২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ২০:১৪

বায়তুল মোকাররম ও সংসদে শুটিং করতে চান ফারুকী

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী  © ফাইল ফটো

বাংলাদেশের জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম ও জাতীয় সংসদ ভবনে শুটিং করতে চান নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে এই ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন ফারুকী।

নির্মাতা ফারুকী অস্ট্রেলিয়াকে উদাহরণ টেনে ফেসবুকে লেখেন, ‘অস্ট্রেলিয়া বললে আমাদের চোখে কোন ইমেজ ভাসে? সিডনি অপেরা হাউস আর হারবার ব্রিজ। কখনো নরমাল টাইমের ছবি, কখনো-বা ভাসে থার্টি ফার্স্ট সেলিব্রেশনের আলোকসজ্জাসহ ছবি। সঙ্গে সঙ্গে আমাদের মনের মধ্যে একটা আর্কিটেকচারালি রিচ ফুর্তিবাজ দেশের পারসেপশন তৈরি হয়। আদতে এই জায়গাটা সিডনির খুব ছোট একটা অংশই। বৃহৎ সিডনি মূলত শান্ত শীতল এক কান্ট্রিসাইড। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া ভাবলে আপনার মাথায় অলস-শান্ত-শীতল কোনো জায়গা মনে না হয়ে আর্কিটেকচারালি রিচ ফুর্তির জায়গা যে মনে হয়, এটা ইমেজের ম্যাজিক। সারা দুনিয়ার পত্রিকায় এবং আপনার নিউজফিডে এত এতবার অপেরা হাউস আর হারবার ব্রিজের ছবি ছাপা হয়েছে এবং হচ্ছে যে, আপনার মাথায় এটা গেঁথে যাচ্ছে। এখন একবার ভাবেন, অস্ট্রেলিয়া সরকার যদি আইন করে এসব জায়গায় ছবি তোলা যাবে না বা শুটিং করা যাবে না, তাহলে কিন্তু আর এই ইমেজটা আপনার মাথায় গাঁথত না।’

আরও পড়ুন: মন্ত্রণালয় বলছে তদন্ত করতে আর ইউজিসি দিচ্ছে পুরস্কার!

তিনি লিখেছেন, “আমাদের একটা সংসদ ভবন আছে। যেটা সারা পৃথিবীতে একটা আইকনিক স্ট্রাকচার হিসেবে আমরা হাজির করতে পারতাম। কিন্তু আপনি সেখানে শুটিং করতে পারবেন না। কারণ, সেটা কেপিআই জোন। বিশেষ অনুমতি নিয়ে শুটিং করা সম্ভব, যেটা অনেকের পক্ষেই পাওয়া কঠিন। তাই বলি, আপনি আপনার দেশের সেরা জায়গাগুলোতে যদি শুটিং না করতে দেন, তাহলে তো আপনার আফসোস করা উচিত না যে ‘তোমরা বাংলাদেশকে প্রোপারলি দেখাও না’।”

ফারুকী আরও লিখেছেন, “আরেকটা কথা মাঝেমধ্যে শুনি। হিন্দু বা খ্রিষ্টধর্মের অনুষ্ঠানগুলা বাইরে ফিল্মমেকাররা এত সুন্দর করে তুলে ধরে, আমাদের ফিল্মমেকাররা মুসলমানদের রিচুয়ালগুলো সেভাবে তুলে ধরে না। কথা সঠিক। কিন্তু যারা এই কথাগুলো বলেম তাদের আমি জিজ্ঞেস করি: ‘আমার একটা দৃশ্যের জন্য বায়তুল মোকারম মসজিদের ভেতরে শুটিং করা দরকার, যেখানে দেখা যাবে হাজার হাজার লোক একসঙ্গে জুমা আদায় করছে। একটু জোগাড় করে দিতে পারবেন?’ সঙ্গে সঙ্গে দেখি ওনারা আমতা আমতা করতে থাকেন। আপনি মসজিদে শুটিং করতে দেবেন না; কিন্তু চাইবেন আপনার ধর্মের সুন্দর রিচুয়ালগুলো মানুষ জানুক, সেটা কীভাবে হবে?”

আরও পড়ুন: সমতা নিশ্চিত করতেই ‘সেকেন্ড টাইম’ বাদ দেয়া হয়েছে: ঢাবি ভিসি

ফারুকী তার লেখায় আরও উল্লেখ করেন, ‘আপনার প্রার্থনার সুন্দর এবং পবিত্র জায়গার ছবি তুলে প্রচারের মাধ্যমে সেটার সৌন্দর্য কমে না, পবিত্রতাও কমে না। বরং অনেকের কাছে সে সৌন্দর্য পৌঁছানোর একটা রাস্তা হয়। সংসদ ভবন বা এ রকম বিশেষ স্থাপনার ছবি তুলে প্রচারের মাধ্যমে এর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় না। আজকাল গুগল ম্যাপেই সব টার্গেট দেখা যায়। শুটিংয়ের ফুটেজ থেকে ছবি নিয়ে নিরাপত্তার প্রতি হুমকি তৈরি করতে হয় না।’

সবশেষ তিনি লিখেছেন, ‘যে কথা বলতে এত কথার অবতারণা, দয়া করে শুটিংয়ের জন্য সবকিছু উন্মুক্ত করে দেন। একটা ফিল্ম কমিশন গঠন করেন, যেখানে লোকেশন সার্ভিস ডেস্ক থাকবে। যার যেখানে শুটিং করা প্রয়োজন, সেটা উল্লেখ করে ওই কমিশনে আবেদন করবে। সঙ্গে নির্ধারিত ফি-ও জমা দেবে এবং তিন কার্যদিবসের মধ্যে তাদের অনুমতি দিয়ে দেওয়া হবে। সঙ্গে ধরিয়ে দিতে পারেন লোকেশন স্পেপিসিক নিয়মকানুন। ব্যস, সবকিছু সুন্দর একটা সিস্টেমে চলে এলো। সারা পৃথিবীতেই এই ফিল্ম কমিশন এবং লোকেশন সার্ভিস ডেস্ক আছে। দয়া করে আমাদের এখানেও এটা চালু করেন।’