ঈদের আগে বেতন-বোনাস পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় শিক্ষক-কর্মচারীরা
- মুনতাসির রহমান
- প্রকাশ: ০১ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৫৫ PM , আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৩৩ PM
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১০ অথবা ১১ এপ্রিল দেশে ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। সে হিসেবে ঈদের আর মাত্র ১০ দিন বাকি থাকলেও এখনো বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতন-বোনাসের চেক ছাড় হয়নি। এ অবস্থায় ঈদের আগে বেতন-বোনাস পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীরা।
শিক্ষকরা বলছেন, প্রতিবছরই ঈদের আগে বেসরকারি শিক্ষকদের বেতন-বোনাস নিয়ে গড়িমসি করা হয়। নির্ধারিত সময়ে বেতনের চেক ব্যাংকে না দেওয়ায় শিক্ষকদের অনেক সময় ঈদের পর বেতন তুলতে হয়। অনেক সময় ঈদের একদিন অথবা দুইদিন আগে বেতন তুলতে হয়। গত কয়েক বছর ধরেই এটি চলছে।
নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার এক শিক্ষক বলেন, শুধু ঈদ নয়; যে কোনো উৎসব এলেই শিক্ষকদের সঙ্গে প্রহসন করা হয়। ২০১৯ সালে ঈদের পর বেতন তুলতে পেরেছিলাম। ঈদের এক/দুইদিন আগে বেতন তুলে কী করবো? সন্তান-পরিবারের সদস্যদের কেনাকাটা কবে করে দেব?
শিক্ষকদের বেতন-বোনাসের চেক মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় চেকে স্বাক্ষর করলে আমরা সেগুলো ব্যাংকে পাঠিয়ে দেব। আশা করছি শিক্ষকরা ঈদের আগেই বেতন-বোনাসের অর্থ তুলতে পারবেন —হাবিবুর রহমান, মহাপরিচালক, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর
মুহিবুল্লাহ নামে এক শিক্ষক বলেন, আমাদের বোনাস দেওয়া হয় মাত্র ২৫ শতাংশ। এই বোনাস দেওয়ার চেয়ে না দেওয়াই ভালো। অন্য কোনো চাকরিতে এত কম বোনাস আছে বলে আমার জানা নেই। এরপর ঈদের আগে বেতন-বোনাস পাওয়া নিয়ে শঙ্কা। বেসরকারি শিক্ষকদের সঙ্গে এমন প্রহসন মেনে নেওয়া যায় না।
তবে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা অধিদপ্তরগুলো বলছে, বেতন-ভাতার অনুমোদন হয় মন্ত্রণালয় থেকে। শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতনের চেকে মন্ত্রণালয়ের স্বাক্ষর করার পর তা অধিদপ্তরকে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে অধিদপ্তর সেই চেক ব্যাংকে পাঠায়। এরপর শিক্ষকরা ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করতে পারেন।
এবার কেবল স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের বোনাসের অর্থ শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্বাক্ষর করেছে। বেতনের অর্থের চেকে এখনো স্বাক্ষর হয়নি। অন্যদিকে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষকদের বেতনের চেক ছাড় হলেও বোনাসের চেকে স্বাক্ষর করেনি কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ। ফলে ঈদের আগে বোনাস পাওয়া নিয়ে শঙ্কা কাটছেই না।
এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, এবার ঈদের আগেই শিক্ষকরা বেতন-বোনাস পাবেন। আমরা সার্বক্ষণিক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। আশা করছি দুই/তিনদিনের মধ্যে শিক্ষকদের বেতন-বোনাসের চেক ব্যাংকে পাঠাতে পারব।
জানা যায়, এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজে প্রতিষ্ঠান প্রধান থেকে সহকারী শিক্ষকদের ২৫ ভাগ বোনাস দেয় সরকার। অর্থাৎ কোনো সহকারী শিক্ষক যদি ১০ গ্রেডে চাকরিতে প্রবেশ করেন তার বেসিক হয় ১৬ হাজার টাকা। অর্থাৎ প্রতি ঈদে শিক্ষকদের দেয়া হয় চার হাজার টাকা। যদিও সরকারি চাকরিজীবীরা মূল বেতনের শতভাগ বোনাস পান।
এ বিষয়ে শিক্ষক নেতারা বলছেন, এত কম উৎসব ভাতার নজির পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে নেই। আমরা দীর্ঘ দিন এ বিষয়ে আন্দোলনও করছি তবে এর কোনো ফলাফল আসেনি।
এবার এবার কেবল স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের বোনাসের অর্থ শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্বাক্ষর করেছে। বেতনের অর্থের চেকে এখনো স্বাক্ষর হয়নি। অন্যদিকে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষকদের বেতনের চেক ছাড় হলেও বোনাসের চেকে স্বাক্ষর করেনি কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ। ফলে ঈদের আগে বোনাস পাওয়া নিয়ে শঙ্কা কাটছেই না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হাবিবুর রহমান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, শিক্ষকদের বোনাসের চেক মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় চেকে স্বাক্ষর করলে আমরা সেগুলো ব্যাংকে পাঠিয়ে দেব। আশা করছি শিক্ষকরা ঈদের আগেই বোনাসের অর্থ তুলতে পারবেন।