যেসব কাজে ঈদের আনন্দ বেশি
রমজানের ৩০ দিন সিয়াম সাধনা করার পর এসেছে পবিত্র ঈদ উল ফিতর। শাওয়াল মাসের চাঁদ অর্থাৎ সূর্যাস্তে একফালি নতুন চাঁদ দেখা গেলে পরদিনই ঈদ ঘোষণা করা ইসলামী শরিয়তের বিধান। সোমবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশের আকাশে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে। তাই আজ মঙ্গলবার মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। এ দিনটি মুসলমানদের সবচেয়ে বড় দুটি ধর্মীয় উৎসবের মধ্যে অন্যতম। তাই বিশ্বজুড়ে মুসলমানরা ইবাদতের পাশাপাশি নানা রকম উৎসাহ উদ্দীপনায় দিনটি উদযাপন করে থাকেন। ঈদ প্রতি বছরই মুসলমানদের জীবনে খুশির বারতা নিয়ে আসে। এ দিনটি উদযাপনে মুসলমানরা নানা রকম প্রস্তুতি নিয়ে থাকেন। বাংলাদেশেও পবিত্র ঈদ উল ফিতর উদযাপনে সমাজের নানা পেশার মানুষেরা বিভিন্ন রকমের প্রস্তুতি নিয়ে থাকেন।
বিশেষ করে আমাদের সমাজে ঈদে নতুন জামা কাপড় পরিধান করা, ভাল খাবার দাবার খাওয়া, নানান রকম ঈদ উপহার দেওয়ার রীতি প্রচলিত রয়েছে। এছাড়া দিবসটিতে ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সবাই কোলাকুলি, সালাম ও শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এখন তাহলে চলুন ঈদে যেসব কাজ করলে আনন্দ আরও বহুগুণ বেড়ে যায় তা জেনে নেই।
যেসব কাজে ঈদের আনন্দ বেশি পাওয়া যায়
নামাজ আদায় করা: ঈদের দিন নামাজ আদায় করলে আপনার প্রশান্তি আসবে। বিশেষ করে জামাতের সাথে নামাজ আদায় করার চেষ্টা করবেন।
ঈদের উপহার: উপহার পেতে কার না ভাল লাগে। আর সেটি যদি হয় ঈদে তবে তো কোন কথাই নেই। তাই ঈদে বাড়ি যাওয়ার সময় পরিবারের সবার জন্য অল্প করে হলেও ঈদের উপহার নিয়ে যেতে ভুলবেন না। কোনো কারণে ঈদের উপহার মিস করলে সেদিন বাড়ির শিশুদের সালামি হিসাবে অর্থ দিতে পারেন। এতে শিশুদের ঈদের আনন্দ আরও বহুগুণ বেড়ে যাবে।
ঘর-বাড়ির সাজগোজ করা: ঈদকে কেন্দ্র করে ঘর-বাড়ি সাজানোর একটা ব্যাপার রয়েছে। বিশেষ করে বাড়িঘর পরিপাটি ও সাজিয়ে রাখবেন। এতে উৎসবের আমেজ বেড়ে যায়।
সবার সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করা: ঈদের দিন মুসলমানরা ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সবাই কোলাকুলি, সালাম ও শুভেচ্ছা বিনিময় করে থাকেন। এতে করে সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি ও ঈদের আনন্দ বাড়ে।
আকর্ষণীয় খাবার রান্না করা: ঈদের দিন প্রায় সবার বাড়িতে কম-বেশি অতিথি আসে। এদিন অনেক পুরনো বন্ধু-বান্ধব বা অতিথি বেড়াতে আসতে পারে। তাই ঈদের দিন আকর্ষণীয় খাবার রান্না করলে অতিথিদের সামনে তা পরিবেশন করতে পারবেন।
পছন্দের জামা-কাপড় পরা: ঈদের দিন পছন্দের কাপড় পরিধান করবেন। বিশেষ করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন জামা-কাপড়ের সাজে দেখতে সবাইকে ভালোই লাগে।
আরও পড়ুন: ১৪ জেলার যেসব এলাকা আজ ঈদ উদযাপিত হচ্ছে
সবার সঙ্গে যোগাযোগ করা: অনেকেই সবার সঙ্গে ঈদ পালন করতে শহর ছেড়ে নিজ এলাকায় চলে যান। এ সময় আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুদের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ করতে করতে ভুলবেন না। তাদের সঙ্গে দেখা না হলে নিজ থেকে যোগাযোগ করুন। এতে সম্পর্ক আরও গভীর হবে এবং আপনার প্রতি তাদের ভালোবাসা বৃদ্ধি পাবে। আপনার মনের প্রশান্তিও বৃদ্ধি পাবে।
প্রতিবেশীদের সঙ্গে সময় কাটানো: ঈদের দিন আপনার প্রতিবেশীর সঙ্গে সুন্দর সময় কাটাতে পারেন। তার সঙ্গে ঈদের আড্ডা দিতে পারেন। এদিন তাদেরকে আপনার বাসা-বাড়িতে দাওয়াত করুন। এছাড়া কোনো প্রতিবেশী অভাবী হলে তাকে সাধ্যমত আর্থিক সহযোগিতা করতে পারেন।
ঘুরে বেড়ানো: ঈদের দিন পছন্দের কোন জায়গায় ঘুরে আসতে পারেন । এতে শরীর ও মন ভাল থাকবে। সেই সঙ্গে বেড়ে যাবে আপনাদের ঈদের খুশি।
প্রসঙ্গত, করোনা মহামারির কারণে গত দু’বছর সংক্রমণ আতঙ্ক ও বিধিনিষেধের মধ্যেই মানুষ নিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন করেছে। সংক্রমণরোধে বন্ধ ছিল রেল, দূরপাল্লার বাস ও লঞ্চ চলাচল। এর প্রায় দুই বছর পর করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় গত ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে তুলে দেয়া হয় বিধিনিষেধ। এতে করে নতুন স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে আসে এবারের রমজান মাস। সেই সঙ্গে বছর ঘুরে আবার এসেছে মুসলমানদের প্রিয় ঈদ উৎসব। এইবার প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে প্রায় ১ কোটি লোক রাজধানী ঢাকা ছেড়েছেন। এ কারণে এখন ঢাকার রাস্তায় নেই আগের মত চিরাচরিত যানজট। শহরের রাস্তাগুলোতে অনেকটা নীরবতা বিরাজ করছে। চলছে হালকা যানবাহন।