২৮ মে ২০২৫, ০৮:৫৬

আর্থিক সংকটে অলঙ্কার বন্ধক রেখে ঋণ নিয়েছিলেন নবাব সলিমুল্লাহ পরিবার

হীরকখণ্ডসহ বিভিন্ন দামী অলঙ্কার  © সংগৃহীত

আর্থিক সংকটে পড়ে মূল্যবান অলঙ্কারাদি বন্ধক রেখে ঋণ নিতে হয়েছিল ঢাকার ঐতিহাসিক নবাব সলিমুল্লাহ পরিবারকে। ১৯০৮ সালের ৬ আগস্ট নবাব বাহাদুর সলিমুল্লাহ ও তৎকালীন ব্রিটিশ সরকারের মধ্যে একটি বন্ধকী চুক্তির মাধ্যমে ‘দরিয়া-এ-নূর’ হীরকখণ্ডসহ বিভিন্ন দামী অলঙ্কার অস্থাবর সম্পত্তি হিসেবে সরকারের হেফাজতে দেওয়া হয়। ঐ চুক্তির আওতায় নবাব পরিবার সরকারের কাছ থেকে ১৪ লক্ষ রুপি ঋণ নেয়। এই ঋণের বিপরীতে সুদের হার নির্ধারণ করা হয়েছিল ৩ শতাংশ এবং পরিশোধের সময়সীমা ছিল ৩০ বছর।

নথিপত্র অনুযায়ী, পরিবারটি আর্থিক সংকট মোকাবেলায় তৎকালীন সরকারের কাছ থেকে ৩ শতাংশ সুদে ১৪ লক্ষ রুপি ঋণ গ্রহণ করে, যা ৩০ বছরের মধ্যে পরিশোধযোগ্য ছিল। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ঋণ পরিশোধ সম্ভব না হওয়ায়, এই রত্নাদি কোর্ট অব ওয়ার্ডসের মালিকানায় চলে যায়। বর্তমানে এসব অলঙ্কার ভূমি সংস্কার বোর্ডের তত্ত্বাবধানে সোনালী ব্যাংকের একটি ভল্টে সংরক্ষিত রয়েছে।

আরও পড়ুন: বিশেষ বিসিএসের জন্য বিধিমালা সংশোধন, প্রজ্ঞাপন জারি

সূত্রমতে, দীর্ঘ ১১৭ বছর ধরে এসব রত্ন ভল্টে থাকলেও কখনোই তা খোলা হয়নি বা সরেজমিনে পরিদর্শন করা হয়নি। একাধিকবার কমিটি গঠন করা হলেও, কেউ এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেননি। সম্প্রতি সরকার নতুন করে উচ্চপর্যায়ের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটিতে সভাপতি করা হয়েছে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে।

কমিটির অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন মূখ্য সচিব, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের প্রতিনিধি, স্বরাষ্ট্র, ভূমি, আইন ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবরা; বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ডেপুটি গভর্নর, জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক, সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, একজন রত্ন বিশেষজ্ঞ এবং ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান (সচিব)।

কমিটি সংশ্লিষ্ট ভল্ট খুলে অলঙ্কারাদির প্রকৃত অবস্থা যাচাই করে বিস্তারিত বিবরণ প্রস্তুত করবে। এরপর আইনগত পরামর্শের ভিত্তিতে রত্নগুলোর সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার বিষয়ে সরকারের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।