‘মানুষের রুচি পরিবর্তনের চেষ্টা করছি’
মানুষ নিজকে পরিবর্তন করতে কী না করতে পারেন! শুধুমাত্র চেষ্টা থাকলে সহজেই এ পবির্তনের ফলাফল পাওয়া সম্ভব। তারই যেন উৎকৃষ্ট উদাহরণ ইউটিউবার আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম। সম্প্রতি সাংস্কৃতিক অঙ্গন থেকে পাওয়া ‘রুচি’ নিয়ে কটাক্ষ শোনার পর রীতিমতো নিজকে পরিবর্তনে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছেন।
শনিবার (১৫ এপ্রিল) পরপর দুইটি স্ট্যাটাসে নিজের নেওয়া সে পদক্ষেরই জানান দিলেন তিনি। পৃথক দুইটি স্ট্যাটাসের প্রথমটিতে নিজের একক ছবি শেয়ার করে লিখেছেন, ‘‘মানুষের রুচি পরিবর্তন করার চেষ্টা করতেছি। সবাই দোয়া রাখবেন, কলকাতার ঐতিহ্যবাহী লোকেশনে শুটিং চলছে। পরিচালনায় আলী জুলফিকার জাহেদী। ভিন্ন রকম আরেকটি মিউজিক ভিডিও।’’
কিছুক্ষণ পরেই একই ক্যাপশনে মডেলের সঙ্গে তিনটি ছবি শেয়ার করেছেন হিরো আলম। তার পোস্টের প্রশংসা করেছেন ব্যবহারকারীরা। জাহিদুল ইসলাম নামে একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, একজন মানুষ তো সবার কাছে ভালো হতে পারে না, কেউ ভালো বলবে কেউ খারাপ বলবে। বাট কারোর কথায় কান দেওয়া যাবে না।
সম্প্রতি হিরো আলমকে নিয়ে নাট্যকার মামুনুর রশীদ এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, আমরা একটা রুচির দুর্ভিক্ষের মধ্যে পড়ে গেছি। সেখান থেকে হিরো আলমের মতো একটা লোকের উত্থান হয়েছে। যে উত্থান কুরুচি, কুশিক্ষা ও অপসংস্কৃতির উত্থান। এই উত্থান কীভাবে রোধ করা যাবে, এটা যেমন রাজনৈতিক সমস্যা, তেমনি আমাদের সাংস্কৃতিক সমস্যাও।
পরে এমন বিরূপ মন্তব্যর পরিপ্রেক্ষিতে হিরো আলম লাইভে প্রচণ্ড অভিমান করেন। তাকে নিয়ে প্রচুর সমস্যা হলে দেশ থেকে তাড়িয়ে দিতে বলেন। আর না হলে তিনি আত্মহত্যা করবেন বলে হুমকি দেন। তিনি নিজেকে বদলে দিতে মামুনুর রশীদের কাছে অনুরোধও করেন। এরপর থেকেই মূলত তিনি নিজকে পরিবর্তনে বিভিন্ন পদ্ধক্ষে শুরু করেন।
আরও পড়ুন: পড়ালেখা শুরু করেছেন হিরো আলম, রেখেছেন গৃহশিক্ষকও
রুচির দুর্ভিক্ষ কাটাতে হিরো আলম আরও যা করছেন
সম্প্রতি একটি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হিরো আলম জানিয়েছেন, তিনি অফিসে একজন শিক্ষক রেখেছেন। তার কাছে পড়াশোনা শিখছেন। নিজের কথায় আঞ্চলিকতার যে টান এসে যায়, সেটি উতরানোর চেষ্টা করছেন তিনি।
হিরো আলম বলেন, ‘আমার বাড়ি উত্তরাঞ্চলের বগুড়া জেলা হওয়ায় ভাষায় আঞ্চলিকতার টান চলেই আসে। সেটি পরিবর্তন করার পরামর্শ দিয়েছেন অনেকে। তাছাড়া আমার কিছু উচ্চারণে সমস্যা আছে, সবাই বলে হিরো আলম সবকিছু পরিবর্তন করতে পারে। এটিও পারবে। সে জন্য নিজেকে আমি পরিবর্তন করার চেষ্টা করছি। দেখি কতদূর পরিবর্তন হতে পারি।
তিনি বলেন, আমার কথা নিয়ে যেহেতু মানুষের এত প্রবলেম, সেটাই আগে ঠিক করব। অনেকে পরামর্শ দিয়েছেন আমি পড়ালেখা শিখি, সুশিক্ষিত হই। সেই পরামর্শকে গুরুত্ব দিয়ে অফিসে শিক্ষক রেখে একটু একটু করে শেখার চেষ্টা করছি।
‘‘অনেকে আমাকে উন্মুক্ত বিশ্ববিদালয়ে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। সেটি তো আর আমার পক্ষে সম্ভব না। কারণ আমি নানা কাজে ব্যস্ত থাকি। আমাকে পরিবার চালানোর জন্য আয় করতে হয়।’’
নিজের আত্মবিশ্বাসের কথা জানিয়ে হিরো আলম বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি আমার কিছু দুর্বলতা আছে। সেগুলো পরিবর্তন করলে আর কোনো সমস্যা হবে না। আমাকে নিয়ে কেউ আর কথা বলতে পারবে না। কেউ রুচির দুর্ভিক্ষে পড়বে না। রুচির দুর্ভিক্ষ কাটাতে লেখাপড়ার দিকে মনোযোগ দিয়েছি।’