এবার আক্রান্তের বীর্যে মিলল করোনাভাইরাসের আরএনএ!
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ২৯ আগস্ট ২০২০, ০৩:৫২ PM , আপডেট: ২৯ আগস্ট ২০২০, ০৪:১৬ PM
মুখের লালারস কারণে চুম্বন নিয়ে প্রশ্ন ছিল বেশ আগেই। হ্যান্ডশেকে নিষেধাজ্ঞা তো রয়েছেই। তবে এবার বলা হচ্ছে, অনিরাপদ সেক্সও। কারণ হিসেবে বীর্যে ভাইরাস পাওয়া গেছে বলে জানানো হয়েছে।-খবর আনন্দবাজার পত্রিকার
এর আগে বিবিসিএর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, আপনি যদি একটি সম্পর্কের মধ্যে থাকেন এবং দুজন যদি একইসাথে একই বাড়িতে এবং একই পরিচিত গন্ডির ভেতর থাকেন, তাহলে উদ্বিগ্ন হওয়ার তেমন কোনো কারণ নেই। তবে দুজনের মধ্যে একজনের শরীরে যদি করোনাভাইরাসের কোনো উপসর্গ দেখা যায়, তাহলে সাথে সাথে দূরত্ব তৈরি করতে হবে। যার শরীরে উপসর্গ তাকে বাড়িতেই ‘আইসোলেশনে’ চলে যেতে হবে।
কিন্তু সম্প্রতি ১২ জন মৃদু উপসর্গের কোভিড রোগীকে নিয়ে এক স্টাডি হয়েছে। রোগ সেরে যাওয়ার পর তাঁদের বীর্যে ভাইরাসের কোনও চিহ্ন ছিল না। ফলে ভাবা হয়েছিল, যৌন সম্পর্কের মাধ্যমে রোগ ছড়াবে না। কিন্তু তা মিথ্য প্রমাণিত হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি গুরুতর অসুস্থ কম বয়সি ৩৮ জন রোগীর সিমেন স্টাডি করেন বিজ্ঞানীরা। ১৫ জনের বীর্য নেওয়া হয় রোগের জটিল পর্যায়ে। তার মধ্যে ৪ জনের বীর্যে ভাইরাসের হদিস মেলে। বাকি ২৩ জন দেন রোগ একটু সামলে যাওয়ার পর। তাঁদের মধ্যেও দু'জনের সিমেন পজিটিভ। চীনের এই স্টাডিটি বিজ্ঞানীরা প্রকাশ করেছেন ‘জার্নাল অব আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন নেটওয়ার্ক ওপেন’-এ।
স্টাডি থেকে বোঝা যাচ্ছে, রোগ হালকাভাবে থাকলে ও পুরোপুরি সেরে গেলে ভয় নেই! আর বেশির ভাগ ক্ষেত্রে রোগ তো হালকাই থাকে! চিন্তা জটিল রোগীদের নিয়ে। তবে বিভিন্ন গবেষণা থেকে যা জানা গেছে, বয়স্ক ও অসুস্থ মানুষদেরই রোগ জটিল হয় বেশি। তাঁদের দু'এক মাস ধাতস্থ হতে দিলে হয়তো সমস্যা মিটে যাবে।
তবে কি করোনা ছড়াবে পুরুষ থেকে নারীতে: সুকুমার মুখোপাধ্যায় বলেন, বীর্যে আরএনএ কী মাত্রায় আছে, তা থেকে রোগ ছড়াতে পারে কি না, কতদিন সে একইভাবে থাকবে ইত্যাদি কোনও তথ্যই হাতে আসেনি এখনও। তাই এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না।
তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, শেষ কথা বলার সময় এখনও আসেনি। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, প্রথমত, কোভিড রোগীর বীর্যে পাওয়া গেছে শুধু ভাইরাসের আরএনএ-টুকু। আরএনএ আছে মানেই যে জীবিত ভাইরাসটিও আছে, এমন নয়। আর সে না থাকলে সংক্রমণের গল্প নেই। এবার তর্কের খাতিরে যদি ধরে নেওয়া যায়, ভাইরাস আছে, ইবোলা বা জিকা-র মতো, তাহলে পরের প্রশ্ন, গুরুতর রোগীর বীর্যে সে যে মাত্রায় আছে, মৃদু বা মাঝারি রোগীর বীর্যেও কি একই ভাবে আছে? বা যাঁর সংক্রমণ হয়েছে কিন্তু কোনও উপসর্গ হয়নি, তাঁর?
তৃতীয় প্রশ্ন, রোগ থাকাকালীন বীর্যে ভাইরাস থাকলে, থাকুক। কারণ, রোগী তখন সংক্রমণ এমনিই ছড়াবেন। রোগ সেরে যাওয়ার পর সে কত দিন থাকছে? এই প্রশ্নের উত্তর এখন পাওয়া যাবে না, বলাই বাহুল্য। কাজেই আপাতত, যেমন সাবধান হয়ে চলছেন, তেমনই চলুন। হাত যেমন ধুচ্ছেন, মাস্ক যেমন পরছেন ঠিক তেমনভাবে শারীরিক সম্পর্কের সময় গর্ভনিরোধক ব্যবহার করুন।