বাংলায় এলো কোক স্টুডিও: শুরুতেই বিতর্ক

কোন স্টুডিও বাংলা উদ্বোধনী অনুষ্ঠান
কোন স্টুডিও বাংলা উদ্বোধনী অনুষ্ঠান   © সংগৃহীত

বিশ্বজুড়ে আলোচিত সংগীতায়োজন ‘কোক স্টুডিও’র বাংলা সংস্করণ ‘কোক স্টুডিও বাংলা’র যাত্রা শুরু হল। যাত্রার শুরুতেই এ উদ্যোগ নিয়ে হচ্ছে সমালোচনা। কেউ পক্ষে কেউ বিপক্ষে যুক্তি দাড় করাচ্ছেন।

সোমবার (০৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে এর উদ্বোধন ঘোষণা করেছে আয়োজক প্রতিষ্ঠান কোকা-কোলা বাংলাদেশ; বাংলাভাষী শ্রোতাদের জন্য জনপ্রিয় কয়েকটি বাংলা গান নিয়ে প্রচারে আসছে এ আয়োজনের প্রথম সিজন।

আরও পড়ুন: মুসকানকে ৫ লাখ রুপি পুরস্কার ঘোষণা

আয়োজকরা জানান, ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝির দিকে ‘কোক স্টুডিও বাংলা’র প্রথম সিজনের প্রথম পর্ব প্রচার হবে। মোট ১০টি গান থাকবে।

কোক স্টুডিও সাধারণত বিভিন্ন ধরণের সঙ্গীতের সংমিশ্রণ বা ফিউশনের মাধ্যমে গান তৈরি করে থাকে। স্টুডিওতে সঙ্গীতশিল্পী ও কলাকুশলীদের এক একটি লাইভ পারফর্মেন্সের মিউজিক ভিডিও দিয়ে তৈরি হয় টেলিভিশন সিরিজের এক একটি পর্ব।

অনেকেই এক ধরণের সঙ্গীতের সাথে আরেক ধরণের সঙ্গীতের মিশ্রণের ধারণাটি পুরোপুরি সমর্থন করেন না। তাদের অনেকে মনে করেন, সঙ্গীতে ফিউশনের ফলে লোকজ গান মৌলিকতা হারিয়ে ফেলে।

লোকজ গানের শিল্পী শাহনাজ বেলী বলেন, আধুনিক বাদ্যযন্ত্রের সাথে লোকজ গান পরিবেশন করলেও অনেক সময় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়, যেখানে লোকজ গানের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য থাকে না। পাশাপাশি লোকগানের সাথে প্রথাগত বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার না করে ভিন্নভাবে পরিবেশন করার কারণে লোকগানের শিল্পীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে মনে করেন এই শিল্পী।

আবার ফিউশনের পক্ষে সমর্থনও রয়েছে। অনেকেই মনে করেন বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী লোকগান - যেগুলো তরুণদের মধ্যে যথেষ্ট আবেদন সৃষ্টি করতে পারছে না বলে হারিয়ে যেতে বসেছে বলে অনেকে অভিযোগ করেন - ফিউশন করার কারণে মানুষের মধ্যে আবারো জনপ্রিয়তা তৈরি করতে পেয়েছে।

ফিউশনের মাধ্যমে তৈরি করা গানের একজন ভক্ত সাদিয়া আফরুন বলছিলেন, ফিউশন করার কারণে তিনি নিজে অনেক লোকগান শুনেছেন যেগুলো ফিউশন না করা হলে তার শোনা হত না।

আরও পড়ুন: ঢাবিতে ‘ঘ’ ইউনিট বাতিল, জানেন না অনুষদের শিক্ষকরাই

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনুষ্ঠানের নাম নিয়েও হচ্ছে বিতর্ক। কেন নামের সাথে বাংলাদেশ না লিখে বাংলা লিখা হলো? ভারতে বা পাকিস্তানে কোক স্টুডিও নামটির সাথে সংশ্লিষ্ট দেশটির নাম আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্ত না থাকলেও ভারতেটরটি কোক স্টুডিও ইন্ডিয়া ও পাকিস্তানেরটিকে কোক স্টুডিও পাকিস্তান বলে অনেকে সম্বোধন করেন। কিন্তু বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিক নামের সাথে বাংলা শব্দটি জুড়ে দেয়ায় অনেকে সমালোচনা করছেন।

অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, এর ফলে বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে প্রচলিত অন্যান্য ভাষার গান - বিশেষ করে ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীরা যেসব ভাষা ব্যবহার করে - উপেক্ষিত হবে।


সর্বশেষ সংবাদ