করোনায় বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন ৩০ বছরের পুরুষ: গবেষণা
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ১২ জানুয়ারি ২০২১, ০৮:২৪ PM , আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২১, ০৮:২৯ PM
বাংলাদেশের ৩০ থেকে ৩৯ বছর বয়সী পুরুষেরা সবচেয়ে বেশি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে বলে এক গবেষণায় দেখা গেছে। এ ছাড়াও দেশে বেড়েছে উপসর্গহীন করোনা সংক্রমণের হার।
গত বছর এপ্রিলের প্রথম দিন থেকে জুনের শেষ দিন অর্থা দুই মাসে গবেষণায় এমন এক হাজার ২১ জনের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে যারা চার সপ্তাহ আগে করোনা থেকে সেরে উঠেছেন। ছয়টি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছিলেন তারা।
সম্প্রতি 'এ মাল্টি-সেন্ট্রিক ক্রস-সেকশনাল স্টাডি অন কোভিড-১৯ ইন বাংলাদেশ: ক্লিনিক্যাল এপিডেমিওলজি অ্যান্ড শর্ট-টার্ম আউটকামস ইন রিকাভারড ইনডিভিজুয়ালস' শিরোনামে নেদারল্যান্ডেসর 'নিউ মাইক্রোবস অ্যান্ড নিউ ইনফেকশনস জার্নালে' গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়।
ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং ময়মনসিংহের সাতটি শিক্ষা ও চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান পরিচালিত ওই গবেষণায় দেখা গেছে, করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হওয়া ব্যক্তিদের ঘুমে অনিয়ম, ব্যথা, জ্বালা, অবসাদ, বিষন্নতা, স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়া ও শরীর নাড়ানোতে সমস্যায় ভুগেছিলেন। এদের ৭৫ শতাংশই পুরুষ ছিলেন এবং পুরুষদের ৩০ শতাংশের বয়স ছিল ৩০ থেকে ৩৯ বছরের মধ্যে।
গবেষণাপত্রটির সহ-লেখক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের শিক্ষক ড. মুস্তাক ইবনে আয়ুব বলেন, 'বাংলাদেশে করোনা রোগীদের মাঝে বৈচিত্র বৈশিষ্ট জানাবোঝার ক্ষেত্রে গবেষণাটি খুবই জরুরি ছিল। দেশে উপসর্গহীন রোগী বাড়ছে তা এখানে দেখা গেছে। সার্স-কোভ-২ সংক্রমণের বিরুদ্ধে বিসিজি টিকা কার্যকর হবে কিনা বিজ্ঞানীদের এমন কিছু প্রশ্নের জবাবও মিলেছে এই গবেষণায়।'
এতে দেখা গেছে, একাধিক রোগে আক্রান্ত করোনা রোগীরা দৈনন্দিন চলাফেরায় দুর্বলতা ও শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নাড়াচাড়ায় ব্যথাজনিত সমস্যায় পড়েন।
গবেষণাটি বলছে, নানা বয়েসিদের মাঝে ২০ থেকে ৩৯ বছরের লোকজনের করোনায় আক্রান্তের হার বেশি। আর নারীদের চেয়ে পুরুষেরা তিনগুণ বেশি কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অধিকাংশ লোক (৬২ শতাংশ) পরোক্ষভাবে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে গেছেন। আর সাড়ে ৪৮ শতাংশ আক্রান্ত বা পজিটিভ শনাক্তের আগে ঘরের বাইরে গিয়েছিলেন। ৫০ শতাংশ ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তির নিকট সংস্পর্শে ছিলেন এবং ৪০ দশমিক ৬ শতাংশ রোগীর ৩৪১ জন কোভিড-১৯ আক্রান্ত পরিবারের সদস্য ছিল।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, তথ্যগুলো দেখে এটা বলাই যায় যে, বাংলাদেশে কমিউনিটি ট্রান্সমিশন ব্যাপকহারে রয়েছে, এটি ঠেকাতে সামাজিক দূরত্ব ও অন্যান্য নিয়মনীতির বাস্তবায়ন ও প্রয়োগ জরুরি।
এতে দেখা গেছে, উপসর্গসহ করোনাভাইরাস আক্রান্তদের অর্ধেকেরই বাড়তি ওজন রয়েছে।
গবেষণাপত্রটির প্রধান লেখক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও বায়োটেকনোলজি বিভাগের শিক্ষক ড. আদনান মান্নান জানান, কোভিড-১৯ আক্রান্তের সঙ্গে রক্তের গ্রুপের কোনো গুরুত্ববহ সম্পর্ক পাননি তারা। তিবি বলেন, একাধিক রোগওয়ালা ব্যক্তির শরীরে করোনাভাইরাস সুবিধা করতে পারে। বিশেষত ডায়াবেটিক রোগী, উচ্চরক্তচাপ ও হৃদরোগে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে।
এ ছাড়া উপসর্গহীন করোনা রোগীদের ক্ষেত্রেও করোনা পরবর্তী জটিগুলো দেখা দিতে পারে।