ভাইয়ের আঁকা ছবি চিত্রশিল্পী বানাল শিবলীকে

বড় ভাইকে নিজের ছবি নিজে আঁকতে দেখে ছবি আঁকার সাধ জন্মেছিল তরুণ শিল্পী শিবলী হাওলাদারের মাঝে। পরে পেশাদার শিল্পীদের কাজ দেখে দেখে আঁকাআঁকির চর্চা চালিয়ে যান। স্কুল-কলেজে বন্ধুদের আবদার রক্ষা করতেও একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি চলে ছবি আঁকা।

কলেজ জীবনের পাঠ চুকিয়ে ঠিক করলেন নিজের শখ, আনন্দ, ভালোলাগা যেখানে, সেই আঁকাআঁকিতে পড়াশোনার বাকিটুকু করবেন। ভর্তি হলেন রাজধানীর শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজির ফাইন আর্টস ডিপার্টমেন্টের ড্রয়িং অ্যান্ড পেইন্টিং বিভাগে। এখন পড়ছেন মাস্টার্সে।

শিবলীর জন্ম লক্ষীপুরের রামগতি থানায়। দুই বোন আর চার ভাইয়ের মধ্যে পঞ্চম। বর্তমানে থাকেন রাজধানীর উত্তরায়। তাঁর ছোট্ট শিল্প জীবনের এখন পর্যন্ত ‘জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনী’ থেকে শুরু করে দেশ-বিদেশের ৩০টিরও বেশি গ্রুপ প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করার সুযোগ হয়েছে। প্রায় ৭টি আর্টক্যাম্পে দেশের গুনী শিল্পীদের সাথে কাজ করার সুযোগ হয়েছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বাংলা চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নায়িকা আরিফা পারভিন জামান মৌসুমীকেও ফ্রেম বন্দি করেছেন তরুণ শিল্পি শিবলী। এর মধ্যে বঙ্গবন্ধু নিয়ে সিরিজ দ্যা গ্রেট কিংবদন্তি-১ থেকে ৪ পর্যন্ত, বারংবার মৃত্যুর মুখোমুখি, জনতা-ই শক্তি, সোনালী অতীত, শিল্প চেতনা, মমতাময়ী নেত্রী, প্রিয় দর্শিনী (মৌসুমী)। 

একইসঙ্গে বাংলার প্রকৃতি, মানবতা, জীবন ঘনিষ্ঠ বিভিন্ন শিল্পকর্মের তুলি উঠেছে তাঁর হাতে। এইগুলো মধ্যে রয়েছে— রুচির দুভিক্ষ, প্রকৃতির সৌন্দর্য, ভাঙাগড়া জীবন, প্রকৃতি, আমার ক্যাম্পাসের চারপাশ, প্রকৃতি -০২,  জড়জীবন,  ওয়াটার লিলি, জড়জীবন-০২, নৈসর্গিক, প্রকৃতি-০৩, নীলসাগরের অক্সিজেন-০১।

২০১৯ সালে বঙ্গবন্ধু উপাধির সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে ‘বঙ্গবন্ধু শব্দটি আমাদের’ শিরোনামে বাংলাদেশ-ভারত থেকে বাছাইকৃত ৫০জন শিল্পী নিয়ে আর্টক্যাম্পে অংশ নেয়ার সুযোগ পান। এছাড়া প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের উদ্যোগে ‘শিল্পীর চোখে সবুজ ঢাকা’ আর্ট ক্যাম্পেও অংশ নেন।
গত বছরের আগস্টে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে রাষ্ট্রীয়ভাবে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে প্রথমবারের মতো আয়োজন করে গবেষণামূলক স্টুডিওভিক্তিক আর্ট ক্যাম্প। সেখানে দশ জন তরুণ শিল্পী নিয়ে চলে ‘শতচিত্রে জননেত্রী’। যেখানে শিবলীর দশটি চিত্রকর্ম ছিলো।
২০১৩ সালে রানা প্লাজা নিয়ে ট্রাজেডি-২ শিল্পকর্মটি তাঁর জীবনের প্রথম এনে দেয় পুরষ্কার। ইন্টার ইউনিভার্সিটি আর্ট কম্পোটিশন ও এক্সিবিশনে ‘সেকেন্ড গ্র্যান্ড অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হন। এরপর ১৫ আগস্টের চিত্রপ্রদর্শনীতে বিশেষ সম্মাননা পুরষ্কার পান। এছাড়া ভারতে আয়োজিত আন্তর্জাতিক চিত্রপ্রদর্শনীতে সম্মাননাসহ ৫টি পুরষ্কার জুড়ে।

এখন পড়াশোনার পাশাপাশি নাটক-সিনেমার আর্ট ডিরেক্টর হিসেবেও কাজ করছেন। দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে তরুণ শিল্পি শিবলী বলেন, এখনো প্রতিনিয়ত শিখছি, শিল্পীদের দেখতে শিখতে হয়। এছাড়া পৃথিবীতে মানবতার জয় হোক, সুস্থ সংস্কৃতি এগিয়ে যাবে, এটাই একমাত্র প্রত্যাশা।


সর্বশেষ সংবাদ