আক্রান্ত বেশিরভাগই তরুণ, সাবধান করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ

বাংলাদেশ তো বটেই, গোটা বিশ্বই আজ করোনায় তটস্থ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে বলা হচ্ছে, দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য অংশ তরুণ। যাদের বয়সসীমা ২১-৩০ বছরের মধ্যে। এর পরই আছে সদ্য তারুণ্য পেরোনো বয়সীরা।

২২ এপ্রিল পর্যন্ত মোট আক্রান্তদের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, করোনায় আক্রান্ত সর্বমোট রোগীদের ৬০ বছরের বেশি বয়সী ১০ শতাংশ, ৫১-৬০ বছর বয়সী ১৫ শতাংশ, ৪১-৫০ বছর বয়সী ১৮ শতাংশ, ৩১-৪০ বছর বয়সী ২২ শতাংশ, ২১-৩০ বছর বয়সী ২৪ শতাংশ, ১১-২০ বছর বয়সী ৮ শতাংশ এবং ১০ এবং এর নীচের বয়সী ৩ শতাংশ রোগী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা বলেন, আক্রান্তদের মধ্যে তরুণদের সংখ্যাই সর্বাধিক। এ কারণে তিনি বার বার তরুণ-যুবকদের ঘরে থাকার পরামর্শ দিয়ে বলেন, আপনারা ঘরে থাকুন। নিজেকে সুরক্ষিত করুন, অন্যদের সুরক্ষা দিন। খুব বেশি প্রয়োজন হলে মাস্ক পড়ে ঘরের বাইরে যাওযার পরামর্শ দেন তিনি।

কিন্তু কী কারণে তরুণরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন? ঢাকা শিশু হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. রিজওয়ানুল আহসান বিপুল বলেন, ‘ঘরে থাকার ব্যাপারে তরুণরা এখনো উদাসীন। ২০ থেকে ৫০ বছর বয়সীরা বেশি বাইরে যান। বাজারে যান। যেখানেই দেখবেন তরুণরাই বসে আড্ডা মারছে অথবা জটলা পাকিয়ে আছে। এখনকার অবস্থায় এটা প্রচণ্ড ভয়াবহ একটা দিক বয়ে আনবে বলে আমি মনে করি। এ জন্যই ২০ থেকে ৫০ বছর বয়সীদের মৃত্যুর সংখ্যাও বেশি হচ্ছে এবং আক্রান্তের সংখ্যাও বেশি।’ সম্প্রতি বেসরকারি একটি টেলিভিশন চ্যানেলের সঙ্গে আলাপে তিনি এ কথা বলেন।

ডা. রিজওয়ানুল আহসান বলেন, ‘আমরা প্রথম দিকে ধারণা করেছিলাম যে ৫০ বছরের বেশি বয়সীদের আক্রান্তের আশঙ্কা বেশি। দেখা যাচ্ছে, এই যে কমিউনিটি ট্রান্সমিশনটা হচ্ছে এবং হয়ে গেছে। সরকারের পক্ষ থেকে সব সময়ই ঘরে থাকার কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু যারা মানছেন না তাদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।’

যাদের ডায়াবেটিকের সমস্যা আছে তাদের অনেকে ভোরে বাইরে হাঁটতে বের হন। এটা কতটা নিরাপদ?

জানতে চাইলে ডা. রিজওয়ানুল আহসান বিপুল বলেন, ডায়বেটিক রোগীর জন্য পরামর্শ হচ্ছে, আপনি যে ধরনের ওষুধ খাচ্ছেন সেগুলো খাবেন। যে পরামর্শ আছে সেগুলো মেনে চলবেন এবং জনসমাগম এড়িয়ে চলবেন। অর্থাৎ আপনাকে বাসায় থেকেই সাবধান থাকতে হবে। আর একান্তই যদি বের হতে হয় তাহলে মাস্ক পরবেন।

যাদের বাসায় ছোট বাচ্চা আছে, তারা কীভাবে দূরত্ব বজায় রাখবেন? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রথম কথা হচ্ছে আপনি বাসায় অবস্থান করবেন। যেহেতু আপনাকে বাইরে যেতে হচ্ছে তাহলে আপনাকে অবশ্যই ছয় ফুট দূরত্ব বজায় রেখে চলতে হবে। বাইরে থেকে আসার পরে আপনি ২০ সেকেন্ড ধরে ভাল করে হাত ধুয়ে নেবেন। এর আগে আপনি বাবুকে স্পর্শ করবেন না।

বাসায় আসার পর আপনার পরা সব কাপড় ভালো করে সাবান পানিতে ধুয়ে ফেলবেন। ছোট বাচ্চাকে আমরা আদর করব এটাই স্বাভাবিক তবে যতটুকু সম্ভব দূরত্ব বজায় রাখা ভালো। বাচ্চাদের খেলনা দিয়ে বসিয়ে রাখতে পারলে আরো ভালো। আর একটু চেষ্টা করলে এটা সম্ভবও। অর্থাৎ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে শুরু করে আমাদের দেশের সরকার, ডাক্তার সবাই শারীরিক দূরত্বটা বজায় রাখার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন।


সর্বশেষ সংবাদ