দেশের যেসব জেলা করোনায় সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ
করোনাভাইরাস সংক্রমণের দিক থেকে সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে দেশের উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি জেলা। রবিবার (৩০ জানুয়ারি) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের থেকে এ তথ্য জানা যায়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে রোগী শনাক্ত হয় ১২ হাজার ১৮৩ জন। ২৪ জানুয়ারি থেকে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশে মোট রোগী শনাক্ত হয়েছে ১ লাখ ১৯৬ জন। সোমবার পর্যন্ত দেশে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭ লাখ ৯৮ হাজার ৮৩৩ জনে।
রংপুর বিভাগের কয়েকটি জেলায় রোগী শনাক্তের হার ৫০ শতাংশের বেশি। অর্থাৎ প্রায় দুজনের নমুনা পরীক্ষায় একজন রোগী শনাক্ত হয়েছেন। রোগী শনাক্তের হার বিবেচনায় সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জেলা ঠাকুরগাঁও। এই জেলায় শনাক্তের হার ৬৭ শতাংশ। এছাড়া রংপুরে নতুন রোগী শনাক্তের হার ৬২ শতাংশ, দিনাজপুরে ৫০ শতাংশ ও পঞ্চগড়ে ৫৪ শতাংশ।
আরও পড়ুন: সস্ত্রীক করোনায় আক্রান্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী
রোগী শনাক্তের দিক থেকে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জেলার মধ্যে আরও রয়েছে রাজশাহী (৬২%), নওগাঁ (৫২%), বাগেরহাট (৫৪%), দিনাজপুর (৫০%) গাজীপুর (৫৭%), রাজবাড়ী (৫০%) ও বান্দরবান (৫০%)।
নাটোর, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, গাইবান্ধা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, মেহেরপুর, রাঙ্গামাটি, শরীয়তপুর, চাঁদপুর, বরিশাল, পিরোজপুর, বরগুনা, সুনামগঞ্জ, ঝালকাঠি, এবং হবিগঞ্জে ৪০ শতাংশের ওপরে নতুন রোগী শনাক্ত হচ্ছে।
দেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল ২০২০ সালের ৮ মার্চ। প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ওই বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সেই বছর সর্বোচ্চ মৃত্যু হয়েছিল ৬৪ জনের। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ায় গত বছর জুন থেকে রোগীর সংখ্যা হু-হু করে বাড়তে থাকে। ২৮ জুলাই একদিনে সর্বোচ্চ ১৬ হাজার ২৩০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল।
২০২১ সালের ৭ জুলাই প্রথমবারের মতো দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে ৫ ও ১০ আগস্ট ২৬৪ জন করে মৃত্যু হয়, যা মহামারির মধ্যে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু। এরপর বেশকিছু দিন ২ শতাধিক মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন: দেশে গবেষণাধর্মী নতুন আরেকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে
এরপর গত ১৩ আগস্ট মৃত্যুর সংখ্যা ২০০ এর নিচে নামা শুরু করে। দীর্ঘদিন শতাধিক থাকার পর গত ২৮ আগস্ট মৃত্যু ১০০ এর নিচে নেমে আসে। ২০২০ সালের এপ্রিলের পর গত বছরের ১৯ নভেম্বর প্রথম করোনাভাইরাস মহামারিতে মৃত্যুহীন দিন পার করে বাংলাদেশ। সর্বশেষ দ্বিতীয়বারের মতো ৯ ডিসেম্বর মৃত্যুশূন্য দিন পার করেছে দেশ।
ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণেই ছিল। কিন্তু এরমধ্যেই বিশ্বে শুরু হয় ওমিক্রন ঝড়। ৩ জানুয়ারি দৈনিক শনাক্তের হার ৩ শতাংশ এবং ৬ জানুয়ারি তা ৫ শতাংশ ছাড়ায়। এরপর থেকে সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বাড়তে শুরু করেছে।