূমিকা রাখে।’

তিনি বলেন, ‘মিউসিলেজ মূলত বীজের এপিডার্মিসে থাকে এবং পানি শোষণের পর ঘন জেল তৈরি করে। পানির অণু ও পলিস্যাকারাইডের হাইড্রোফিলিক গ্রুপের সংঘর্ষে এই স্ফীতি ও ঘনত্ব বৃদ্ধি পায়।’

বিশেষজ্ঞের পরামর্শ, প্রথমে দৈনিক এক চা-চামচ দিয়ে শুরু করে ধীরে ধীরে বাড়ানো উচিত, যাতে দেহ মানিয়ে নিতে পারে। তিনি আরও বলেন, ‘তোমার শরীরের কথা শুনো। অস্বস্তি বা গিলে খেতে সমস্যা হলে সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ করে চিকিৎসকের পরামর্শ নাও।’

ডিসক্লেইমার: এই প্রতিবেদনটি জনসমাগমে থাকা তথ্য ও বিশেষজ্ঞের মতামতের ভিত্তিতে প্রস্তুত। কোনো খাদ্যাভ্যাস শুরু করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

তথ্য সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস