বিসিএসে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের শ্রুতলেখক দেবে পিএসসি
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০১৯, ০৬:৫৬ PM , আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৯, ০৬:৫৬ PM
৪০তম বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের শ্রুতলেখক দেবে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। সভা করে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। পরীক্ষায় সমতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে জটিলতা কমাতে এই উদ্যোগ নেয় বলে জানানো হয়।পিএসসি মনোনীত রোভার স্কাউটস/গার্ল গাইডসের চৌকস সদস্যরা শ্রুতলেখক হিসেবে কাজ করবে। শ্রুতলেখকের যাবতীয় খরচ বহন করবে কমিশন।
পিএসসি জানায়, প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী শ্রুতলেখক ব্যবহারে অনুমিত প্রদান করা হয়। এ নিয়ম অনুযায়ী শ্রুতলেখকের শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রতিবন্ধী প্রার্থীর চেয়ে এক ধাপ নিচের হয়ে থাকে। বিগত বিসিএস পরীক্ষায় দেখা গেছে, অধিকাংশ দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী প্রার্থীই পরীক্ষার আগের দিন পর্যন্ত নিজের পছন্দের ব্যক্তিকে শ্রুতলেখক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার জন্য কমিশনে আবেদন করে থাকেন। এ ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী প্রার্থী কর্তৃক শ্রুতলেখক হিসেবে মনোনীত অধিকাংশ ব্যক্তিই স্নাতক/স্নাতক সম্মান পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ফলাফল প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছেন, অথবা কেউ কেউ স্নাতক পাস।
আবার দেখা গেছে, প্রতিবন্ধী প্রার্থীর দাবি অনুযায়ী যে ব্যক্তিকে কর্ম কমিশন হতে শ্রুতলেখক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তিনি অসুস্থতার জন্য বা ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পরীক্ষার দিন শ্রুতলেখক হিসেবে দায়িত্ব পালনে অপারগতা প্রকাশ করেছেন। সে ক্ষেত্রে কমিশনকে একই পরীক্ষায় বারবার শ্রুতলেখক পরিবর্তন করতে হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা গেছে, প্রতিবন্ধী প্রার্থীরা বাংলা, ইংরেজি, গণিত, সাধারণ জ্ঞান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন শ্রুতলেখকের দাবি করেছেন। তাতে বিসিএসের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক নিয়োগ পরীক্ষায় সমতা রক্ষা এবং পরীক্ষা পরিচালনায় নানাবিধ জটিলতার উদ্ভব হয়েছে।
উল্লিখিত জটিলতা নিরসনের এবং বিসিএস পরীক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক নিয়োগ পরীক্ষায় সমতা, স্বচ্ছতা এবং নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে পূর্ণ কমিশন সভায় প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের কর্ম কমিশন কর্তৃক সমরূপ শিক্ষাগত যোগ্যতাসম্পন্ন শ্রুতলেখক প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। কর্ম কমিশন কর্তৃক মনোনীত শ্রুতলেখকেরা রোভার স্কাউটস/গার্ল গাইডসের চৌকস সদস্য। তাঁদের ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচএসসি পাস এবং স্নাতক প্রথম বর্ষ বা স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত। শ্রুতলেখক হিসেবে মনোনীত চৌকস রোভার স্কাউটস/গার্ল গাইডসের সদস্যদের কমিশনের পক্ষ থেকে শ্রুতলেখকের দায়িত্ব ও কর্তব্য বিষয়ে দিনব্যাপী নিবিড় প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে।
এ কাজে প্রত্যেক রোভার স্কাউটস/গার্ল গাইডসকে ১ হাজার ৬০০ টাকা করে সম্মানী প্রদান করা হবে। পরীক্ষার দিন সকালে তাঁদের কমিশনের ব্যবস্থাপনায় গাড়িতে পরীক্ষা হলে নিয়ে যাওয়া হবে এবং পরীক্ষা শেষে বাড়িতে ফেরত দেওয়া হবে। তাতে শ্রুতলেখক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রতিজন রোভার স্কাউটস/গার্ল গাইডসের পেছনে কমিশন ন্যূনতম ২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যয় করছে।
তাছাড়া প্রতিটি পরীক্ষা হলে প্রতিবন্ধী প্রার্থীর জন্য ভিন্ন কক্ষে আসন ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ কাজে ভিন্ন পরিদর্শকও নিয়োগ দেওয়া হবে। প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে কর্ম কমিশন উপরিউক্ত নানামুখী প্রতিবন্ধীবান্ধব কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
এছাড়া পিএসসির পক্ষ থেকে বলা হয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন পিটিআই ইনস্ট্রাক্টর পদের লিখিত পরীক্ষায় কর্ম কমিশন কর্তৃক রোভার স্কাউটস/গার্ল গাইডসের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিয়ে শ্রুতলেখক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। চৌকস রোভার স্কাউটস এবং গার্ল গাইডসের সদস্যরা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে কর্ম কমিশন কর্তৃক গৃহীত উক্ত পরীক্ষায় শ্রুতলেখক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছে।
কর্ম কমিশন কর্তৃক মনোনীত রোভার স্কাউটস এবং গার্ল গাইডসের সদস্যরা এইচএসসি পাস এবং স্নাতক ১ম বর্ষ বা ২য় বর্ষে অধ্যয়নরত ছাত্র। রোভার স্কাউটস/গার্ল গাইডসের চৌকস সদস্যরা এমসিকিউ পরীক্ষায় অবতীর্ণ হয়েছেন এবং ওএমআর উত্তরপত্রের বৃত্ত ভরাটের অভিজ্ঞতা নিয়েই তারা উল্লিখিত পাবলিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। কাজেই চৌকস রোভার স্কাউটস/গার্ল গাইডসের সদস্যরা পিএসসির প্রশ্নপত্র পাঠ করতে পারবেন না এবং বৃত্ত ভরাট করতে পারবেন না, এই বক্তব্য কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।