শিক্ষক লাঞ্ছনার প্রতিবাদে বশেমুরবিপ্রবিতে শিক্ষকদের মানববন্ধন
- বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১১ এপ্রিল ২০২২, ০৪:২৮ PM , আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০২২, ০৪:২৮ PM
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. ফায়েকুজ্জামান মিয়াকে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে মানববন্ধ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষকরা। কর্মসূচি থেকে এ ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি দাবি করা হয়েছে।
সোমবার (১১ এপ্রিল) দুপুর ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের সামনে বিভিন্ন বিভাগের প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষকের উপস্থিতিতে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মো. ফায়েকুজ্জামান শেখ রাসেল হলের প্রভোস্টের দায়িত্বে রয়েছেন।
মানববন্ধনে ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হাবিবুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে মূল্যবান উপাদান এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবীত শিক্ষার্থীরা কখনোই একজন মুক্তিযুদ্ধে চেতনা সম্পন্ন শিক্ষকের সাথে বেয়াদবি করতে পারেনা। আমরা চাই আগামী দিনে একজন মুক্তিকামী শিক্ষক হিসেবে প্রত্যেক শিক্ষকের পক্ষে প্রশাসন এবং শিক্ষার্থীরা কাজ করবে। ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটলে শিক্ষক শিক্ষার্থীরা এর দাঁত ভাঙ্গা জবাব দেবে।
ব্যবসায় অনুষদের ডিন মো. রোকনুজ্জামান বলেন, আমাদের শিক্ষকদের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব হলো শিক্ষার্থীদের পাঠ দান করানো। গবেষনায় সহযোগিতা করা এবং নিজেও গবেষণা করা। কিন্তু এর বাইরেও প্রশাসনিক কিছু দায়িত্ব রয়েছে যেগুলো আমাদের পালন করতে হয়। আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে সমানভাবে বিবেচনা করে সেই জায়গাগুলোতে দায়িত্ব পালন করা। কারো কোনো পদক্ষেপে অসন্তুষ্টি থাকতেই পারে। সেক্ষেত্রে প্রত্যেকেরই অধিকার আছে তা প্রকাশ করার। এক্ষেত্রে তাদের উচিৎ তাদের সমস্যাগুলো একটি নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে তুলে ধরা।
আরও পড়ুন: হল প্রভোস্টকে লাঞ্ছনার প্রতিবাদে বশেমুরবিপ্রবিতে মানববন্ধন
‘‘সেটা না করে শিক্ষকের সাথে খারাপ ভাষায় কথা বলা সমীচীন নয়। এটা খুবই দুঃখজনক যা মেনে নেওয়ার মতো নয়। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে যদি এরকম হেনস্তার শিকার হতে হয় তবে আমদের দায়িত্ব থেকে সরে আসা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।’’
ফার্মেসী বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রিপন খলিফা বলেন, জনাব ফায়েকুজ্জামানের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনার সাথে জড়িত শিক্ষার্থীদের একজন শিক্ষকের সাথে কিভাবে ব্যবহার করতে হয়, বাবা-মায়ের সাথে কিভাবে ব্যবহার করতে হয় সেটা জানা জরুরি বলে আমি মনে করি। আমরা লজ্জিত যে আজকে এরকম একটা বিষয়ে রাস্তায় দাঁড়াতে হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. শাহজাহান বলেন, আমরা কিছুদিন ধরে খেয়াল করছি ছাত্ররা কিছু বিষয়ে একটু বেশি মাত্রায় ক্রিয়াশীল। আমরা জানি আমাদের এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে যা সাথে নিয়েই বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করতে হচ্ছে। ছোট ক্যাম্পাস বিধায় সবাইকে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া সম্ভব হয় না। তাই বলে যদি এতে কেউ সংক্ষুব্ধ হয় তার সে প্রতিবাদ করার একটা ভাষা আছে। এ প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলার ব্যাঘাত যেন না ঘটে।
তিনি আরও বলেন, আমি শিক্ষার্থীদের কাছে অনুরোধ করবো তারা যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা পরিপন্থী কোনো কাজে লিপ্ত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। প্রশাসনের কাছে দাবি থাকবে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক একটা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে একসল শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজ করতে নিরুৎসাহিত হয়।
এর আগে গত ৫ এপ্রিল (মঙ্গলবার) শেখ রাসেল হলের সিট বরাদ্দ নিয়ে ছাত্রলীগ নেতা জাহাঙ্গীর গ্রুপ কর্তৃক হল প্রভোস্টের সাথে অশোভন আচরণের ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে বিজয় দিবস হলে ভাঙচুরের ফলে মধ্যরাতে জাহাঙ্গীর গ্রুপের সাথে হলের সাধারণ শিক্ষার্থীদের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।