এখন কীভাবে ওয়াইফকে সময় দেবেন ব্যস্ত শ্যামল
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৪ আগস্ট ২০২১, ০৮:১২ PM , আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২১, ০১:৫৮ PM
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার নিভৃত মনমথ গ্রামের বাসিন্দা শ্যামল চন্দ্র। কথায় কথায় তিনি ইংরেজি শব্দ ব্যবহার করেন। কখনো তা ভুল, কখনো শুদ্ধ। তবু মানুষের সঙ্গে কথা বলেন হেসে হেসে। তাঁর ‘হ্যাভ অ্যা রিলাক্স, সি ইউ, নট ফর মাইন্ড’ উক্তিটি ফেসবুকে এখন ভাইরাল। উক্তিটি মূলত তাঁর এক সাক্ষাৎকার থেকে নেওয়া।
শ্যামল বাবু ওই সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, তিনি খুব ব্যস্ত মানুষ। ‘ওয়াইফকে’ সময় দেওয়ার মতো সময় তাঁর নেই। তাই বিয়ে করেননি। অবশেষে তাঁর সময় হলো! গত বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) রাতে ব্যাচেলর জীবনের অবসান ঘটিয়েছেন তিনি। বিয়ে করেছেন রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার পুঁটিমারী গ্রামের দীলিপ রায়ের মেয়ে দীপা রানীকে। দীপা স্থানীয় একটি কলেজে লেখাপড়া করছেন।
যার ‘ওয়াইফকে’ সময় দেওয়ার মতো সময় ছিল না সে ব্যস্ত শ্যামল এখন কীভাবে বিয়ে করলেন? শ্যামল জানান, ‘‘বিধিনিষেধে গাড়ি, ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। বাড়িতেই বসে ছিলাম। পারিবারিকভাবেই বিয়ে আয়োজন করা হলো। আর বিয়ে তো করতেই হতো!’’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে শ্যামলকে নিয়ে যত না আগ্রহ তার বিয়ে নিয়ে আরও বেশি আগ্রহ ব্যবহারকারীদের। আকাশ মজুমদার নামে একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘‘যে শ্যামলের বিয়ে করার মত সময় ছিল না তার আজ বিয়ে হয়ে গেল। এ পৃথিবীতে আমিই কেবল ব্যাচেলর থেকে গেলাম। কিন্তু কথা হলো, এ ব্যস্ত শ্যামল এখন তার ‘ওয়াইফকে’ কীভাবে সময় দেবেন?’’
স্থানীয়র জানান, বিয়ের দিনও সবার আবদার পূরণ করেছেন শ্যামল। ঠিক বিয়ের পিঁড়িতে বসার আগে অনেকে তাকে ঘিরে ধরে ছবি তোলেন। শুধু তাই নয় বিয়ের আসরেও কয়েকজন ‘সি ইউ নট ফর মাইন্ড’ বলে উঠলে শ্যামল হাসিমুখেই বললেন ‘সি ইউ নট ফর মাইন্ড’।
শ্যামল চন্দ্রের বাবার নাম নেপাল চন্দ্র। তিনি মাছ ব্যবসায়ী। মা শেফালি রানি গৃহিণী। তিন ভাইয়ের মধ্যে শ্যামল সবার বড়। ছোট ভাই কমল চন্দ্র ও রাজা চন্দ্র বাবার সঙ্গে মাছের ব্যবসা করেন। তিনি ২০০৫ সালে কাঠগড়া দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে তিনি অকৃতকার্য হন। এরপর অর্থাভাবে আর পরীক্ষা দেওয়া হয়নি।
মাধ্যমিকে অকৃতকার্য হওয়ার পর গ্যাস লাইটারের ব্যবসা শুরু করেন শ্যামল। পাইকারিভাবে গ্যাস লাইটার কিনে দোকানে দোকানে বিক্রি করতেন। আয়ের টাকায় সংসার চলত না বলে ব্যবসা ছেড়ে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের হয়ে বামনডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশনে কাজ নেন তিনি। চার বছর ধরে সেই কাজই করছেন।